বিষয়বস্তুতে চলুন

কুরু (রোগ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Md. Gazee Muzeeru (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
PMC4235695_pathogens-02-00472-g009.png কে চিত্র:Fore_child_in_advanced_kuru_stage.png দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, কারণ: File renamed:।
 
(৬ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২৫টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{তথ্যছক চিকিৎসা অবস্থা|
{{তথ্যছক চিকিৎসা অবস্থা|
| name = কুরু
| name = কুরু
| synonym =
| synonym =
| image = PMC4235695_pathogens-02-00472-g009.png
| image = Fore child in advanced kuru stage.png
| image_size =
| image_size =
| alt =
| alt =
| caption = কুরু রোগের শেষ পর্যায়ে একজন [[Fore people|ফোর গোত্রের]] শিশু। হাঁটতে বা সোজা হয়ে বসতে অসমর্থ এবং গুরুতরভাবে [[অপুষ্টি]]তে ভুগছে।
| caption = কুরু রোগের শেষ পর্যায়ে একজন [[Fore people|ফোর গোত্রের]] শিশু। হাঁটতে বা সোজা হয়ে বসতে অসমর্থ এবং গুরুতরভাবে [[অপুষ্টি]]তে ভুগছে।
| pronounce =
| pronounce =
| specialty = [[নিউরোপ্যাথলজি]], [[সংক্রামক ব্যধি]]
| specialty = [[নিউরোপ্যাথলজি]], [[সংক্রামক ব্যধি]]
| symptoms = শরীরে কাঁপন, আকস্মিক হাসির উদ্রেক, ক্রমশ [[coordination|দৈহিক ভারসাম্য]] হারানো
| symptoms = শরীরে কাঁপন, আকস্মিক হাসির উদ্রেক, ক্রমশ [[coordination|দৈহিক ভারসাম্য]] হারানো
| complications = প্রান্তীকালে [[সংক্রমণ]] এবং [[নিউমোনিয়া]]
| complications = প্রান্তীকালে [[সংক্রমণ]] এবং [[নিউমোনিয়া]]
| onset = সংক্রমিত হবার পরে উপসর্গ দেখা দিতে কয়েক বছর থেকে কয়েক দশক পর্যন্ত লাগতে পারে
| onset = সংক্রমিত হবার পরে উপসর্গ দেখা দিতে কয়েক বছর থেকে কয়েক দশক পর্যন্ত লাগতে পারে
| duration = উপসর্গ দেখা দেবার পরে ১১-১৪ মাস আয়ুষ্কাল থাকে <ref>{{citation|url=http://www.health.gov.au/internet/main/publishing.nsf/content/cda-cdi2904i.htm|title=The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995|work=[[Department of Health (Australia)]]|access-date=February 5, 2019}}</ref>
| duration = উপসর্গ দেখা দেবার পরে ১১-১৪ মাস আয়ুষ্কাল থাকে<ref>{{citation|url=http://www.health.gov.au/internet/main/publishing.nsf/content/cda-cdi2904i.htm|title=The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995|work=[[Department of Health (Australia)]]|access-date=February 5, 2019}}</ref>
| types =
| types =
| causes = সংক্রমিত [[prion proteins|প্রিওন প্রোটিন]] দেহে প্রবেশ করলে
| causes = সংক্রমিত [[prion proteins|প্রিওন প্রোটিন]] দেহে প্রবেশ করা
| risks = [[নরমাংস ভক্ষণ|নরমাংস ভক্ষণ]]
| risks = [[নরমাংস ভক্ষণ]]
| diagnosis = ময়নাতদন্ত
| diagnosis = ময়নাতদন্ত
| differential = [[ক্রয়েটজফেল্ট-ইয়্যাকব রোগ]]
| differential = [[ক্রয়েটজফেল্ট-ইয়্যাকব রোগ]]
| prevention = [[নরমাংস ভক্ষণ|নরমাংস ভক্ষণ]] পরিহার করা
| prevention = [[নরমাংস ভক্ষণ]] পরিহার করা
| treatment = সেবামূলক যত্ন
| treatment = সেবামূলক যত্ন
| prognosis = প্রাণঘাতী
| prognosis = প্রাণঘাতী
| frequency = দুর্লভ
| frequency = দুর্লভ
| deaths = ২০০৫ সাল নাগাদ আনুমানিক ২,৭০০ জন
| deaths = ২০০৫ সাল নাগাদ আনুমানিক ২,৭০০ জন
}}
}}
'''কুরু''' একটি বিরল, দুরারোগ্য এবং মারাত্মক নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার যা আগে [[পাপুয়া নিউগিনি|পাপুয়া নিউ গিনির]] জনগণের মধ্যে প্রায়শই দেখা যেত। কুরু ট্রান্সমিসিবল স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি (টিএসই) এর একটি রূপ যা অস্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হয়ে যাওয়া প্রোটিন ( [[প্রিয়ন]] ) সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে, যা ক্রমশ নিউরোডিজেনারেশন থেকে দেহে কম্পন এবং ভারসাম্য বা সমন্বয় হারানোর মতো লক্ষণগুলির দিকে পরিচালিত করে।


'''কুরু''' একটি বিরল, দুরারোগ্য এবং প্রাণঘাতী নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার যা একসময় [[পাপুয়া নিউগিনি|পাপুয়া নিউ গিনির]] জনগণের মধ্যে প্রায়শই দেখা যেত। কুরু সংক্রামক স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি (টিএসই) এর একটি রূপ যা অস্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হয়ে যাওয়া প্রোটিন ([[প্রিয়ন|প্রিওন]]) সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে, যা ক্রমশ নিউরোডিজেনারেশন থেকে শুরু করে দেহে কাঁপুনি এবং ভারসাম্য বা সমন্বয় হারানোর মতো লক্ষণগুলির দিকে পরিচালিত করে।
কুরু নামটি এসেছে ফোর ভাষার একটি শব্দ''কুরিয়া'' বা ''গুরিয়া'' ("কাঁপানো") থেকে, <ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Hoskin|প্রথমাংশ=J.O.|শেষাংশ২=Kiloh|প্রথমাংশ২=L.G.|তারিখ=April 1969|শিরোনাম=Epilepsy and guria: The shaking syndromes of New Guinea|পাতাসমূহ=39–48|doi=10.1016/0037-7856(69)90037-7|pmid=5809623}}</ref> যেহেতু শরীরের কাঁপুনি দেওয়া এই রোগের একটি অন্যতম [[নিদর্শন ও লক্ষণ-উপসর্গ|উপসর্গ]] । ''কুরু'' এর আভিধানিক অর্থ "কম্পিত হচ্ছে এমন"। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Fore Language of Papua New Guinea|শেষাংশ=Scott|প্রথমাংশ=Graham|তারিখ=1978|প্রকাশক=Pacific Linguistics|পাতাসমূহ=2, 6|doi=10.15144/PL-B47|আইএসবিএন=978-0-85883-173-5}}</ref> রোগী বিকারগ্রস্ত হয়ে আকস্মিক হেসে ওঠা এর আরেকটি লক্ষণ বলে একে 'হাস্যরোগ" বলেও অভিহিত করা হয়।। এটি এখন ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে পাপুয়া নিউ গিনির ফোর গোত্রের সদস্যদের মধ্যে কুরু সংক্রমিত হয়েছিল অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মৃতের নরমাংস ভক্ষণের কারণে। এই গোত্রে পরিবারের মৃত সদস্যদের রান্না করে খাওয়ার একটি সংস্কৃতি বিরাজমান ছিলো, যা মৃতের আত্মাকে মুক্ত করতে সাহায্য করে বলে মনে করা হতো। <ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Whitfield|প্রথমাংশ=Jerome T|শেষাংশ২=Pako|প্রথমাংশ২=Wandagi H|তারিখ=27 November 2008|শিরোনাম=Mortuary rites of the South Fore and kuru|পাতাসমূহ=3721–3724|doi=10.1098/rstb.2008.0074|pmc=2581657|pmid=18849288}}</ref>মৃত ব্যক্তির মস্তিষ্ক সাধারণত নারী ও শিশুদেরকে খেতে দেওয়া হতো, এবং মস্তিষ্কেই এই রোগ সংক্রামক প্রিওনগুলি সবচেয়ে বেশি ঘনীভূত থাকে, যেখান থেকেই কুরু সংক্রমণের সুযোগ হয়। স্বাভাবিকভাবেই তাই নারী ও শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি ছিল।


কুরু নামটি এসেছে ফোর ভাষার একটি শব্দ''কুরিয়া'' বা''গুরিয়া'' ("কাঁপানো") থেকে,<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Hoskin|প্রথমাংশ=J.O.|শেষাংশ২=Kiloh|প্রথমাংশ২=L.G.|তারিখ=April 1969|শিরোনাম=Epilepsy and guria: The shaking syndromes of New Guinea|পাতাসমূহ=39–48|ডিওআই=10.1016/0037-7856(69)90037-7|pmid=5809623}}</ref> কেননা শরীরের কাঁপুনি দেওয়া এই রোগের একটি অন্যতম [[নিদর্শন ও লক্ষণ-উপসর্গ|উপসর্গ]]। ''কুরু'' এর আভিধানিক অর্থ "কম্পিত হচ্ছে এমন"।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Fore Language of Papua New Guinea|শেষাংশ=Scott|প্রথমাংশ=Graham|তারিখ=1978|প্রকাশক=Pacific Linguistics|পাতাসমূহ=2, 6|ডিওআই=10.15144/PL-B47|আইএসবিএন=978-0-85883-173-5}}</ref> রোগী বিকারগ্রস্ত হয়ে আকস্মিক হেসে ওঠা এর আরেকটি লক্ষণ বলে একে 'হাস্যরোগ" বলেও অভিহিত করা হয়। এটি এখন ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে পাপুয়া নিউ গিনির ফোর গোত্রের সদস্যদের মধ্যে কুরু সংক্রমিত হয়েছিল অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মৃতের নরমাংস ভক্ষণের কারণে। এই গোত্রে পরিবারের মৃত সদস্যদের রান্না করে খাওয়ার একটি সংস্কৃতি বিরাজমান ছিলো, যা মৃতের আত্মাকে মুক্ত করতে সাহায্য করে বলে মনে করা হতো।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Whitfield|প্রথমাংশ=Jerome T|শেষাংশ২=Pako|প্রথমাংশ২=Wandagi H|তারিখ=27 November 2008|শিরোনাম=Mortuary rites of the South Fore and kuru|পাতাসমূহ=3721–3724|ডিওআই=10.1098/rstb.2008.0074|pmc=2581657|pmid=18849288}}</ref> মৃত ব্যক্তির মস্তিষ্ক সাধারণত নারী ও শিশুদেরকে খেতে দেওয়ার প্রচলন ছিলো, এবং মস্তিষ্কেই এই রোগ সংক্রামক প্রিওনগুলি সবচেয়ে বেশি ঘনীভূত থাকে বলে স্বাভাবিকভাবে নারী ও শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়।
মহামারীটি শুরু হয়েছিল সম্ভবত যখন একজন গ্রামবাসী বিক্ষিপ্তভাবে ক্রয়েটজফেল্ট-ইয়্যাকব রোগে আক্রান্ত হন এবং মারা যান। প্রচলিত নিয়মে গ্রামবাসীরা যখন তার মস্তিষ্ক খেয়েছিল, তখন তারা এই রোগে সংক্রামিত হয়, এবং তারপর তাদের মারা যাবার পরে যেসব গ্রামবাসী তাদের সংক্রামিত মস্তিস্ক খেয়েছিলো তাদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পরে। <ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.npr.org/sections/thesalt/2016/09/06/482952588/when-people-ate-people-a-strange-disease-emerged|শিরোনাম=When People Ate People, A Strange Disease Emerged|শেষাংশ=Bichell|প্রথমাংশ=Rae Ellen|তারিখ=September 6, 2016|কর্ম=[[NPR.org]]|সংগ্রহের-তারিখ=2018-04-08|ভাষা=en}}</ref>


মহামারীটি শুরু হয়েছিল সম্ভবত যখন একজন ফোর গ্রামবাসী বিক্ষিপ্তভাবে ক্রয়েটজফেল্ট-ইয়্যাকব রোগে আক্রান্ত হন এবং মারা যান। প্রচলিত নিয়ম অনুসরন করে গ্রামবাসীরা যখন তার মস্তিষ্ক খেয়েছিল, তখন তারা এই রোগে সংক্রামিত হয়, এবং তারপর তাদের মারা যাবার পরে যেসব গ্রামবাসী তাদের সংক্রামিত মস্তিষ্ক খেয়েছিলো তাদের মধ্যে এই রোগ বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পরে।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.npr.org/sections/thesalt/2016/09/06/482952588/when-people-ate-people-a-strange-disease-emerged|শিরোনাম=When People Ate People, A Strange Disease Emerged|শেষাংশ=Bichell|প্রথমাংশ=Rae Ellen|তারিখ=September 6, 2016|কর্ম=[[NPR.org]]|সংগ্রহের-তারিখ=2018-04-08|ভাষা=en}}</ref>
যখন প্রথম অনুমান করা হয় যে কুরু এন্ডোক্যানিবালিজমের (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া মৃতের মাংস ভক্ষণ) মাধ্যমে সংক্রামিত হচ্ছিলো, তখন সেই ষাটের দশকের গোড়ার দিকেই ফোর গোত্রের সদস্যরা মানুষের মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়, কিন্তু কুরুর দীর্ঘ সুপ্তিকালের কারণে এর পরও প্রায় ১০ থেকে ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এই রোগের প্রকোপ থেকে যায় । <ref>{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি|বিশ্বকোষ=MedlinePlus Medical Encyclopedia}}</ref> অর্ধ শতাব্দী পরে মহামারীটি অবশেষে তীব্রতায় কমে আসে, যেখানে ১৯৫৭ সালে প্রতি বছর ২০০ জন কুরুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতেন সেখানে অন্তত ২০১০ থেকে কোনো কুরুঘটিত মৃত্যু ঘটেনি। মতভেদে সর্বশেষ কুরু আক্রান্ত ব্যক্তি ২০০৫ বা ২০০৯ সালে মারা যান <ref name="historyof">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Alpers|প্রথমাংশ=MP|তারিখ=2007|শিরোনাম=A history of kuru.|পাতাসমূহ=10–9|pmid=19354007}}</ref> <ref name="esquire.com">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Rense|প্রথমাংশ=Sarah|তারিখ=September 7, 2016|শিরোনাম=Here's What Happens to Your Body When You Eat Human Meat|ইউআরএল=http://www.esquire.com/lifestyle/health/news/a48393/sick-eating-human-meat/|ওয়েবসাইট=[[Esquire (magazine)|Esquire]]}}</ref> <ref name="Lifeof">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2009-02-23|প্রকাশক=[[Monash University]] — Faculty of Medicine, Nursing and Health Sciences|শিরোনাম=A life of determination|ইউআরএল=http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20151210100829/http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html|আর্কাইভের-তারিখ=2015-12-10|সংগ্রহের-তারিখ=20 January 2016}}</ref> ] <ref name="Lifeof">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2009-02-23|প্রকাশক=[[Monash University]] — Faculty of Medicine, Nursing and Health Sciences|শিরোনাম=A life of determination|ইউআরএল=http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20151210100829/http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html|আর্কাইভের-তারিখ=2015-12-10|সংগ্রহের-তারিখ=20 January 2016}}<cite class="citation web cs1" data-ve-ignore="true">[https://web.archive.org/web/20151210100829/http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html "A life of determination"]. </cite></ref> <ref name="Collinge 2068–2074">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Collinge|প্রথমাংশ=John|শেষাংশ২=Whitfield|প্রথমাংশ২=Jerome|তারিখ=June 2006|শিরোনাম=Kuru in the 21st century—an acquired human prion disease with very long incubation periods|পাতাসমূহ=2068–2074|doi=10.1016/S0140-6736(06)68930-7|pmid=16798390}}</ref>

যখন প্রথম অনুমান করা হয় যে কুরু রোগটি এন্ডোক্যানিবালিজমের (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে মৃতের মাংস ভক্ষণ) মাধ্যমে সংক্রামিত হচ্ছিলো, তখন সেই ষাটের দশকের গোড়ার দিকেই ফোর গোত্রের সদস্যরা মানুষের মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়, কিন্তু কুরুর দীর্ঘ সুপ্তিকালের কারণে এর পরও প্রায় ১০ থেকে ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এই রোগের প্রকোপ সেখানে থেকে যায়।<ref>{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি|বিশ্বকোষ=MedlinePlus Medical Encyclopedia}}</ref> প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে মহামারীটি অবশেষে তীব্রতায় কমে আসে, যেখানে ১৯৫৭ সালে প্রতি বছর ২০০ জন কুরুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতেন সেখানে অন্তত ২০১০ থেকে কোনো কুরুঘটিত মৃত্যু ঘটেনি। মতভেদে সর্বশেষ কুরু আক্রান্ত ব্যক্তিটি ২০০৫ বা ২০০৯ সালে মারা যান।<ref name="historyof4">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Alpers|প্রথমাংশ=MP|তারিখ=2007|শিরোনাম=A history of kuru.|পাতাসমূহ=10–9|pmid=19354007}}</ref><ref name="esquire.com2">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Rense|প্রথমাংশ=Sarah|তারিখ=September 7, 2016|শিরোনাম=Here's What Happens to Your Body When You Eat Human Meat|ইউআরএল=http://www.esquire.com/lifestyle/health/news/a48393/sick-eating-human-meat/|ওয়েবসাইট=[[Esquire (magazine)|Esquire]]}}</ref><ref name="Lifeof2">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2009-02-23|প্রকাশক=[[Monash University]] — Faculty of Medicine, Nursing and Health Sciences|শিরোনাম=A life of determination|ইউআরএল=http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20151210100829/http://www.med.monash.edu.au/news/2009/michael-alpers-biography.html|আর্কাইভের-তারিখ=2015-12-10|সংগ্রহের-তারিখ=20 January 2016}}</ref><ref name="Collinge 2068–20742">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Collinge|প্রথমাংশ=John|শেষাংশ২=Whitfield|প্রথমাংশ২=Jerome|তারিখ=June 2006|শিরোনাম=Kuru in the 21st century—an acquired human prion disease with very long incubation periods|পাতাসমূহ=2068–2074|ডিওআই=10.1016/S0140-6736(06)68930-7|pmid=16798390}}</ref>


== লক্ষণ ও উপসর্গ ==
== লক্ষণ ও উপসর্গ ==
কুরু রোগ একটি সংক্রমণযোগ্য স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি এবং স্নায়ুতন্ত্রের এমন একটি রোগ যা শারীরবৃত্তীয় এবং স্নায়বিক ক্ষতি সাধন করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। এটি চিহ্নিত করা যায় রোগীর দেহে ক্রমশ [[সেরিবেলার অ্যাটাক্সিয়া]], বা পেশী নড়াচড়ার ক্ষেত্রে [[মোটর সমন্বয়|সমন্বয়]] এবং নিয়ন্ত্রণ হারানোর বৈশিষ্ট দ্বারা। <ref name=":2">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Alpers|প্রথমাংশ=Michael P|তারিখ=December 2005|শিরোনাম=The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995|ইউআরএল=http://www.health.gov.au/internet/main/publishing.nsf/Content/cda-cdi2904i.htm|পাতাসমূহ=391–399|pmid=16465931|সংগ্রহের-তারিখ=2016-11-10}}</ref> <ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Liberski|প্রথমাংশ=Pawel P.|শেষাংশ২=Sikorska|প্রথমাংশ২=Beata|তারিখ=February 2012|শিরোনাম=Kuru|পাতাসমূহ=92–103|doi=10.1097/NEN.0b013e3182444efd|pmc=5120877|pmid=22249461}}</ref>
কুরু রোগ একটি সংক্রমণযোগ্য স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি এবং স্নায়ুতন্ত্রের এমন একটি রোগ যা শারীরবৃত্তীয় এবং স্নায়বিক ক্ষতি সাধন করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। এটি চিহ্নিত করা যায় রোগীর দেহে ক্রমশ [[সেরিবেলার অ্যাটাক্সিয়া]], বা পেশী নড়াচড়ার ক্ষেত্রে [[মোটর সমন্বয়|সমন্বয়]] এবং নিয়ন্ত্রণ হারানোর বৈশিষ্ট্য দ্বারা।<ref name=":22">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Alpers|প্রথমাংশ=Michael P|তারিখ=December 2005|শিরোনাম=The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995|ইউআরএল=http://www.health.gov.au/internet/main/publishing.nsf/Content/cda-cdi2904i.htm|পাতাসমূহ=391–399|pmid=16465931|সংগ্রহের-তারিখ=2016-11-10}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Liberski|প্রথমাংশ=Pawel P.|শেষাংশ২=Sikorska|প্রথমাংশ২=Beata|তারিখ=February 2012|শিরোনাম=Kuru|পাতাসমূহ=92–103|ডিওআই=10.1097/NEN.0b013e3182444efd|pmc=5120877|pmid=22249461}}</ref>

এই রোগের প্রিক্লিনিকাল বা [[উপসর্গহীন]] পর্যায়ের স্থায়ীত্ব গড়ে ১০-১৩ বছর, যাকে এর সুপ্তপর্বও বলা যায়। কিন্তু এটা পাঁচ বছরের মতো ম সময়ও হতে পারে আবার প্রাথমিক সংক্রমণের পরে ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে সুপ্ত থাকতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Collinge|প্রথমাংশ=John|শেষাংশ২=Whitfield|প্রথমাংশ২=Jerome|তারিখ=27 November 2008|শিরোনাম=A clinical study of kuru patients with long incubation periods at the end of the epidemic in Papua New Guinea|পাতাসমূহ=3725–3739|ডিওআই=10.1098/rstb.2008.0068|pmc=2581654|pmid=18849289}}</ref>

ক্লিনিকাল পর্যায়ে এসে লক্ষণগুলির প্রথম দেখা দেয়, যা গড়ে ১২ মাস স্থায়ী হয়। কুরুর ক্লিনিকাল পর্যায় তিনটি নির্দিষ্ট উপপর্যায়ে বিভক্ত: চলনক্ষম, অচলনক্ষম এবং প্রান্তীয় উপপর্যায়। যদিও ব্যক্তিভেদে এই উপপর্যায়ে কিছু ভিন্নতা আছে, আক্রান্ত জনসংখ্যার মধ্যে রোগটির অগ্রসর হবার ধরন মোটামুটি একই।<ref name=":22"/> ক্লিনিকাল লক্ষণগুলি শুরু হওয়ার আগে একজন ব্যক্তি মাথাব্যথা এবং পায়ে জয়েন্টে ব্যথা সহ [[প্রোড্রোম|প্রড্রোমাল]] লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে।<ref name="pmid221961716">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Imran|প্রথমাংশ=Muhammad|শেষাংশ২=Mahmood|প্রথমাংশ২=Saqib|তারিখ=24 December 2011|শিরোনাম=An overview of human prion diseases|পাতাসমূহ=559|ডিওআই=10.1186/1743-422X-8-559|pmc=3296552|pmid=22196171|doi-access=free}}</ref>

=== চলনক্ষম পর্যায় ===
চলনক্ষম পর্যায়ে সংক্রামিত ব্যক্তি অস্থির আচরণ এবং চালচলন দেখাতে পারে, পেশী নিয়ন্ত্রণ কমে আসে, শব্দ উচ্চারণে অসুবিধা হয় ([[ডিসারথ্রিয়া|ডিসার্থ্রিয়া]]) এবং দেহে কম্পন ([[টিউবেশন|টিটুবেশন]]) দেখা যেতে পারে। এই পর্যায়ের নামকরণ করা হয়েছে চলনক্ষম বা অ্যাম্বুলেন্ট কারণ ব্যক্তি এখন উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও নিজে হাঁটাচলা করতে সক্ষম।<ref name="pmid221961716"/>

=== অচলনক্ষম পর্যায় ===
এই পর্যায়ে সংক্রামিত ব্যক্তি অন্য কারো সাহায্য ব্যতীত হাঁটতে পারে না, [[অ্যাটাক্সিয়া]] এবং তীব্র কম্পন অনুভব করে। উপরন্তু, আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে মানসিক অস্থিরতা এবং বিষণ্নতার লক্ষণ থাকার পরও অনিয়ন্ত্রিত এবং আকস্মিক হাসি আসতে পারে। অন্যান্য স্নায়বিক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও রোগের এই পর্যায়ে [[টেন্ডন]] সম্পর্কিত প্রতিবর্ত ক্রিয়াগুলো অক্ষত থাকে।<ref name="pmid221961716"/>

=== প্রান্তীয় পর্যায় ===
প্রান্তীয় পর্যায়ে সংক্রামিত ব্যক্তির মাঝে বিদ্যমান লক্ষণগুলি (যেমন অ্যাটাক্সিয়া) এমন পর্যায়ে অগ্রসর হয় যেখানে অন্য কারো ছাড়া বসে থাকাও আর সম্ভব হয় না। নতুন উপসর্গগুলি আবির্ভূত হওয়া শুরু করে: ব্যক্তির মাঝে [[ডিসফ্যাগিয়া]] দেখা দেয় যা গুরুতর অপুষ্টির দিকে ধাবিত করতে পারে, এছাড়াও মলমুত্র ত্যাগের নিয়ন্ত্রণ ও কথা বলার ক্ষমতা বা ইচ্ছা হারাতে পারে এবং চেতনা থাকা সত্ত্বেও তাদের আশেপাশের প্রভাবের প্রতি প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে পড়তে পারে।<ref name="pmid221961716"/> এই পর্যায়ের শেষের দিকে রোগীদের প্রায়ই দীর্ঘস্থায়ী শয্যাক্ষত তৈরি হয় যাতে যেকোনো সময় ঘা হয়ে যেতে পারে। সাধারণত প্রান্তীয় পর্যায়ের প্রথম উপসর্গ দেখা দেবার তিন মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে একজন সংক্রামিত ব্যক্তি মারা যান, প্রায়শই শ্বাসাঘাত নিউমোনিয়া<ref name=":03">{{উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Mahat |প্রথমাংশ=Sanjay |শিরোনাম=Kuru |তারিখ=2023 |ইউআরএল=http://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK559103/ |কর্ম=StatPearls |সংগ্রহের-তারিখ=2023-10-19 |স্থান=Treasure Island (FL) |প্রকাশক=StatPearls Publishing |pmid=32644529 |শেষাংশ২=Asuncion |প্রথমাংশ২=Ria Monica D.}}</ref> বা অন্যান্য [[সুবিধাবাদী সংক্রমণ|গৌণ সংক্রমণের]] কারণে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Wadsworth|প্রথমাংশ=Jonathan D. F.|শেষাংশ২=Joiner|প্রথমাংশ২=Susan|তারিখ=11 March 2008|শিরোনাম=Kuru prions and sporadic Creutzfeldt–Jakob disease prions have equivalent transmission properties in transgenic and wild-type mice|পাতাসমূহ=3885–3890|ডিওআই=10.1073/pnas.0800190105|pmc=2268835|pmid=18316717|doi-access=free}}</ref>

== কারণসমূহ ==
কুরু রোগের সংক্রমণ মূলত ফোর গোত্রীয় মানুষের এবং যাদের সাথে তারা আন্তঃবিবাহ করেছিল তাদের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিলো।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Lindenbaum|প্রথমাংশ=Shirley|তারিখ=2001-01-01|শিরোনাম=Kuru, Prions, and Human Affairs: Thinking About Epidemics|পাতাসমূহ=363–385|ডিওআই=10.1146/annurev.anthro.30.1.363}}</ref> "মৃত ব্যক্তির দেহকে জীবিত আত্মীয়দের দেহে একীভূত করার মাধ্যমে মৃতের আত্মাকে মুক্ত করতে সাহায্য করার জন্য" ফোর গোত্রের লোকেরা আচারানুষ্ঠানিকভাবে তাদেরপরিবারের মৃত সদস্যের দেহাংশ রান্না করে ভক্ষণ করতো।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Whitfield|প্রথমাংশ=Jerome T.|শেষাংশ২=Pako|প্রথমাংশ২=Wandagi H.|তারিখ=2008-11-27|শিরোনাম=Mortuary rites of the South Fore and kuru|পাতাসমূহ=3721–3724|ডিওআই=10.1098/rstb.2008.0074|issn=0962-8436|pmc=2581657|pmid=18849288}}</ref> যেহেতু কুরু আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ক সংক্রামক প্রিওনে সমৃদ্ধ একটি অঙ্গ, তাই নারী ও শিশু যাদেরকে মৃতের রান্না করা মস্তিষ্ক খাওয়ার জন্য দেওয়া হতো তাদেই সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি ছিল, যাদের পছন্দ ছিলো মরদেহের পেশির অংশ খাওয়া।<ref name="emedicine2200433">{{EMedicine|article|220043|Kuru}}</ref>
[[চিত্র:Prion_subdomain-colored_sec_structure.png|থাম্ব|স্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হওয়া প্রিয়ন প্রোটিন PrP <sup>c</sup> সাবডোমেন-অবশিষ্ট 125–228। উল্লেখ্য যে আলফা হেলিস (নীল বর্ণে চিহ্নিত) উপস্থিত।]]

=== প্রিওন ===
[[চিত্র:Model_of_a_three_dimensional_structure_for_PrPSc.jpg|থাম্ব|অস্বাভাবিকরূপে ভাঁজ হওয়া পিআরপি <sup>এসসি</sup> প্রোটিনের ক্রায়োইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি মডেল, বিটা শীটে সমৃদ্ধ (কেন্দ্রে)<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Kupfer|প্রথমাংশ=L.|শেষাংশ২=Hinrichs|প্রথমাংশ২=W.|তারিখ=1 September 2009|শিরোনাম=Prion Protein Misfolding|পাতাসমূহ=826–835|ডিওআই=10.2174/156652409789105543|pmc=3330701|pmid=19860662}}</ref>]]
এই রোগ সংক্রমণের মাধ্যম হল প্রিওন (PrP) নামক হোস্ট-এনকোডেড প্রোটিনের অস্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হওয়া একটি রূপ। [[প্রিয়ন|প্রিওন]] প্রোটিনগুলি প্রিওন প্রোটিন জিন ([[পিআরএনপি|PRNP]]) দ্বারা এনকোড করা হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Linden|প্রথমাংশ=Rafael|শেষাংশ২=Martins|প্রথমাংশ২=Vilma R.|তারিখ=April 2008|শিরোনাম=Physiology of the Prion Protein|পাতাসমূহ=673–728|ডিওআই=10.1152/physrev.00007.2007|pmid=18391177}}</ref> প্রিয়নের দুটি রূপকে স্বাভাবিকরূপে ভাঁজ হওয়া রূপ PrP<sup>c</sup> এবং একটি ভুলভাবে ভাঁজ হওয়া রূপ PrP <sup>sc</sup> হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে দ্বিতীয়টির কারণে কুরুরোগের সুচনা হয়। দুটি রূপে অ্যামিনো অ্যাসিড ক্রম ভিন্ন না হলেও; রোগসৃষ্টিকারী PrP <sup>sc</sup> -এর আইসোফর্ম স্বাভাবিক PrP <sup>c</sup> রূপ থেকে মাধ্যমিক এবং তৃতীয় ধরণের কাঠামোর ক্ষেত্রে আলাদা। PrP<sup>sc</sup> আইসোফর্ম [[বিটা শীট|বিটা শীটে]] আরও সমৃদ্ধ হয়, যখন স্বাভাবিক PrP<sup>c</sup> ফর্মে [[আলফা হেলিক্স|আলফা হেলিসে]]<nowiki/>র উপস্থিতি ঘটে।<ref name="emedicine2200433"/> গঠনের এসব পার্থক্যগুলি PrP <sup>sc</sup> কে একীভূত করতে সাহায্য করে এবং এনজাইম বা অন্যান্য রাসায়নিক এবং শারীরিক উপায়ে অস্বাভাবিক প্রোটিনটির অবক্ষয় রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, স্বাভাবিক প্রোটিনটি নন-ডিনেচারিং ডিটারজেন্টে দ্রবণীয় এবং এনজাইম দ্বারা [[প্রোটিওলাইসিস]] হবার মাধ্যমে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে সক্ষম।<ref name="pmid221961716"/>

এটি ধারণা করা হয়েছে যে আগে থেকে বিদ্যমান বা নতুনভাবে অর্জিত PrP<sup>sc</sup> এর প্রভাবে স্বাভাবিক PrP<sup>c</sup> অস্বাভাবিক PrP<sup>sc</sup> তে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে, যা আবার অন্যান্য PrP <sup>c-কে</sup> রূপান্তরিত করতে শুরু করে। এভাবে একটি সমপ্রতিক্রিয়াধারার সৃষ্টি হয় যা এই অস্বাভাবিক প্রোটিনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করে, যার ফলে প্রিওন রোগের বিস্তার হয়।<ref name="pmid221961716"/>

=== সংক্রমণ ===
১৯৬১ সালে অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসা গবেষক [[মাইকেল আল্পার্স|মাইকেল অ্যালপারস]] নৃবিজ্ঞানী [[শার্লি লিন্ডেনবাউম|শার্লি লিন্ডেনবাউমের]] সাথে ফোর গোত্রের মাঝে ব্যাপক গবেষণা পরিচালনা করেন।<ref name="Lifeof2"/> তাদের ঐতিহাসিক গবেষণাএই ধারণা দেয় যে কুরু রোগের মহামারীটি ১৯০০ সালের দিকে ফোর গোত্র অঞ্চলের এক প্রান্তে বসবাস করতেন এমন একজন ব্যক্তির কারণে শুরু হয়ে থাকতে পারে, যার মাঝে ক্রুটজফেল্ড-ইয়াকব রোগের কোনো একটি ধরণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৃষ্টি করেছিলো বলে মনে করা হয়।<ref>''Kuru: The Science and the Sorcery'' (Siamese Films, 2010)</ref> আলপারস এবং লিন্ডেনবাউমের গবেষণা চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করেছে যে কুরু রোগটি এন্ডোক্যানিব্যালিস্টিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুশীলনের কারণে ফোর গোত্রের মধ্যে সহজে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে এই প্রথা প্রচলিত ছিলো যে আত্মীয়রা মৃতদের মৃতদেহ গ্রাস করলে সেই ব্যক্তির "জীবন শক্তি" পল্লীর মাঝে ফিরে আসবে, পল্লী এক্ষেত্রে ফোর সমাজের একটি উপাংশ।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Guns, germs, and steel: the fates of human societies|শিরোনামের-সংযোগ=Guns, Germs, and Steel|শেষাংশ=Diamond J.M.|বছর=1997|প্রকাশক=[[W.W. Norton]]|পাতা=208|আইএসবিএন=978-0-393-03891-0}}</ref> পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহগুলিকে প্রায়শই কয়েকদিন ধরে কবর দিয়ে রাখঅ হত, তারপর মরদেহ পোকামাকড়ের লার্ভা দ্বারা ছেয়ে যাবার পরে তা বের করে এনে টুকরো টুকরো করে পরিবেশন করা হত, যার সাথে থাকতো সেই লার্ভা দিয়ে প্রস্তুত করা একটি পদ।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Liberski|প্রথমাংশ=P.P.|শেষাংশ২=Brown|প্রথমাংশ২=P.|তারিখ=January 2009|শিরোনাম=Kuru: Its ramifications after fifty years|ইউআরএল=https://hal.archives-ouvertes.fr/hal-00499057/file/PEER_stage2_10.1016%252Fj.exger.2008.05.010.pdf|পাতাসমূহ=63–69|ডিওআই=10.1016/j.exger.2008.05.010|pmid=18606515}}</ref>

সংক্রমণের পরিসংখ্যানে জনসংখ্যাগত বণ্টন লক্ষ্য করে এটা স্পষ্ট যে কুরু পুরুষদের তুলনায় নারী ও শিশুদের মধ্যে আট থেকে নয় গুণ বেশি প্রচলিত ছিল - কারণ ফোর সমাজে পুরুষরা মনে করতো মানুষের মাংস খাওয়া তাদের সংঘাত বা যুদ্ধের সময় তাদের দুর্বল করে দেবে, এবং তাই নারী এবং শিশুদেরই সম্ভাবনা বেশি ছিল মৃতের মস্তিষ্ক সহ দেহের অন্যান্য অংশ খাওয়ার যেখানে অস্বাভাবিক প্রিয়ন কণাগুলি বিশেষভাবে ঘনীভূত ছিল। এছাড়াও, একটি ভালো সম্ভাবনা বিদ্যমান যে কুরু রোগ নারী এবং শিশুদের মধ্যে সহজে ছড়িয়ে পড়ে কারণ কোনো আত্মীয়ের মৃত্যুর পরে দেহ পরিষ্কার করার দায়িত্ব অর্পিত ছিলো নারী ও শিশুদের ওপর, এবং সংক্রমিত দেহ পরিষ্কার করার সময় হাতে খোলা ঘা বা ক্ষত থাকলে রোগটির সংক্রমণ হতে পারে।<ref name="emedicine2200433"/>

যদিও প্রিওন কণাগুলিকে খাবারের সাথে গ্রহণ করলে এই রোগ হতে পারে,<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Gibbs|প্রথমাংশ=Clarence J.|শেষাংশ২=Amyx|প্রথমাংশ২=Herbert L.|তারিখ=August 1980|শিরোনাম=Oral Transmission of Kuru, Creutzfeldt-Jakob Disease, and Scrapie to Nonhuman Primates|পাতাসমূহ=205–208|ডিওআই=10.1093/infdis/142.2.205|pmid=6997404}}</ref> প্রিয়ন কণাগুলি ত্বকের নিচের কলাতন্ত্র বা টিস্যুতে পৌঁছাতে পারলে আরো উচ্চ মাত্রার সংক্রমণ ঘটে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার ঔপনিবেশিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় [[খ্রিষ্টধর্ম প্রচারাভিযান|খ্রিস্টান মিশনারীদের]] প্রচেষ্টার কারণে [[নরমাংস ভক্ষণ|নরখাদক]] নির্মূলের পরে আলপারসের গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি এসেই কুরুর প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। এই রোগের সুপ্তাবস্থা গড়ে ১৪ বছর, এবং অন্তত সাতজনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে [[সুপ্তিকাল|সুপ্তাবস্থা]] ৪০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে স্থায়ী ছিলো, এরকম হয়ে থাকে তাদের মাঝে যারা জিনগতভাবে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী। এই দীর্ঘ সুপ্তিকালের জন্যই আরো কয়েক দশক ধরে ফোর গোত্রে রোগটি দেখতে পাওয়া যায়। কুরু রোগে আক্রান্ত সর্বশেষ ব্যক্তিটি ২০০৫ সালে নাকি ২০০৯ সালে মারা গিয়েছেন তা নিয়ে মদভেদ আছে।<ref name="historyof4"/><ref name="esquire.com2"/><ref name="Lifeof2"/><ref name="Collinge 2068–20742"/>

== রোগ নির্ণয় ==
রোগীর লঘুমস্তকীয় নানান লক্ষণ ও উপসর্গের ইতিহাস পর্যালোচনা করে, স্নায়বিক বিভিন্ন পরীক্ষা করে এবং পরীক্ষার সময় অন্যান্য স্নায়বিক রোগের সম্ভাবনা বাদ দিয়ে কুরু নির্ণয় করা হয়।<ref name=":03"/> যেসব উপসর্গগুলি মূল্যায়ন করা হয় তার মধ্যে আছে রোগীর ভারসাম্য বা সমন্বয়গত সমস্যা এবং পেশীর অনৈচ্ছিক নড়াচড়া, কিন্তু এই উপসর্গগুলো স্নায়ু ও পেশীতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এমন অন্যান্য রোগের কারণেও হতে পারে; যার জন্য কুরুকে অন্যান্য ব্যাধি থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে প্রায়ই শারীরিক স্ক্যানের প্রয়োজন হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ভাষা=en|শিরোনাম=Kuru: MedlinePlus Medical Encyclopedia|ইউআরএল=https://medlineplus.gov/ency/article/001379.htm|সংগ্রহের-তারিখ=2023-10-19|ওয়েবসাইট=medlineplus.gov}}</ref><ref name=":12">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ভাষা=en|শিরোনাম=Kuru: What Is It, Causes, Signs and Symptoms, and More {{!}} Osmosis|ইউআরএল=https://www.osmosis.org/answers/kuru|সংগ্রহের-তারিখ=2023-10-19|ওয়েবসাইট=www.osmosis.org}}</ref> কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বিদ্যমান টিস্যুগুলির ময়নাতদন্ত করে মূল্যায়ন ব্যতীত কুরুর উপস্থিতি নির্ধারণের জন্য কোনও পরীক্ষা নেই, তাই অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাধি হয়েছে এমন সম্ভবনা মিটিয়ে কুরু হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করা হয়।

ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) করার মাধ্যমে ক্রুটজফেল্ড-ইয়াকব রোগ থেকে কুরুকে পার্থক্য করে সনাক্তকরণ করা হয়, যা কিনা একটি অনুরূপ এনসেফালোপ্যাথি (মস্তিষ্কের গঠনকে প্রভাবিত করে এমন যেকোনো রোগ)।<ref name=":12"/> ইইজি রোগীর মস্তিষ্কে চলমান বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ অনুসন্ধান করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকলাপে কোনও সমস্যা আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে প্রতিটি তরঙ্গের কম্পাঙ্ক পরিমাপ করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Services|প্রথমাংশ=Department of Health & Human|ভাষা=en|শিরোনাম=EEG test|ইউআরএল=http://www.betterhealth.vic.gov.au/health/conditionsandtreatments/eeg-test|সংগ্রহের-তারিখ=2023-10-19|ওয়েবসাইট=www.betterhealth.vic.gov.au}}</ref> নির্দিষ্ট সময় পরপর ঢেউয়ের মতো পর্যায়ক্রমিক কমপ্লেক্স যেগুলো অন্যান্য অনুরূপ রোগের ক্ষেত্রে ঘন ঘন দেখা যায় তা কুরু রোগের সময় ইইজিতে দৃশ্যমান হয় না।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Smith|প্রথমাংশ=S. J. M.|তারিখ=2005-06-01|শিরোনাম=EEG in neurological conditions other than epilepsy: when does it help, what does it add?|পাতাসমূহ=ii8–ii12|ভাষা=en|ডিওআই=10.1136/jnnp.2005.068486|issn=0022-3050|pmc=1765689|pmid=15961870|doi-access=free}}</ref> বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন ইইজি, এমআরআই, রক্ত পরীক্ষা, এবং নানা ধরণের স্ক্যান সংক্রামিত ব্যক্তি কুরু রোগ বা অন্য এনসেফালোপ্যাথিতে আক্রান্ত কিনা তা নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। দীর্ঘসময় এরূপপরীক্ষা করা কঠিন ঠেকতে পারে।

== রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ==
২০০৯ সালে [[মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (ইউনাইটেড কিংডম)|মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের]] গবেষকরা পাপুয়া নিউ গিনির জনসংখ্যার মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে সংঘটিত [[পিআরএনপি|প্রিওন প্রোটিনের]] একটি বিকল্প রূপ আবিষ্কার করেন যা কুরুর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ তৈরি করতে সমর্থ। ১৯৯৬ সালে শুরু হওয়া এই গবেষণায়,<ref name="SD2">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2009-11-21|শিরোনাম=Brain disease 'resistance gene' evolves in Papua New Guinea community; could offer insights into CJD|ইউআরএল=https://www.sciencedaily.com/releases/2009/11/091120091959.htm|সংগ্রহের-তারিখ=2016-11-12|ওয়েবসাইট=ScienceDaily}}</ref> সংক্রমণের প্রকোপ বেশি এমন অঞ্চল এবং আশেপাশের ইস্টার্ন হাইল্যান্ডে বসবাসরত ৩,০০০ জনেরও বেশি লোককে মূল্যায়ন করেছেন এবং প্রিওন প্রোটিন জি১২৭-এর একটি ভিন্ন ধরণকে চিহ্নিত করেছেন।<ref name="Mead 2056–2065">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Mead|প্রথমাংশ=Simon|শেষাংশ২=Whitfield|প্রথমাংশ২=Jerome|তারিখ=19 November 2009|শিরোনাম=A Novel Protective Prion Protein Variant that Colocalizes with Kuru Exposure|ইউআরএল=https://researchonline.lshtm.ac.uk/id/eprint/4514/1/nejmoa0809716.pdf|পাতাসমূহ=2056–2065|ডিওআই=10.1056/NEJMoa0809716|pmid=19923577}}</ref> জি১২৭ নামক[[পলিমরফিজম (জীববিজ্ঞান)|পলিমরফিজম]] একটি [[ভুল মিউটেশন|ক্রটিপূর্ণ মিউটেশনের]] ফলাফল, এবং এটি ভৌগলিকভাবে এমন অঞ্চলে পাওয়া যায় যেখানে কুরু মহামারী সবচেয়ে বিস্তৃত ছিল। গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে PrnP রূপটির খুব সম্প্রতি উদ্ভাবন ঘটেছে, অনুমান করা যায় যে এরূপ প্রোটিন ছিলো এমন সাম্প্রতিকতম সাধারণ পূর্বপুরুষ মাত্রে ১০ প্রজন্ম আগে বেঁচে ছিলেন।<ref name="Mead 2056–2065" />

এই অধ্যয়নের ফলাফলগুলি গবেষকদের কুরুর মতো প্রিওন সম্পর্কিত অন্যান্য রোগ আরও ভালভাবে বুঝতে এবং চিকিৎসার অগ্রগতিতে সাহায্য করতে পারে, যেমন [[ক্রুজফেল্ড - জেকব রোগ|ক্রুটজফেল্ড-ইয়াকব]] <ref name="SD2"/> এবং [[আলৎসহাইমারের রোগ|আলঝাইমারের]] মতো নিউরোডিজেনারেট রোগ।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2015-06-11|শিরোনাম=Natural genetic variation gives complete resistance in prion diseases|ইউআরএল=http://www.ucl.ac.uk/news/news-articles/0615/110615-genetic-variation-prion|সংগ্রহের-তারিখ=2016-11-12|ওয়েবসাইট=Ucl.ac.uk}}</ref>

== ইতিহাস ==
কুরু রোগটি প্রথম বর্ণিত হয় ১৯৫০ এর দশকে অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনে যখন তারা পাপুয়া নিউ গিনির ইস্টার্ন হাইল্যান্ড এলাকায় টহল দিতো।<ref name=":32">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Shirley Lindenbaum|তারিখ=14 Apr 2015|শিরোনাম=An annotated history of kuru|ইউআরএল=http://www.medanthrotheory.org/read/5049/annotated-kuru|ওয়েবসাইট=Medicine Anthropology Theory|সংগ্রহের-তারিখ=৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪|আর্কাইভের-তারিখ=১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20180915122011/http://www.medanthrotheory.org/read/5049/annotated-kuru|ইউআরএল-অবস্থা=অকার্যকর}}</ref> এর আগের কিছু সূত্র ইঙ্গিত করে ওই অঞ্চলে কুরুর প্রভাব ১৯১০ সালের দিকেও ছিলো।<ref name="historyof4"/> কুরু শব্দটি ১৯৫১ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয় আর্থার কেরির একটি প্রতিবেদনে, যেটা তিনি ফোর গোত্রে আবির্ভূত হওয়া একটি নতুন রোগ নিয়ে লিখছিলেন। এই প্রতিবেদনে কেরি লেখেন যে কুরু রোগ প্রধানত নারীদের মধ্যে সংক্রমিত করে তাদের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে। নৃতত্ত্ববিদ [[রোনাল্ড বার্ন্ডট]] এবং [[ক্যাথরিন বার্ন্ডট]] ১৯৫২-১৯৫৩ সালের দিকে ফোর ছাড়াও [[ইয়েট]] ও [[উসুরুফা]] গোত্রে কুরু উপস্থিতি লক্ষ্য করেন।<ref name="historyof4"/> ১৯৫৩ সাল নাগাদ টহল অফিসার জন ম্যাকআর্থার কুরু রোগ কাছ থেকে লক্ষ্য করে এর বৈশিষ্ট্গুলো নিজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। ম্যাকআর্থার মনে করতেন কুরু একধরণের [[সোমাটিক সিম্পটম ডিজঅর্ডার|মনস্তাত্ত্বিক]] রোগ যেটার উৎপত্তি ওইসব গোত্রে যাদুবিদ্যা চর্চার কারণে।<ref name=":32"/> রোগটি মহামারী আকার ধারণ করলে ওই অঞ্চলের মানুষেরা চার্লস ফার নামের একজন লুথেরান ডাক্তারকে অনুরোধ করে রোগটি সম্পর্কে অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষকে জানাতে।

প্রাথমিকভাবে ফোর গোত্রের লোকেরা বিশ্বাস করতো কুরু রোগে আক্রান্তের পেছনে দায়ী জাদুবিদ্যার চর্চা।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Kuru|ইউআরএল=http://www.macalester.edu/academics/psychology/whathap/ubnrp/tse10/Kuru.html|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20161121103625/http://www.macalester.edu/academics/psychology/whathap/ubnrp/tse10/Kuru.html|আর্কাইভের-তারিখ=2016-11-21|সংগ্রহের-তারিখ=2016-11-21|ওয়েবসাইট=Transmissible Spongiform Encephalopathies}}</ref> তারা এটাও ভেবেছিল যে যে জাদু কুরু রোগ তৈরি করেছে করছে সেটা সংক্রামক। একে নেগি-নাগিও বলা হত, যার অর্থ বোকা ব্যক্তি কারণ কুরু রোগীরা একটু পর পর বিনা কারণে হেসে উঠতো।<ref name="pmid308665112">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Liberski|প্রথমাংশ=Paweł P.|শেষাংশ২=Gajos|প্রথমাংশ২=Agata|তারিখ=7 March 2019|শিরোনাম=Kuru, the First Human Prion Disease|পাতাসমূহ=232|ডিওআই=10.3390/v11030232|pmc=6466359|pmid=30866511|doi-access=free}}</ref> ফোর মানুষ বিশ্বাস করত এই রোগ ভূত দ্বারা সৃষ্ট, কারণ কুরুর সঙ্গে আসা দৈহিক কম্পন এবং অদ্ভুত আচরণ তাদের কাছে যথেষ্ট ভৌতিক ঠেকে। আক্রান্তদের [[ক্যাসুয়ারিনা|ক্যাসুরিনা গাছের]] ছাল খাওয়ানো হতো রোগ উপশম হবে মনে করে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Liberski|প্রথমাংশ=Paweł|শেষাংশ২=Gajos|প্রথমাংশ২=Agata|তারিখ=2019-03-07|শিরোনাম=Kuru, the First Human Prion Disease|পাতাসমূহ=232|ভাষা=en|ডিওআই=10.3390/v11030232|issn=1999-4915|pmc=6466359|pmid=30866511|doi-access=free}}</ref>

যখন কুরু রোগ একটি মহামারী আকার ধারণ করে, [[ড্যানিয়েল কার্লটন গ্যাজডুসেক|ড্যানিয়েল কার্লেটন গাজদুসেক]] নামক একজন ভাইরোলজিস্ট এবং [[ভিনসেন্ট জিগাস]] নামের একজন চিকিৎসক এই রোগের উপর গবেষণা শুরু করেন। ১৯৫৭ সালে, জিগাস এবং গাজদুসেক ''মেডিকেল জার্নাল অফ অস্ট্রেলিয়াতে'' একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যেটি মন্তব্য করে যে কুরুর একটি জেনেটিক থাকতে পারে এবং "কুরুর প্যাথোজেনেসিসে সাহায্য করে এমন কোনো জাতিগত বা পরিবেশগত নিয়ামক এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।"<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Zigas|প্রথমাংশ=Vincent|শেষাংশ২=Gajdusek|প্রথমাংশ২=Daniel|তারিখ=23 November 1957|শিরোনাম=Kuru: Clinical study of a new syndrome resembling paralysis agitans of the eastern highlands of Australian New Guinea|পাতাসমূহ=745–754|ডিওআই=10.5694/j.1326-5377.1957.tb60287.x|pmid=13492772}}</ref>

[[নরমাংস ভক্ষণ|নরমাংস ভক্ষণের]] প্রথাকে প্রথম থেকেই রোগটির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সন্দেহ করা হয়েছিল কিন্তু ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত গ্লাস এবং 1968 সালে ম্যাথিউস, গ্লাস এবং লিন্ডেনবাউম দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে একটি হাইপোথিসিস হিসাবে প্রকাশ করা হয়নি।<ref name="pmid308665112"/>

[[চিত্র:Cerebellum_of_kuru_victim.png|থাম্ব|কুরু রোগীর লঘুমস্তিষ্ক]]

[[নরমাংস ভক্ষণ|নরমাংস ভক্ষণের]] সাথে কুরুর সম্পর্ক আছে এমনটা প্রতিষ্ঠিত হবার আগেই পাপুয়া নিউ গিনির অস্ট্রেলীয় প্রশাসন দ্বারা এই রীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং ১৯৬০ সাল নাগাদ এটার প্রচলন প্রায় উঠে যায়। কুরুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে আসা যখন শুরু করে তখন চিকিৎসা গবেষকরা অবশেষে কুরুকে সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম হন, যা শেষ পর্যন্ত এর কারণ হিসেবে প্রিওন প্রোটিনকে শনাক্ত করে।

কুরু রোগের প্যাথলজি বোঝার প্রয়াসে ড্যানিয়েল গাজদুসেক [[ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ]] (এনআইএইচ) এ কুরুর শনাক্তের জন্য [[সাধারণ শিম্পাঞ্জি|শিম্পাঞ্জিদের]] উপর প্রথম পরীক্ষামূলক পরীক্ষা প্রতিষ্ঠা করেন।<ref name="historyof4"/> অস্ট্রেলিয়ান ডাক্তার মাইকেল আলপারস কুরু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১ বছর বয়সী ফোর গোত্রের একট মেয়ের থেকে নেওয়া মস্তিষ্কের টিস্যু সরবরাহ করে গাজদুসেকের পরীক্ষাগুলোতে সহযোগিতা করেছিলেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Revisiting the history of kuru - Hektoen International|ইউআরএল=https://hekint.org/2019/05/30/revisiting-the-history-of-kuru/|সংগ্রহের-তারিখ=2023-09-14|ওয়েবসাইট=hekint.org}}</ref> গাজদুসেকই প্রথম কুরু রোগের সকল প্রতিবেদন নিয়ে একটি সংকলন তৈরি করেন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Liberski|প্রথমাংশ=P. P.|শেষাংশ২=Brown|প্রথমাংশ২=P.|বছর=2004|শিরোনাম=Kuru: A half-opened window onto the landscape of neurodegenerative diseases|পাতাসমূহ=3–14|pmid=15449456}}</ref> এনআইএইচ-এ বানরদের আচরণ পর্যবেক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করতে এবং সেগুলোর ময়নাতদন্ত পরিচালনা করতে গাজদুসেকের সাথে যোগ দিয়েছিলেন জো গিবস। দুই বছরের মধ্যে ডেইজি নামের একটি [[সাধারণ শিম্পাঞ্জি|শিম্পাঞ্জির]] মধ্যে কুরু রোগের অস্তিত্ব দেখা দেয়, যা প্রমাণ করে যে যে রোগেটি অজানা একটি নিয়ামক কোনো একধরণের সংক্রামিত জৈবিক পদার্থের মাধ্যমে রোগটি ছড়াচ্ছিলো এবং এটি প্রাইমেটদের এক প্রজাতি থেকে প্রজাতিতে সংক্রমিত হতে সক্ষম। এলিজাবেথ বেক এটা বলেন যে যে এই গবেষণাটি কুরুর প্রথম পরীক্ষামূলক সংক্রমণ নিয়ে সফলভাবে কাজ করেছে। এই আবিষ্কারকে মানব চিকিৎসায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যার কারণে ১৯৭৬ সালে গজদুসেককে [[চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার|ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার]] দেওয়া হয়েছিল<ref name="historyof4" />

পরবর্তীকালে, [[ইজে ফিল্ড|ই.জে. ফিল্ড]] ষাটে দশকের শেষে এবং সত্তরের দশকের শুরুর দিকে নিউ গিনিতে কুরু রোগ নিয়ে ঘাটাঘাটি করে<ref>{{cite episode|series=Horizon|series-link=Horizon (UK TV series)|season=8|number=6|title=Kuru - To Tremble with Fear|station=[[BBC Two|BBC2]]|date=22 February 1971}}</ref> [[স্ক্র্যাপি]] এবং [[মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস|মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের]] সাথে এর বিদ্যমান সংযোগ বের করেন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Field|প্রথমাংশ=EJ|তারিখ=7 Dec 1967|শিরোনাম=The significance of astroglial hypertrophy in Scrapie, Kuru, Multiple Sclerosis and old age together with a note on the possible nature of the scrapie agent|পাতাসমূহ=265–274|ডিওআই=10.1007/bf00244170}}</ref> তিনি [[গ্লিয়া|গ্লিয়াল কোষের]] সাথে এই রোগের মিথস্ক্রিয়া উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হিসেবে রয়েছে যে রোগটির সংক্রমণ প্রক্রিয়া বাহকের দেহে থাকা অণুগুলির কাঠামোগত পুনর্বিন্যাসের উপর নির্ভর করতে পারে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Field|প্রথমাংশ=EJ|তারিখ=Feb 1978|শিরোনাম=Immunological assessment of ageing: emergence of scrapie-like antigens|পাতাসমূহ=28–39|ডিওআই=10.1093/ageing/7.1.28|pmid=416662}}</ref> এটি ছিল একটি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ যা পরবর্তীতে প্রিওন হাইপোথিসিস হয়ে উঠে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Peat|প্রথমাংশ=Ray|শিরোনাম=BSE - mad cow - scrapie, etc.: Stimulated amyloid degeneration and the toxic fats|ইউআরএল=http://raypeat.com/articles/aging/madcow.shtml|ওয়েবসাইট=RayPeat.com}}</ref>

== জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ==

* টিভি শো ''[[স্ক্রাব (টিভি সিরিজ)|স্ক্রাবস (টিভি সিরিজ)]]'' "মাই ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট" পর্বে একজন রোগীর সম্ভাব্য রোগ হিসেবে কুরুকে উল্লেখ করে<ref>https://m.imdb.com/title/tt0696545/</ref>
* চেক ইমিউনোলজিস্ট-কবি [[মিরোস্লাভ হলুব]] এই রোগের ওপর "কুরু, বা স্মাইলিং ডেথ সিনড্রোম" লিখেছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Vanishing Lung Syndrome|শেষাংশ=Holub|প্রথমাংশ=Miroslav|বছর=1990|প্রকাশক=Oberlin College Press|আইএসবিএন=0-932440-52-5}}</ref>
* ''এক্স-ফাইলস'' সিজন ৭ এপিসোড [[চোর (এক্স-ফাইল)|"থিইফ"]] -এ একটি চরিত্রকে দেখানো হয়েছে যার আকস্মিক মৃত্যুর পর দেখা যায় যে সে কুরুতে আক্রান্ত ছিলো।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2013-01-19|ভাষা=en|শিরোনাম=The X-Files: “First Person Shooter” / “Theef”|ইউআরএল=https://www.avclub.com/the-x-files-first-person-shooter-theef-1798175523|সংগ্রহের-তারিখ=2024-01-30|ওয়েবসাইট=The A.V. Club}}</ref>
* ভিডিও গেম ''[[মৃত দ্বীপ|ডেড আইল্যান্ড]]'', এবং ''ডেড আইল্যান্ড: রিপটাইড'', কুরুকে এমন রোগ হিসাবে উল্লেখ করে যা বানোই এবং পালানাই নামক কাল্পনিক দ্বীপগুলিতে ছড়িয়ে আছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Estrada|প্রথমাংশ=Aura|তারিখ=2020-06-01|ভাষা=en|শিরোনাম=Dead Island: Riptide - Tips & Tricks For New Players|ইউআরএল=https://screenrant.com/dead-island-riptide-tips-tricks-guide-beginners/|সংগ্রহের-তারিখ=2024-01-30|ওয়েবসাইট=ScreenRant}}</ref>
* ''[[আমরা হোয়াট উই আর (2013 ফিল্ম)|উই আর হোয়াট উই আর]]'' চলচিত্রে, একজন চিকিৎসক একটি পরিবারকে নরখাদক হিসেবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হন যখন তিনি বুঝতে পারেন যে পরিবারের সবাই কুরুতে ভুগছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Lerman|প্রথমাংশ=Elizabeth|তারিখ=2020-07-25|ভাষা=en|শিরোনাম=We Are What We Are: Ending & Cannibal Family Traditions Explained|ইউআরএল=https://screenrant.com/we-are-what-we-are-movie-ending-cannibal-traditions-explained/|সংগ্রহের-তারিখ=2024-01-30|ওয়েবসাইট=ScreenRant}}</ref>
* [[করম্যাক ম্যাকা‌র্থি|করম্যাক ম্যাকার্থির]] পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপটিক বই এবং সিনেমা ''দ্য রোড -''এ দুটি চরিত্র থাকে যারা নরখাদক এবং কুরুর উপসর্গ প্রদর্শন করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Vasundhra|তারিখ=2023-06-18|ভাষা=en|শিরোনাম=What is Cannibalism in Anthropology? {{!}} Anthroholic|ইউআরএল=https://anthroholic.com/cannibalism|সংগ্রহের-তারিখ=2024-01-30}}</ref>

== আরও দেখুন ==

* [[ডোনার পার্টি]]
* [[Exocannibalism]]
* [[নরখাদক ঘটনার তালিকা|নরমাংস ভক্ষণের ঘটনা তালিকা]]

==তথ্যসূত্র==
{{সূত্র তালিকা}}


== আরও পড়ুন ==
এই রোগের প্রিক্লিনিকাল বা [[উপসর্গহীন]] পর্যায়ের স্থায়ীত্ব গড়ে ১০-১৩ বছর, যাকে এর সুপ্তপর্বও বলা যায়। কিন্তু এটা পাঁচ বছরের মতো ম সময়ও হতে পারে আবার প্রাথমিক সংক্রমণের পরে ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে সুপ্ত থাকতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। <ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Collinge|প্রথমাংশ=John|শেষাংশ২=Whitfield|প্রথমাংশ২=Jerome|তারিখ=27 November 2008|শিরোনাম=A clinical study of kuru patients with long incubation periods at the end of the epidemic in Papua New Guinea|পাতাসমূহ=3725–3739|doi=10.1098/rstb.2008.0068|pmc=2581654|pmid=18849289}}</ref>
স্যাম কিন। ''[[ডুয়েলিং নিউরোসার্জনদের গল্প|দ্য টেল অফ দ্য ডুয়েলিং নিউরোসার্জন]]'', "অধ্যায় ৬: দ্য লাফিং ডিজিজ", ২০১৪। (বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস।)


ক্লিনিকাল পর্যায়ে এসে লক্ষণগুলির প্রথম দেখা দেয়, যা গড়ে ১২ মাস স্থায়ী হয়। কুরুর ক্লিনিকাল পর্যায় তিনটি নির্দিষ্ট উপপর্যায়ে বিভক্ত: চলনক্ষম, অচলনক্ষম এবং প্রান্তীয় উপপর্যায়। যদিও ব্যক্তিভেদে এই উপপর্যায়ে কিছু ভিন্নতা আছে, আক্রান্ত জনসংখ্যার মধ্যে রোগটির অগ্রসর হবার ধরণ মোটামুটি একই। <ref name=":22">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Alpers|প্রথমাংশ=Michael P|তারিখ=December 2005|শিরোনাম=The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995|ইউআরএল=http://www.health.gov.au/internet/main/publishing.nsf/Content/cda-cdi2904i.htm|পাতাসমূহ=391–399|pmid=16465931|সংগ্রহের-তারিখ=2016-11-10}}</ref> ক্লিনিকাল লক্ষণগুলি শুরু হওয়ার আগে একজন ব্যক্তি মাথাব্যথা এবং পায়ে জয়েন্টে ব্যথা সহ [[প্রোড্রোম|প্রড্রোমাল]] লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে। <ref name="pmid221961712">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Imran|প্রথমাংশ=Muhammad|শেষাংশ২=Mahmood|প্রথমাংশ২=Saqib|তারিখ=24 December 2011|শিরোনাম=An overview of human prion diseases|পাতাসমূহ=559|doi=10.1186/1743-422X-8-559|pmc=3296552|pmid=22196171|doi-access=free}}</ref>
[[বিষয়শ্রেণী:বিরল সংক্রামক রোগ]]
[[বিষয়শ্রেণী:বিরল সংক্রামক রোগ]]
[[বিষয়শ্রেণী:খাদ্যবাহিত অসুস্থতা]]
[[বিষয়শ্রেণী:খাদ্যবাহিত অসুস্থতা]]

০৬:০৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

কুরু
কুরু রোগের শেষ পর্যায়ে একজন ফোর গোত্রের শিশু। হাঁটতে বা সোজা হয়ে বসতে অসমর্থ এবং গুরুতরভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে।
বিশেষত্বনিউরোপ্যাথলজি, সংক্রামক ব্যধি
লক্ষণশরীরে কাঁপন, আকস্মিক হাসির উদ্রেক, ক্রমশ দৈহিক ভারসাম্য হারানো
জটিলতাপ্রান্তীকালে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া
রোগের সূত্রপাতসংক্রমিত হবার পরে উপসর্গ দেখা দিতে কয়েক বছর থেকে কয়েক দশক পর্যন্ত লাগতে পারে
স্থিতিকালউপসর্গ দেখা দেবার পরে ১১-১৪ মাস আয়ুষ্কাল থাকে[]
কারণসংক্রমিত প্রিওন প্রোটিন দেহে প্রবেশ করা
ঝুঁকির কারণনরমাংস ভক্ষণ
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিময়নাতদন্ত
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়ক্রয়েটজফেল্ট-ইয়্যাকব রোগ
প্রতিরোধনরমাংস ভক্ষণ পরিহার করা
চিকিৎসাসেবামূলক যত্ন
আরোগ্যসম্ভাবনাপ্রাণঘাতী
সংঘটনের হারদুর্লভ
মৃতের সংখ্যা২০০৫ সাল নাগাদ আনুমানিক ২,৭০০ জন

কুরু একটি বিরল, দুরারোগ্য এবং প্রাণঘাতী নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার যা একসময় পাপুয়া নিউ গিনির জনগণের মধ্যে প্রায়শই দেখা যেত। কুরু সংক্রামক স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি (টিএসই) এর একটি রূপ যা অস্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হয়ে যাওয়া প্রোটিন (প্রিওন) সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে, যা ক্রমশ নিউরোডিজেনারেশন থেকে শুরু করে দেহে কাঁপুনি এবং ভারসাম্য বা সমন্বয় হারানোর মতো লক্ষণগুলির দিকে পরিচালিত করে।

কুরু নামটি এসেছে ফোর ভাষার একটি শব্দকুরিয়া বাগুরিয়া ("কাঁপানো") থেকে,[] কেননা শরীরের কাঁপুনি দেওয়া এই রোগের একটি অন্যতম উপসর্গকুরু এর আভিধানিক অর্থ "কম্পিত হচ্ছে এমন"।[] রোগী বিকারগ্রস্ত হয়ে আকস্মিক হেসে ওঠা এর আরেকটি লক্ষণ বলে একে 'হাস্যরোগ" বলেও অভিহিত করা হয়। এটি এখন ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে পাপুয়া নিউ গিনির ফোর গোত্রের সদস্যদের মধ্যে কুরু সংক্রমিত হয়েছিল অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মৃতের নরমাংস ভক্ষণের কারণে। এই গোত্রে পরিবারের মৃত সদস্যদের রান্না করে খাওয়ার একটি সংস্কৃতি বিরাজমান ছিলো, যা মৃতের আত্মাকে মুক্ত করতে সাহায্য করে বলে মনে করা হতো।[] মৃত ব্যক্তির মস্তিষ্ক সাধারণত নারী ও শিশুদেরকে খেতে দেওয়ার প্রচলন ছিলো, এবং মস্তিষ্কেই এই রোগ সংক্রামক প্রিওনগুলি সবচেয়ে বেশি ঘনীভূত থাকে বলে স্বাভাবিকভাবে নারী ও শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়।

মহামারীটি শুরু হয়েছিল সম্ভবত যখন একজন ফোর গ্রামবাসী বিক্ষিপ্তভাবে ক্রয়েটজফেল্ট-ইয়্যাকব রোগে আক্রান্ত হন এবং মারা যান। প্রচলিত নিয়ম অনুসরন করে গ্রামবাসীরা যখন তার মস্তিষ্ক খেয়েছিল, তখন তারা এই রোগে সংক্রামিত হয়, এবং তারপর তাদের মারা যাবার পরে যেসব গ্রামবাসী তাদের সংক্রামিত মস্তিষ্ক খেয়েছিলো তাদের মধ্যে এই রোগ বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পরে।[]

যখন প্রথম অনুমান করা হয় যে কুরু রোগটি এন্ডোক্যানিবালিজমের (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে মৃতের মাংস ভক্ষণ) মাধ্যমে সংক্রামিত হচ্ছিলো, তখন সেই ষাটের দশকের গোড়ার দিকেই ফোর গোত্রের সদস্যরা মানুষের মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়, কিন্তু কুরুর দীর্ঘ সুপ্তিকালের কারণে এর পরও প্রায় ১০ থেকে ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এই রোগের প্রকোপ সেখানে থেকে যায়।[] প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে মহামারীটি অবশেষে তীব্রতায় কমে আসে, যেখানে ১৯৫৭ সালে প্রতি বছর ২০০ জন কুরুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতেন সেখানে অন্তত ২০১০ থেকে কোনো কুরুঘটিত মৃত্যু ঘটেনি। মতভেদে সর্বশেষ কুরু আক্রান্ত ব্যক্তিটি ২০০৫ বা ২০০৯ সালে মারা যান।[][][][১০]

লক্ষণ ও উপসর্গ

[সম্পাদনা]

কুরু রোগ একটি সংক্রমণযোগ্য স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি এবং স্নায়ুতন্ত্রের এমন একটি রোগ যা শারীরবৃত্তীয় এবং স্নায়বিক ক্ষতি সাধন করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। এটি চিহ্নিত করা যায় রোগীর দেহে ক্রমশ সেরিবেলার অ্যাটাক্সিয়া, বা পেশী নড়াচড়ার ক্ষেত্রে সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রণ হারানোর বৈশিষ্ট্য দ্বারা।[১১][১২]

এই রোগের প্রিক্লিনিকাল বা উপসর্গহীন পর্যায়ের স্থায়ীত্ব গড়ে ১০-১৩ বছর, যাকে এর সুপ্তপর্বও বলা যায়। কিন্তু এটা পাঁচ বছরের মতো ম সময়ও হতে পারে আবার প্রাথমিক সংক্রমণের পরে ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে সুপ্ত থাকতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে।[১৩]

ক্লিনিকাল পর্যায়ে এসে লক্ষণগুলির প্রথম দেখা দেয়, যা গড়ে ১২ মাস স্থায়ী হয়। কুরুর ক্লিনিকাল পর্যায় তিনটি নির্দিষ্ট উপপর্যায়ে বিভক্ত: চলনক্ষম, অচলনক্ষম এবং প্রান্তীয় উপপর্যায়। যদিও ব্যক্তিভেদে এই উপপর্যায়ে কিছু ভিন্নতা আছে, আক্রান্ত জনসংখ্যার মধ্যে রোগটির অগ্রসর হবার ধরন মোটামুটি একই।[১১] ক্লিনিকাল লক্ষণগুলি শুরু হওয়ার আগে একজন ব্যক্তি মাথাব্যথা এবং পায়ে জয়েন্টে ব্যথা সহ প্রড্রোমাল লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে।[১৪]

চলনক্ষম পর্যায়

[সম্পাদনা]

চলনক্ষম পর্যায়ে সংক্রামিত ব্যক্তি অস্থির আচরণ এবং চালচলন দেখাতে পারে, পেশী নিয়ন্ত্রণ কমে আসে, শব্দ উচ্চারণে অসুবিধা হয় (ডিসার্থ্রিয়া) এবং দেহে কম্পন (টিটুবেশন) দেখা যেতে পারে। এই পর্যায়ের নামকরণ করা হয়েছে চলনক্ষম বা অ্যাম্বুলেন্ট কারণ ব্যক্তি এখন উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও নিজে হাঁটাচলা করতে সক্ষম।[১৪]

অচলনক্ষম পর্যায়

[সম্পাদনা]

এই পর্যায়ে সংক্রামিত ব্যক্তি অন্য কারো সাহায্য ব্যতীত হাঁটতে পারে না, অ্যাটাক্সিয়া এবং তীব্র কম্পন অনুভব করে। উপরন্তু, আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে মানসিক অস্থিরতা এবং বিষণ্নতার লক্ষণ থাকার পরও অনিয়ন্ত্রিত এবং আকস্মিক হাসি আসতে পারে। অন্যান্য স্নায়বিক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও রোগের এই পর্যায়ে টেন্ডন সম্পর্কিত প্রতিবর্ত ক্রিয়াগুলো অক্ষত থাকে।[১৪]

প্রান্তীয় পর্যায়

[সম্পাদনা]

প্রান্তীয় পর্যায়ে সংক্রামিত ব্যক্তির মাঝে বিদ্যমান লক্ষণগুলি (যেমন অ্যাটাক্সিয়া) এমন পর্যায়ে অগ্রসর হয় যেখানে অন্য কারো ছাড়া বসে থাকাও আর সম্ভব হয় না। নতুন উপসর্গগুলি আবির্ভূত হওয়া শুরু করে: ব্যক্তির মাঝে ডিসফ্যাগিয়া দেখা দেয় যা গুরুতর অপুষ্টির দিকে ধাবিত করতে পারে, এছাড়াও মলমুত্র ত্যাগের নিয়ন্ত্রণ ও কথা বলার ক্ষমতা বা ইচ্ছা হারাতে পারে এবং চেতনা থাকা সত্ত্বেও তাদের আশেপাশের প্রভাবের প্রতি প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে পড়তে পারে।[১৪] এই পর্যায়ের শেষের দিকে রোগীদের প্রায়ই দীর্ঘস্থায়ী শয্যাক্ষত তৈরি হয় যাতে যেকোনো সময় ঘা হয়ে যেতে পারে। সাধারণত প্রান্তীয় পর্যায়ের প্রথম উপসর্গ দেখা দেবার তিন মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে একজন সংক্রামিত ব্যক্তি মারা যান, প্রায়শই শ্বাসাঘাত নিউমোনিয়া[১৫] বা অন্যান্য গৌণ সংক্রমণের কারণে।[১৬]

কারণসমূহ

[সম্পাদনা]

কুরু রোগের সংক্রমণ মূলত ফোর গোত্রীয় মানুষের এবং যাদের সাথে তারা আন্তঃবিবাহ করেছিল তাদের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিলো।[১৭] "মৃত ব্যক্তির দেহকে জীবিত আত্মীয়দের দেহে একীভূত করার মাধ্যমে মৃতের আত্মাকে মুক্ত করতে সাহায্য করার জন্য" ফোর গোত্রের লোকেরা আচারানুষ্ঠানিকভাবে তাদেরপরিবারের মৃত সদস্যের দেহাংশ রান্না করে ভক্ষণ করতো।[১৮] যেহেতু কুরু আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ক সংক্রামক প্রিওনে সমৃদ্ধ একটি অঙ্গ, তাই নারী ও শিশু যাদেরকে মৃতের রান্না করা মস্তিষ্ক খাওয়ার জন্য দেওয়া হতো তাদেই সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি ছিল, যাদের পছন্দ ছিলো মরদেহের পেশির অংশ খাওয়া।[১৯]

স্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হওয়া প্রিয়ন প্রোটিন PrP c সাবডোমেন-অবশিষ্ট 125–228। উল্লেখ্য যে আলফা হেলিস (নীল বর্ণে চিহ্নিত) উপস্থিত।

প্রিওন

[সম্পাদনা]
অস্বাভাবিকরূপে ভাঁজ হওয়া পিআরপি এসসি প্রোটিনের ক্রায়োইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি মডেল, বিটা শীটে সমৃদ্ধ (কেন্দ্রে)[২০]

এই রোগ সংক্রমণের মাধ্যম হল প্রিওন (PrP) নামক হোস্ট-এনকোডেড প্রোটিনের অস্বাভাবিকভাবে ভাঁজ হওয়া একটি রূপ। প্রিওন প্রোটিনগুলি প্রিওন প্রোটিন জিন (PRNP) দ্বারা এনকোড করা হয়।[২১] প্রিয়নের দুটি রূপকে স্বাভাবিকরূপে ভাঁজ হওয়া রূপ PrPc এবং একটি ভুলভাবে ভাঁজ হওয়া রূপ PrP sc হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে দ্বিতীয়টির কারণে কুরুরোগের সুচনা হয়। দুটি রূপে অ্যামিনো অ্যাসিড ক্রম ভিন্ন না হলেও; রোগসৃষ্টিকারী PrP sc -এর আইসোফর্ম স্বাভাবিক PrP c রূপ থেকে মাধ্যমিক এবং তৃতীয় ধরণের কাঠামোর ক্ষেত্রে আলাদা। PrPsc আইসোফর্ম বিটা শীটে আরও সমৃদ্ধ হয়, যখন স্বাভাবিক PrPc ফর্মে আলফা হেলিসের উপস্থিতি ঘটে।[১৯] গঠনের এসব পার্থক্যগুলি PrP sc কে একীভূত করতে সাহায্য করে এবং এনজাইম বা অন্যান্য রাসায়নিক এবং শারীরিক উপায়ে অস্বাভাবিক প্রোটিনটির অবক্ষয় রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, স্বাভাবিক প্রোটিনটি নন-ডিনেচারিং ডিটারজেন্টে দ্রবণীয় এবং এনজাইম দ্বারা প্রোটিওলাইসিস হবার মাধ্যমে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে সক্ষম।[১৪]

এটি ধারণা করা হয়েছে যে আগে থেকে বিদ্যমান বা নতুনভাবে অর্জিত PrPsc এর প্রভাবে স্বাভাবিক PrPc অস্বাভাবিক PrPsc তে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে, যা আবার অন্যান্য PrP c-কে রূপান্তরিত করতে শুরু করে। এভাবে একটি সমপ্রতিক্রিয়াধারার সৃষ্টি হয় যা এই অস্বাভাবিক প্রোটিনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করে, যার ফলে প্রিওন রোগের বিস্তার হয়।[১৪]

সংক্রমণ

[সম্পাদনা]

১৯৬১ সালে অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসা গবেষক মাইকেল অ্যালপারস নৃবিজ্ঞানী শার্লি লিন্ডেনবাউমের সাথে ফোর গোত্রের মাঝে ব্যাপক গবেষণা পরিচালনা করেন।[] তাদের ঐতিহাসিক গবেষণাএই ধারণা দেয় যে কুরু রোগের মহামারীটি ১৯০০ সালের দিকে ফোর গোত্র অঞ্চলের এক প্রান্তে বসবাস করতেন এমন একজন ব্যক্তির কারণে শুরু হয়ে থাকতে পারে, যার মাঝে ক্রুটজফেল্ড-ইয়াকব রোগের কোনো একটি ধরণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৃষ্টি করেছিলো বলে মনে করা হয়।[২২] আলপারস এবং লিন্ডেনবাউমের গবেষণা চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করেছে যে কুরু রোগটি এন্ডোক্যানিব্যালিস্টিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুশীলনের কারণে ফোর গোত্রের মধ্যে সহজে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে এই প্রথা প্রচলিত ছিলো যে আত্মীয়রা মৃতদের মৃতদেহ গ্রাস করলে সেই ব্যক্তির "জীবন শক্তি" পল্লীর মাঝে ফিরে আসবে, পল্লী এক্ষেত্রে ফোর সমাজের একটি উপাংশ।[২৩] পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহগুলিকে প্রায়শই কয়েকদিন ধরে কবর দিয়ে রাখঅ হত, তারপর মরদেহ পোকামাকড়ের লার্ভা দ্বারা ছেয়ে যাবার পরে তা বের করে এনে টুকরো টুকরো করে পরিবেশন করা হত, যার সাথে থাকতো সেই লার্ভা দিয়ে প্রস্তুত করা একটি পদ।[২৪]

সংক্রমণের পরিসংখ্যানে জনসংখ্যাগত বণ্টন লক্ষ্য করে এটা স্পষ্ট যে কুরু পুরুষদের তুলনায় নারী ও শিশুদের মধ্যে আট থেকে নয় গুণ বেশি প্রচলিত ছিল - কারণ ফোর সমাজে পুরুষরা মনে করতো মানুষের মাংস খাওয়া তাদের সংঘাত বা যুদ্ধের সময় তাদের দুর্বল করে দেবে, এবং তাই নারী এবং শিশুদেরই সম্ভাবনা বেশি ছিল মৃতের মস্তিষ্ক সহ দেহের অন্যান্য অংশ খাওয়ার যেখানে অস্বাভাবিক প্রিয়ন কণাগুলি বিশেষভাবে ঘনীভূত ছিল। এছাড়াও, একটি ভালো সম্ভাবনা বিদ্যমান যে কুরু রোগ নারী এবং শিশুদের মধ্যে সহজে ছড়িয়ে পড়ে কারণ কোনো আত্মীয়ের মৃত্যুর পরে দেহ পরিষ্কার করার দায়িত্ব অর্পিত ছিলো নারী ও শিশুদের ওপর, এবং সংক্রমিত দেহ পরিষ্কার করার সময় হাতে খোলা ঘা বা ক্ষত থাকলে রোগটির সংক্রমণ হতে পারে।[১৯]

যদিও প্রিওন কণাগুলিকে খাবারের সাথে গ্রহণ করলে এই রোগ হতে পারে,[২৫] প্রিয়ন কণাগুলি ত্বকের নিচের কলাতন্ত্র বা টিস্যুতে পৌঁছাতে পারলে আরো উচ্চ মাত্রার সংক্রমণ ঘটে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার ঔপনিবেশিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রচেষ্টার কারণে নরখাদক নির্মূলের পরে আলপারসের গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি এসেই কুরুর প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। এই রোগের সুপ্তাবস্থা গড়ে ১৪ বছর, এবং অন্তত সাতজনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সুপ্তাবস্থা ৪০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে স্থায়ী ছিলো, এরকম হয়ে থাকে তাদের মাঝে যারা জিনগতভাবে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী। এই দীর্ঘ সুপ্তিকালের জন্যই আরো কয়েক দশক ধরে ফোর গোত্রে রোগটি দেখতে পাওয়া যায়। কুরু রোগে আক্রান্ত সর্বশেষ ব্যক্তিটি ২০০৫ সালে নাকি ২০০৯ সালে মারা গিয়েছেন তা নিয়ে মদভেদ আছে।[][][][১০]

রোগ নির্ণয়

[সম্পাদনা]

রোগীর লঘুমস্তকীয় নানান লক্ষণ ও উপসর্গের ইতিহাস পর্যালোচনা করে, স্নায়বিক বিভিন্ন পরীক্ষা করে এবং পরীক্ষার সময় অন্যান্য স্নায়বিক রোগের সম্ভাবনা বাদ দিয়ে কুরু নির্ণয় করা হয়।[১৫] যেসব উপসর্গগুলি মূল্যায়ন করা হয় তার মধ্যে আছে রোগীর ভারসাম্য বা সমন্বয়গত সমস্যা এবং পেশীর অনৈচ্ছিক নড়াচড়া, কিন্তু এই উপসর্গগুলো স্নায়ু ও পেশীতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এমন অন্যান্য রোগের কারণেও হতে পারে; যার জন্য কুরুকে অন্যান্য ব্যাধি থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে প্রায়ই শারীরিক স্ক্যানের প্রয়োজন হয়।[২৬][২৭] কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বিদ্যমান টিস্যুগুলির ময়নাতদন্ত করে মূল্যায়ন ব্যতীত কুরুর উপস্থিতি নির্ধারণের জন্য কোনও পরীক্ষা নেই, তাই অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাধি হয়েছে এমন সম্ভবনা মিটিয়ে কুরু হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করা হয়।

ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) করার মাধ্যমে ক্রুটজফেল্ড-ইয়াকব রোগ থেকে কুরুকে পার্থক্য করে সনাক্তকরণ করা হয়, যা কিনা একটি অনুরূপ এনসেফালোপ্যাথি (মস্তিষ্কের গঠনকে প্রভাবিত করে এমন যেকোনো রোগ)।[২৭] ইইজি রোগীর মস্তিষ্কে চলমান বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ অনুসন্ধান করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকলাপে কোনও সমস্যা আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে প্রতিটি তরঙ্গের কম্পাঙ্ক পরিমাপ করে।[২৮] নির্দিষ্ট সময় পরপর ঢেউয়ের মতো পর্যায়ক্রমিক কমপ্লেক্স যেগুলো অন্যান্য অনুরূপ রোগের ক্ষেত্রে ঘন ঘন দেখা যায় তা কুরু রোগের সময় ইইজিতে দৃশ্যমান হয় না।[২৯] বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন ইইজি, এমআরআই, রক্ত পরীক্ষা, এবং নানা ধরণের স্ক্যান সংক্রামিত ব্যক্তি কুরু রোগ বা অন্য এনসেফালোপ্যাথিতে আক্রান্ত কিনা তা নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। দীর্ঘসময় এরূপপরীক্ষা করা কঠিন ঠেকতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের গবেষকরা পাপুয়া নিউ গিনির জনসংখ্যার মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে সংঘটিত প্রিওন প্রোটিনের একটি বিকল্প রূপ আবিষ্কার করেন যা কুরুর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ তৈরি করতে সমর্থ। ১৯৯৬ সালে শুরু হওয়া এই গবেষণায়,[৩০] সংক্রমণের প্রকোপ বেশি এমন অঞ্চল এবং আশেপাশের ইস্টার্ন হাইল্যান্ডে বসবাসরত ৩,০০০ জনেরও বেশি লোককে মূল্যায়ন করেছেন এবং প্রিওন প্রোটিন জি১২৭-এর একটি ভিন্ন ধরণকে চিহ্নিত করেছেন।[৩১] জি১২৭ নামকপলিমরফিজম একটি ক্রটিপূর্ণ মিউটেশনের ফলাফল, এবং এটি ভৌগলিকভাবে এমন অঞ্চলে পাওয়া যায় যেখানে কুরু মহামারী সবচেয়ে বিস্তৃত ছিল। গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে PrnP রূপটির খুব সম্প্রতি উদ্ভাবন ঘটেছে, অনুমান করা যায় যে এরূপ প্রোটিন ছিলো এমন সাম্প্রতিকতম সাধারণ পূর্বপুরুষ মাত্রে ১০ প্রজন্ম আগে বেঁচে ছিলেন।[৩১]

এই অধ্যয়নের ফলাফলগুলি গবেষকদের কুরুর মতো প্রিওন সম্পর্কিত অন্যান্য রোগ আরও ভালভাবে বুঝতে এবং চিকিৎসার অগ্রগতিতে সাহায্য করতে পারে, যেমন ক্রুটজফেল্ড-ইয়াকব [৩০] এবং আলঝাইমারের মতো নিউরোডিজেনারেট রোগ।[৩২]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

কুরু রোগটি প্রথম বর্ণিত হয় ১৯৫০ এর দশকে অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনে যখন তারা পাপুয়া নিউ গিনির ইস্টার্ন হাইল্যান্ড এলাকায় টহল দিতো।[৩৩] এর আগের কিছু সূত্র ইঙ্গিত করে ওই অঞ্চলে কুরুর প্রভাব ১৯১০ সালের দিকেও ছিলো।[] কুরু শব্দটি ১৯৫১ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয় আর্থার কেরির একটি প্রতিবেদনে, যেটা তিনি ফোর গোত্রে আবির্ভূত হওয়া একটি নতুন রোগ নিয়ে লিখছিলেন। এই প্রতিবেদনে কেরি লেখেন যে কুরু রোগ প্রধানত নারীদের মধ্যে সংক্রমিত করে তাদের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে। নৃতত্ত্ববিদ রোনাল্ড বার্ন্ডট এবং ক্যাথরিন বার্ন্ডট ১৯৫২-১৯৫৩ সালের দিকে ফোর ছাড়াও ইয়েটউসুরুফা গোত্রে কুরু উপস্থিতি লক্ষ্য করেন।[] ১৯৫৩ সাল নাগাদ টহল অফিসার জন ম্যাকআর্থার কুরু রোগ কাছ থেকে লক্ষ্য করে এর বৈশিষ্ট্গুলো নিজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। ম্যাকআর্থার মনে করতেন কুরু একধরণের মনস্তাত্ত্বিক রোগ যেটার উৎপত্তি ওইসব গোত্রে যাদুবিদ্যা চর্চার কারণে।[৩৩] রোগটি মহামারী আকার ধারণ করলে ওই অঞ্চলের মানুষেরা চার্লস ফার নামের একজন লুথেরান ডাক্তারকে অনুরোধ করে রোগটি সম্পর্কে অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষকে জানাতে।

প্রাথমিকভাবে ফোর গোত্রের লোকেরা বিশ্বাস করতো কুরু রোগে আক্রান্তের পেছনে দায়ী জাদুবিদ্যার চর্চা।[৩৪] তারা এটাও ভেবেছিল যে যে জাদু কুরু রোগ তৈরি করেছে করছে সেটা সংক্রামক। একে নেগি-নাগিও বলা হত, যার অর্থ বোকা ব্যক্তি কারণ কুরু রোগীরা একটু পর পর বিনা কারণে হেসে উঠতো।[৩৫] ফোর মানুষ বিশ্বাস করত এই রোগ ভূত দ্বারা সৃষ্ট, কারণ কুরুর সঙ্গে আসা দৈহিক কম্পন এবং অদ্ভুত আচরণ তাদের কাছে যথেষ্ট ভৌতিক ঠেকে। আক্রান্তদের ক্যাসুরিনা গাছের ছাল খাওয়ানো হতো রোগ উপশম হবে মনে করে।[৩৬]

যখন কুরু রোগ একটি মহামারী আকার ধারণ করে, ড্যানিয়েল কার্লেটন গাজদুসেক নামক একজন ভাইরোলজিস্ট এবং ভিনসেন্ট জিগাস নামের একজন চিকিৎসক এই রোগের উপর গবেষণা শুরু করেন। ১৯৫৭ সালে, জিগাস এবং গাজদুসেক মেডিকেল জার্নাল অফ অস্ট্রেলিয়াতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যেটি মন্তব্য করে যে কুরুর একটি জেনেটিক থাকতে পারে এবং "কুরুর প্যাথোজেনেসিসে সাহায্য করে এমন কোনো জাতিগত বা পরিবেশগত নিয়ামক এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।"[৩৭]

নরমাংস ভক্ষণের প্রথাকে প্রথম থেকেই রোগটির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সন্দেহ করা হয়েছিল কিন্তু ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত গ্লাস এবং 1968 সালে ম্যাথিউস, গ্লাস এবং লিন্ডেনবাউম দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে একটি হাইপোথিসিস হিসাবে প্রকাশ করা হয়নি।[৩৫]

কুরু রোগীর লঘুমস্তিষ্ক

নরমাংস ভক্ষণের সাথে কুরুর সম্পর্ক আছে এমনটা প্রতিষ্ঠিত হবার আগেই পাপুয়া নিউ গিনির অস্ট্রেলীয় প্রশাসন দ্বারা এই রীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং ১৯৬০ সাল নাগাদ এটার প্রচলন প্রায় উঠে যায়। কুরুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে আসা যখন শুরু করে তখন চিকিৎসা গবেষকরা অবশেষে কুরুকে সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম হন, যা শেষ পর্যন্ত এর কারণ হিসেবে প্রিওন প্রোটিনকে শনাক্ত করে।

কুরু রোগের প্যাথলজি বোঝার প্রয়াসে ড্যানিয়েল গাজদুসেক ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ) এ কুরুর শনাক্তের জন্য শিম্পাঞ্জিদের উপর প্রথম পরীক্ষামূলক পরীক্ষা প্রতিষ্ঠা করেন।[] অস্ট্রেলিয়ান ডাক্তার মাইকেল আলপারস কুরু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১ বছর বয়সী ফোর গোত্রের একট মেয়ের থেকে নেওয়া মস্তিষ্কের টিস্যু সরবরাহ করে গাজদুসেকের পরীক্ষাগুলোতে সহযোগিতা করেছিলেন।[৩৮] গাজদুসেকই প্রথম কুরু রোগের সকল প্রতিবেদন নিয়ে একটি সংকলন তৈরি করেন।[৩৯] এনআইএইচ-এ বানরদের আচরণ পর্যবেক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করতে এবং সেগুলোর ময়নাতদন্ত পরিচালনা করতে গাজদুসেকের সাথে যোগ দিয়েছিলেন জো গিবস। দুই বছরের মধ্যে ডেইজি নামের একটি শিম্পাঞ্জির মধ্যে কুরু রোগের অস্তিত্ব দেখা দেয়, যা প্রমাণ করে যে যে রোগেটি অজানা একটি নিয়ামক কোনো একধরণের সংক্রামিত জৈবিক পদার্থের মাধ্যমে রোগটি ছড়াচ্ছিলো এবং এটি প্রাইমেটদের এক প্রজাতি থেকে প্রজাতিতে সংক্রমিত হতে সক্ষম। এলিজাবেথ বেক এটা বলেন যে যে এই গবেষণাটি কুরুর প্রথম পরীক্ষামূলক সংক্রমণ নিয়ে সফলভাবে কাজ করেছে। এই আবিষ্কারকে মানব চিকিৎসায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যার কারণে ১৯৭৬ সালে গজদুসেককে ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল[]

পরবর্তীকালে, ই.জে. ফিল্ড ষাটে দশকের শেষে এবং সত্তরের দশকের শুরুর দিকে নিউ গিনিতে কুরু রোগ নিয়ে ঘাটাঘাটি করে[৪০] স্ক্র্যাপি এবং মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের সাথে এর বিদ্যমান সংযোগ বের করেন।[৪১] তিনি গ্লিয়াল কোষের সাথে এই রোগের মিথস্ক্রিয়া উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হিসেবে রয়েছে যে রোগটির সংক্রমণ প্রক্রিয়া বাহকের দেহে থাকা অণুগুলির কাঠামোগত পুনর্বিন্যাসের উপর নির্ভর করতে পারে।[৪২] এটি ছিল একটি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ যা পরবর্তীতে প্রিওন হাইপোথিসিস হয়ে উঠে।[৪৩]

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে

[সম্পাদনা]
  • টিভি শো স্ক্রাবস (টিভি সিরিজ) "মাই ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট" পর্বে একজন রোগীর সম্ভাব্য রোগ হিসেবে কুরুকে উল্লেখ করে[৪৪]
  • চেক ইমিউনোলজিস্ট-কবি মিরোস্লাভ হলুব এই রোগের ওপর "কুরু, বা স্মাইলিং ডেথ সিনড্রোম" লিখেছিলেন।[৪৫]
  • এক্স-ফাইলস সিজন ৭ এপিসোড "থিইফ" -এ একটি চরিত্রকে দেখানো হয়েছে যার আকস্মিক মৃত্যুর পর দেখা যায় যে সে কুরুতে আক্রান্ত ছিলো।[৪৬]
  • ভিডিও গেম ডেড আইল্যান্ড, এবং ডেড আইল্যান্ড: রিপটাইড, কুরুকে এমন রোগ হিসাবে উল্লেখ করে যা বানোই এবং পালানাই নামক কাল্পনিক দ্বীপগুলিতে ছড়িয়ে আছে।[৪৭]
  • উই আর হোয়াট উই আর চলচিত্রে, একজন চিকিৎসক একটি পরিবারকে নরখাদক হিসেবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হন যখন তিনি বুঝতে পারেন যে পরিবারের সবাই কুরুতে ভুগছে।[৪৮]
  • করম্যাক ম্যাকার্থির পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপটিক বই এবং সিনেমা দ্য রোড -এ দুটি চরিত্র থাকে যারা নরখাদক এবং কুরুর উপসর্গ প্রদর্শন করে।[৪৯]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995", Department of Health (Australia), সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯ 
  2. Hoskin, J.O.; Kiloh, L.G. (এপ্রিল ১৯৬৯)। "Epilepsy and guria: The shaking syndromes of New Guinea": 39–48। ডিওআই:10.1016/0037-7856(69)90037-7পিএমআইডি 5809623 
  3. Scott, Graham (১৯৭৮)। The Fore Language of Papua New Guinea। Pacific Linguistics। পৃষ্ঠা 2, 6। আইএসবিএন 978-0-85883-173-5ডিওআই:10.15144/PL-B47 
  4. Whitfield, Jerome T; Pako, Wandagi H (২৭ নভেম্বর ২০০৮)। "Mortuary rites of the South Fore and kuru": 3721–3724। ডিওআই:10.1098/rstb.2008.0074পিএমআইডি 18849288পিএমসি 2581657অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  5. Bichell, Rae Ellen (সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৬)। "When People Ate People, A Strange Disease Emerged"NPR.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-০৮ 
  6. MedlinePlus Medical Encyclopedia 
  7. Alpers, MP (২০০৭)। "A history of kuru.": 10–9। পিএমআইডি 19354007 
  8. Rense, Sarah (সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬)। "Here's What Happens to Your Body When You Eat Human Meat"Esquire 
  9. "A life of determination"Monash University — Faculty of Medicine, Nursing and Health Sciences। ২০০৯-০২-২৩। ২০১৫-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৬ 
  10. Collinge, John; Whitfield, Jerome (জুন ২০০৬)। "Kuru in the 21st century—an acquired human prion disease with very long incubation periods": 2068–2074। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(06)68930-7পিএমআইডি 16798390 
  11. Alpers, Michael P (ডিসেম্বর ২০০৫)। "The epidemiology of kuru in the period 1987 to 1995": 391–399। পিএমআইডি 16465931। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১০ 
  12. Liberski, Pawel P.; Sikorska, Beata (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Kuru": 92–103। ডিওআই:10.1097/NEN.0b013e3182444efdপিএমআইডি 22249461পিএমসি 5120877অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  13. Collinge, John; Whitfield, Jerome (২৭ নভেম্বর ২০০৮)। "A clinical study of kuru patients with long incubation periods at the end of the epidemic in Papua New Guinea": 3725–3739। ডিওআই:10.1098/rstb.2008.0068পিএমআইডি 18849289পিএমসি 2581654অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  14. Imran, Muhammad; Mahmood, Saqib (২৪ ডিসেম্বর ২০১১)। "An overview of human prion diseases": 559। ডিওআই:10.1186/1743-422X-8-559অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 22196171পিএমসি 3296552অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  15. Mahat, Sanjay; Asuncion, Ria Monica D. (২০২৩), "Kuru", StatPearls, Treasure Island (FL): StatPearls Publishing, পিএমআইডি 32644529 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য), সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৯ 
  16. Wadsworth, Jonathan D. F.; Joiner, Susan (১১ মার্চ ২০০৮)। "Kuru prions and sporadic Creutzfeldt–Jakob disease prions have equivalent transmission properties in transgenic and wild-type mice": 3885–3890। ডিওআই:10.1073/pnas.0800190105অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 18316717পিএমসি 2268835অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  17. Lindenbaum, Shirley (২০০১-০১-০১)। "Kuru, Prions, and Human Affairs: Thinking About Epidemics": 363–385। ডিওআই:10.1146/annurev.anthro.30.1.363 
  18. Whitfield, Jerome T.; Pako, Wandagi H. (২০০৮-১১-২৭)। "Mortuary rites of the South Fore and kuru": 3721–3724। আইএসএসএন 0962-8436ডিওআই:10.1098/rstb.2008.0074পিএমআইডি 18849288পিএমসি 2581657অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  19. Kuru at eMedicine
  20. Kupfer, L.; Hinrichs, W. (১ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "Prion Protein Misfolding": 826–835। ডিওআই:10.2174/156652409789105543পিএমআইডি 19860662পিএমসি 3330701অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  21. Linden, Rafael; Martins, Vilma R. (এপ্রিল ২০০৮)। "Physiology of the Prion Protein": 673–728। ডিওআই:10.1152/physrev.00007.2007পিএমআইডি 18391177 
  22. Kuru: The Science and the Sorcery (Siamese Films, 2010)
  23. Diamond J.M. (১৯৯৭)। Guns, germs, and steel: the fates of human societiesW.W. Norton। পৃষ্ঠা 208। আইএসবিএন 978-0-393-03891-0 
  24. Liberski, P.P.; Brown, P. (জানুয়ারি ২০০৯)। "Kuru: Its ramifications after fifty years" (পিডিএফ): 63–69। ডিওআই:10.1016/j.exger.2008.05.010পিএমআইডি 18606515 
  25. Gibbs, Clarence J.; Amyx, Herbert L. (আগস্ট ১৯৮০)। "Oral Transmission of Kuru, Creutzfeldt-Jakob Disease, and Scrapie to Nonhuman Primates": 205–208। ডিওআই:10.1093/infdis/142.2.205পিএমআইডি 6997404 
  26. "Kuru: MedlinePlus Medical Encyclopedia"medlineplus.gov (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৯ 
  27. "Kuru: What Is It, Causes, Signs and Symptoms, and More | Osmosis"www.osmosis.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৯ 
  28. Services, Department of Health & Human। "EEG test"www.betterhealth.vic.gov.au (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৯ 
  29. Smith, S. J. M. (২০০৫-০৬-০১)। "EEG in neurological conditions other than epilepsy: when does it help, what does it add?" (ইংরেজি ভাষায়): ii8–ii12। আইএসএসএন 0022-3050ডিওআই:10.1136/jnnp.2005.068486অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 15961870পিএমসি 1765689অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  30. "Brain disease 'resistance gene' evolves in Papua New Guinea community; could offer insights into CJD"ScienceDaily। ২০০৯-১১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১২ 
  31. Mead, Simon; Whitfield, Jerome (১৯ নভেম্বর ২০০৯)। "A Novel Protective Prion Protein Variant that Colocalizes with Kuru Exposure" (পিডিএফ): 2056–2065। ডিওআই:10.1056/NEJMoa0809716পিএমআইডি 19923577 
  32. "Natural genetic variation gives complete resistance in prion diseases"Ucl.ac.uk। ২০১৫-০৬-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১২ 
  33. Shirley Lindenbaum (১৪ এপ্রিল ২০১৫)। "An annotated history of kuru"Medicine Anthropology Theory। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  34. "Kuru"Transmissible Spongiform Encephalopathies। ২০১৬-১১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-২১ 
  35. Liberski, Paweł P.; Gajos, Agata (৭ মার্চ ২০১৯)। "Kuru, the First Human Prion Disease": 232। ডিওআই:10.3390/v11030232অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 30866511পিএমসি 6466359অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  36. Liberski, Paweł; Gajos, Agata (২০১৯-০৩-০৭)। "Kuru, the First Human Prion Disease" (ইংরেজি ভাষায়): 232। আইএসএসএন 1999-4915ডিওআই:10.3390/v11030232অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 30866511পিএমসি 6466359অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  37. Zigas, Vincent; Gajdusek, Daniel (২৩ নভেম্বর ১৯৫৭)। "Kuru: Clinical study of a new syndrome resembling paralysis agitans of the eastern highlands of Australian New Guinea": 745–754। ডিওআই:10.5694/j.1326-5377.1957.tb60287.xপিএমআইডি 13492772 
  38. "Revisiting the history of kuru - Hektoen International"hekint.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৪ 
  39. Liberski, P. P.; Brown, P. (২০০৪)। "Kuru: A half-opened window onto the landscape of neurodegenerative diseases": 3–14। পিএমআইডি 15449456 
  40. "Kuru - To Tremble with Fear"। Horizon। 8 মৌসুম। পর্ব 6। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। BBC2 
  41. Field, EJ (৭ ডিসে ১৯৬৭)। "The significance of astroglial hypertrophy in Scrapie, Kuru, Multiple Sclerosis and old age together with a note on the possible nature of the scrapie agent": 265–274। ডিওআই:10.1007/bf00244170 
  42. Field, EJ (ফেব্রু ১৯৭৮)। "Immunological assessment of ageing: emergence of scrapie-like antigens": 28–39। ডিওআই:10.1093/ageing/7.1.28পিএমআইডি 416662 
  43. Peat, Ray। "BSE - mad cow - scrapie, etc.: Stimulated amyloid degeneration and the toxic fats"RayPeat.com 
  44. https://m.imdb.com/title/tt0696545/
  45. Holub, Miroslav (১৯৯০)। Vanishing Lung Syndrome। Oberlin College Press। আইএসবিএন 0-932440-52-5 
  46. "The X-Files: "First Person Shooter" / "Theef""The A.V. Club (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-০১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-৩০ 
  47. Estrada, Aura (২০২০-০৬-০১)। "Dead Island: Riptide - Tips & Tricks For New Players"ScreenRant (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-৩০ 
  48. Lerman, Elizabeth (২০২০-০৭-২৫)। "We Are What We Are: Ending & Cannibal Family Traditions Explained"ScreenRant (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-৩০ 
  49. Vasundhra (২০২৩-০৬-১৮)। "What is Cannibalism in Anthropology? | Anthroholic" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-৩০ 

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

স্যাম কিন। দ্য টেল অফ দ্য ডুয়েলিং নিউরোসার্জন, "অধ্যায় ৬: দ্য লাফিং ডিজিজ", ২০১৪। (বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস।)