বিষয়বস্তুতে চলুন

কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
 
(৫ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ১০টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
৩ নং লাইন: ৩ নং লাইন:
| name = কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি
| name = কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি
| image =[[file:Kifayatullah Dehlwi.png|200px]]
| image =[[file:Kifayatullah Dehlwi.png|200px]]
| birth_date = ১৯৭৫
| birth_date = ১৮৭৫
| birth_place = [[শাহজাহানপুর]], [[ব্রিটিশ ভারত]] ({{small|বর্তমানে [[উত্তর প্রদেশ]], [[ভারত]]}})
| birth_place = [[শাহজাহানপুর]], [[ব্রিটিশ ভারত]] ({{small|বর্তমানে [[উত্তর প্রদেশ]], [[ভারত]]}})
| father =
| father =
৫৪ নং লাইন: ৫৪ নং লাইন:
}}
}}
{{দেওবন্দি}}
{{দেওবন্দি}}
'''মুহাম্মদ কেফায়াতুল্লাহ বিন ইনায়াতুল্লাহ শাহজাহানপূরী দেহলভি''' ({{Lang-ur|{{Nastaliq|محمد کفایت‌اللہ بن عنایت‌اللہ شاہ‌جہان‌پوری دہلوی}}}} ; {{circa|১৮৭৫ — ৩১ ডিসেম্বর ১৯৫২}}) '''মুফতি কিফায়াতুল্লাহ''' নামে পরিচিত, তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় [[ওলামা|ইসলামি পণ্ডিত]] এবং [[হানাফি]] [[ফকিহ]]। তিনি [[জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ|জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের]] প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং [[ভারত|ভারতের]] প্রধান মুফতি হিসেবেও বিবেচিত হন <ref name="oriental">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Mufti Azam Hind, Maulana Kifayatyullah Shahjahanpuri Thumma Dehlawi|প্রকাশক=[[Khuda Bakhsh Oriental Library]]|সংস্করণ=2005}}</ref><ref name="azam">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://shodhganga.inflibnet.ac.in/jspui/bitstream/10603/245048/7/07%20chapter%203.pdf|শিরোনাম=Mufti Kifayatullah|ওয়েবসাইট=shodhganga|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref><ref name="shodhganga">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://shodhganga.inflibnet.ac.in/bitstream/10603/54426/9/10_chapter%20no.03.pdf|শিরোনাম=Formation of Jamiat-Ulama-i-Hind|পাতা=122|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=xFw6aBjJOKsC&pg=PA259|শিরোনাম=Dalits and Human Rights: Dalits: the broken future|শেষাংশ=Shinde|প্রথমাংশ=P.K.|বছর=2005|ধারাবাহিক=Dalits and Human Rights|প্রকাশক=Isha Books|পাতা=259|আইএসবিএন=978-81-8205-274-1|সংগ্রহের-তারিখ=March 26, 2020}}</ref> তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক অশান্তির মধ্যদিয়ে [[ভারতে ইসলাম|ভারতীয় মুসলমানদের]] পরিচালনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। তাঁর জীবনের শেষ বছরগুলি শিক্ষামূলক এবং সামাজিক কাজে নিবেদিত ছিল। তিনি দিল্লি [[জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া|জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার]] প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং এর ভিত্তি কমিটিতে ছিলেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন [[মাহমুদুল হাসান|মাহমুদ হাসান দেওবন্দী]]।<ref name="najeeb">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.najeebqasmi.com/articles/urdu-articles/158-miscelleneous-masail/2183-2018-01-10-13-46-52|শিরোনাম=جامعہ میں آر ایس ایس کے اندریش کُمار کا گوشت سے متعلق جھوٹا بیان|শেষাংশ=[[Mohammad Najeeb Qasmi]]|ওয়েবসাইট=najeebqasmi.com|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref><ref name="shodh">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://shodhganga.inflibnet.ac.in/jspui/bitstream/10603/245048/7/07%20chapter%203.pdf|শিরোনাম=About Mufti Kifayatullah|ওয়েবসাইট=ShodhGanga|পাতা=90-91|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref>
'''মুহাম্মদ কেফায়াতুল্লাহ বিন ইনায়াতুল্লাহ শাহজাহানপূরী দেহলভি''' ({{Lang-ur|{{Nastaliq|محمد کفایت‌اللہ بن عنایت‌اللہ شاہ‌جہان‌پوری دہلوی}}}} ; {{circa|১৮৭৫ — ৩১ ডিসেম্বর ১৯৫২}}) '''মুফতি কিফায়াতুল্লাহ''' নামে পরিচিত, তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় [[ওলামা|ইসলামি পণ্ডিত]] এবং [[হানাফি]] [[ফকিহ]]। তিনি [[জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ|জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের]] প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং [[ভারত|ভারতের]] প্রধান মুফতি হিসেবেও বিবেচিত হন <ref name="oriental">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Mufti Azam Hind, Maulana Kifayatyullah Shahjahanpuri Thumma Dehlawi|প্রকাশক=[[Khuda Bakhsh Oriental Library]]|সংস্করণ=2005}}</ref><ref name="azam">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://shodhganga.inflibnet.ac.in/jspui/bitstream/10603/245048/7/07%20chapter%203.pdf|শিরোনাম=Mufti Kifayatullah|ওয়েবসাইট=shodhganga|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref><ref name="shodhganga">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://shodhganga.inflibnet.ac.in/bitstream/10603/54426/9/10_chapter%20no.03.pdf|শিরোনাম=Formation of Jamiat-Ulama-i-Hind|পাতা=122|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=xFw6aBjJOKsC&pg=PA259|শিরোনাম=Dalits and Human Rights: Dalits: the broken future|শেষাংশ=Shinde|প্রথমাংশ=P.K.|বছর=2005|ধারাবাহিক=Dalits and Human Rights|প্রকাশক=Isha Books|পাতা=259|আইএসবিএন=978-81-8205-274-1|সংগ্রহের-তারিখ=March 26, 2020}}</ref> তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক অশান্তির মধ্যদিয়ে [[ভারতে ইসলাম|ভারতীয় মুসলমানদের]] পরিচালনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। তার জীবনের শেষ বছরগুলি শিক্ষামূলক এবং সামাজিক কাজে নিবেদিত ছিল। তিনি দিল্লি [[জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া|জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার]] প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং এর ভিত্তি কমিটিতে ছিলেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন [[মাহমুদুল হাসান|মাহমুদ হাসান দেওবন্দী]]।<ref name="najeeb">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.najeebqasmi.com/articles/urdu-articles/158-miscelleneous-masail/2183-2018-01-10-13-46-52|শিরোনাম=جامعہ میں آر ایس ایس کے اندریش کُمار کا گوشت سے متعلق جھوٹا بیان|শেষাংশ=[[Mohammad Najeeb Qasmi]]|ওয়েবসাইট=najeebqasmi.com|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020|আর্কাইভের-তারিখ=২৬ মার্চ ২০২০|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20200326125057/http://www.najeebqasmi.com/articles/urdu-articles/158-miscelleneous-masail/2183-2018-01-10-13-46-52|ইউআরএল-অবস্থা=অকার্যকর}}</ref><ref name="shodh">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://shodhganga.inflibnet.ac.in/jspui/bitstream/10603/245048/7/07%20chapter%203.pdf|শিরোনাম=About Mufti Kifayatullah|ওয়েবসাইট=ShodhGanga|পাতা=90-91|সংগ্রহের-তারিখ=26 March 2020}}</ref>


== বংশ ==
== বংশ ==
দেহলভী রহ: এর পূর্বপুরুষ [[ইয়েমেন]] থেকে এসেছিলেন, কিন্তু তাঁর দাদা-পিতামহীরা [[বাহরাইন|বাহরাইনের]] ব্যবসায়ীরা ছিলেন যারা তাদের পণ্য বিক্রি করতে ভারতে ভ্রমণ করেছিলেন। {{তথ্যসূত্র প্রয়োজন|date=June 2020}} অজানা সময়ে দেহলভীর পরিবার [[ভোপাল]] থেকে শাহজাহানপুরে আগমন করেন। দিল্লীতেবাবা ইনায়েতউল্লাহর চার ছেলে ও দুই মেয়ে ছিল, তবে তিনি ছিলেন দরিদ্র। <ref name="oriental"/>
দেহলভী রহ: এর পূর্বপুরুষ [[ইয়েমেন]] থেকে এসেছিলেন, কিন্তু তার দাদা-পিতামহীরা [[বাহরাইন|বাহরাইনের]] ব্যবসায়ীরা ছিলেন যারা তাদের পণ্য বিক্রি করতে ভারতে ভ্রমণ করেছিলেন। {{তথ্যসূত্র প্রয়োজন|date=June 2020}} অজানা সময়ে দেহলভীর পরিবার [[ভোপাল]] থেকে শাহজাহানপুরে আগমন করেন। দিল্লীতেবাবা ইনায়েতউল্লাহর চার ছেলে ও দুই মেয়ে ছিল, তবে তিনি ছিলেন দরিদ্র। <ref name="oriental"/>


== প্রাথমিক জীবন ==
== প্রাথমিক জীবন ==
কিফায়াতুল্লাহ ইবনে ইনায়াতউল্লাহ ইবনে ফাইদুল্লাহ ইবনে খায়রুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ দেহলভী ১৮৭৫ সালে ভারতের [[উত্তরপ্রদেশ|উত্তর প্রদেশের]] একটি জেলা শাহজাহানপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। <ref name="mahbub">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=History of The [[Darul Uloom Deoband|Dar al-Ulum Deoband]] (Volume 2)|শেষাংশ=[[Syed Mehboob Rizwi|Maulana Syed Mehboob Rizwi]]|প্রকাশক=Idara-e-Ehtemam, [[Darul Uloom Deoband|Dar al-Ulum Deoband]]|পাতা=53-55|ভাষা=English|সংস্করণ=1981}}</ref> পাঁচ বছর বয়সে তিনি হাফিজ বরকতউল্লাহর ''মক্তবে'' শিক্ষাজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি কুরআন সমাপ্ত করেন এবং নাসিমুল্লাহর কাছ থেকে [[উর্দু ভাষা|উর্দু]] এবং প্রাথমিক [[ফার্সি ভাষা|ফারসি]] ভাষাতে শিক্ষা লাভ করেন। এরপরেই তিনি মাদ্রাসায়ে আজিজিয়ায় ভর্তি হন। সেখানে তিনি [[ইরান|ফারসি ভাষার]] সর্বাধিক উন্নত ''কিতাব'', ''সিকান্দার নামা'' এবং তাঁর শিক্ষক বুধুন খানের অধীনে আরবি অধ্যয়ন শুরু করেন। তারপরে, দেহলভীকে মুরাদাবাদের শাহী মসজিদে আরাবিয়ার মাদ্রাসার প্রধান উবায়দুল হক সাহেবের কাছ থেকে সুপারিশপত্র সহ প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি ভর্তি হন এবং মুহাম্মদ ইসমাইলের বাসায় থেকে যান। তিনি সেখানে দু'বছর পড়াশোনা করেছেন। এরপরে দেহলভী রহ: ১৮৯৫ সালে [[দারুল উলুম দেওবন্দ|দারুল উলূম দেওবন্দে]] ভর্তি হন। তাঁর স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে, তিনি ততটা চেষ্টা করতে পারেননি, তবে দ্রুত তার সহপাঠীদের পিছনে ফেলে তাঁর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করেছিলেন। তিনি বাইশ বছর বয়সে ১৮৯৮ সালে দারুল উলূম দেওবন্দে পড়াশোনা শেষ করেন। <ref name="oriental"/>
কিফায়াতুল্লাহ ইবনে ইনায়াতউল্লাহ ইবনে ফাইদুল্লাহ ইবনে খায়রুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ দেহলভী ১৮৭৫ সালে ভারতের [[উত্তরপ্রদেশ|উত্তর প্রদেশের]] একটি জেলা শাহজাহানপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। <ref name="mahbub">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=History of The [[Darul Uloom Deoband|Dar al-Ulum Deoband]] (Volume 2)|শেষাংশ=[[Syed Mehboob Rizwi|Maulana Syed Mehboob Rizwi]]|প্রকাশক=Idara-e-Ehtemam, [[Darul Uloom Deoband|Dar al-Ulum Deoband]]|পাতা=53-55|ভাষা=English|সংস্করণ=1981}}</ref> পাঁচ বছর বয়সে তিনি হাফিজ বরকতউল্লাহর ''মক্তবে'' শিক্ষাজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি কুরআন সমাপ্ত করেন এবং নাসিমুল্লাহর কাছ থেকে [[উর্দু ভাষা|উর্দু]] এবং প্রাথমিক [[ফার্সি ভাষা|ফারসি]] ভাষাতে শিক্ষা লাভ করেন। এরপরেই তিনি মাদ্রাসায়ে আজিজিয়ায় ভর্তি হন। সেখানে তিনি [[ইরান|ফারসি ভাষার]] সর্বাধিক উন্নত ''কিতাব'', ''সিকান্দার নামা'' এবং তার শিক্ষক বুধুন খানের অধীনে আরবি অধ্যয়ন শুরু করেন। তারপরে, দেহলভীকে মুরাদাবাদের শাহী মসজিদে আরাবিয়ার মাদ্রাসার প্রধান উবায়দুল হক সাহেবের কাছ থেকে সুপারিশপত্র সহ প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি ভর্তি হন এবং মুহাম্মদ ইসমাইলের বাসায় থেকে যান। তিনি সেখানে দু'বছর পড়াশোনা করেছেন। এরপরে দেহলভী রহ: ১৮৯৫ সালে [[দারুল উলুম দেওবন্দ|দারুল উলূম দেওবন্দে]] ভর্তি হন। তার স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে, তিনি ততটা চেষ্টা করতে পারেননি, তবে দ্রুত তার সহপাঠীদের পিছনে ফেলে তার পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করেছিলেন। তিনি বাইশ বছর বয়সে ১৮৯৮ সালে দারুল উলূম দেওবন্দে পড়াশোনা শেষ করেন। <ref name="oriental"/>


== শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন ==
== শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন ==
স্নাতক শেষ করার পরে, দেহলভী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনউদ্দিনের সাথে [[দিল্লি|দিল্লিতে]] সময় কাটান। এরপরে তিনি শাহজাহানপুরে ফিরে আসেন, যেখানে তাঁর প্রাক্তন শিক্ষক 'উবায়দুল হক রহ: এর মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেহলভী সেখানে শিক্ষক হন এবং শিক্ষাসচিব ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পরিচালনা করেন। দেহলভী আরবী ও [[ফার্সি ভাষা|ফারসি]] ভাষাও শিখিয়েছিলেন। তার বেতন ছিল মাসে পনেরো টাকা। একজন শিক্ষক ও প্রশাসক হিসাবে তাঁর দায়িত্বের পাশাপাশি, এই সময়ে তিনি বিভিন্ন ইসলামী মাসআলা মাসায়েলের জবাব দিতেন। প্রতিটি ফতোয়ার জবাবে দেহলভী ছিলেন নিখুঁত ও সতর্ক এবং সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ দিয়ে উত্তর দিতেন। মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলমে থাকাকালীন দেহলভী [[আহ্‌মদীয়া|আহমদীদের]] প্রতিক্রিয়া হিসাবে একটি মাসিক সাময়িকী ''আল বুরহান'' শুরু করেছিলেন। প্রথম সংখ্যাটি ১৩২১ হিজরিতে শাবানে প্রকাশিত হয়েছিল এবং আহমদী বিশ্বাসকে খণ্ডন করার চেষ্টা করেছিল। <ref name="oriental"/>
স্নাতক শেষ করার পরে, দেহলভী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনউদ্দিনের সাথে [[দিল্লি|দিল্লিতে]] সময় কাটান। এরপরে তিনি শাহজাহানপুরে ফিরে আসেন, যেখানে তার প্রাক্তন শিক্ষক 'উবায়দুল হক রহ: এর মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেহলভী সেখানে শিক্ষক হন এবং শিক্ষাসচিব ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পরিচালনা করেন। দেহলভী আরবী ও [[ফার্সি ভাষা|ফারসি]] ভাষাও শিখিয়েছিলেন। তার বেতন ছিল মাসে পনেরো টাকা। একজন শিক্ষক ও প্রশাসক হিসাবে তার দায়িত্বের পাশাপাশি, এই সময়ে তিনি বিভিন্ন ইসলামী মাসআলা মাসায়েলের জবাব দিতেন। প্রতিটি ফতোয়ার জবাবে দেহলভী ছিলেন নিখুঁত ও সতর্ক এবং সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ দিয়ে উত্তর দিতেন। মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলমে থাকাকালীন দেহলভী [[আহ্‌মদীয়া|আহমদীদের]] প্রতিক্রিয়া হিসাবে একটি মাসিক সাময়িকী ''আল বুরহান'' শুরু করেছিলেন। প্রথম সংখ্যাটি ১৩২১ হিজরিতে শাবানে প্রকাশিত হয়েছিল এবং আহমদী বিশ্বাসকে খণ্ডন করার চেষ্টা করেছিল। <ref name="oriental"/>


এই সময়, মাদ্রাসা 'আইনুল' ইলমের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এভাবে ১৩১২ হিজরিতে শিক্ষকদের বেতন হ্রাস করা হয়। মুফতির বেতন মাসে আঠারো থেকে ষোল রুপি করা হয়েছিল। তবে তিনি তাঁর শিক্ষক উবায়দুল হক খানের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলমে ছিলেন। এরপরে মুফতি কেফায়াতুল্লাহ [[দিল্লি|দিল্লিতে]] চলে যান এবং মাদ্রাসায়ে আমিনিয়ায় শিক্ষক হন। [[হাদিস|হাদীস]] পড়ানো ও ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' জবাব দেওয়ার পাশাপাশি মুফতি [[মাদ্রাসা|মাদ্রাসার]] সাংগঠনিক বিষয় পরিচালনা করেন। প্রতি মাসে তার বেতন ছিল বিশ টাকা। [[দিল্লি|দিল্লিতে]] দেহলভী দ্রুত খ্যাতিমান হন। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং উচ্চবর্গের লোকেরা তাদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিষয়ে তাঁর সাথে পরামর্শ করতেন এবং তাঁর পরামর্শ থেকে উপকৃত হতেন। আইন আদালতও তাঁর উপস্থিতি থেকে উপকৃত হয়েছিল। মাদ্রাসায়ে আমিনিয়ায় তাঁর আগমনের পর মুফতি রহ: শিক্ষা কাঠামোকে উপকারী সংস্কারের একটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন প্রবর্তিত [[মাদ্রাসা]]। তারপরে ১৩২৮ হিজরিতে তিনি ''আঞ্জুমান ইসলাহুল কালাম'' নামে একটি সমাবেশ শুরু করেন। এই সমাবেশের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের বক্তৃতা এবং বিতর্ক শেখানো। প্রতি অষ্টম দিনে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি বক্তৃতা দিতে হবে বা একটি কথোপকথনে জড়িত হতে হয়েছিল এবং মুফতি রহ: সহায়তা করবেন। এই সমাবেশটি তার লক্ষ্যে সফল হয়েছিল, তবে অবশেষে অংশগ্রহণের অভাবে শেষ হয়েছিল। পঞ্চাশ বছর পর মুফতি কয়েক হাজার ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' জবাব দিয়েছিলেন এবং তাঁর রায় [[ফিকহ|ফিকহের]] সম্পদ। মুফতির ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত অথচ সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ দ্বারা পূর্ণ ছিল। তাঁর ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' সর্বদা প্রশ্নকর্তার অভিপ্রায় অনুসারে উত্তর দেওয়া হত। এই কারণেই তিনি সাধারণ লোকদের পাশাপাশি আইন আদালতের কর্মকর্তাদের মধ্যে খ্যাতিমান ছিলেন, যারা ধর্মীয় মামলায় তাঁর রায়কে প্রাধান্য দিতেন। <ref name="oriental"/>
এই সময়, মাদ্রাসা 'আইনুল' ইলমের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এভাবে ১৩১২ হিজরিতে শিক্ষকদের বেতন হ্রাস করা হয়। মুফতির বেতন মাসে আঠারো থেকে ষোল রুপি করা হয়েছিল। তবে তিনি তার শিক্ষক উবায়দুল হক খানের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলমে ছিলেন। এরপরে মুফতি কেফায়াতুল্লাহ [[দিল্লি|দিল্লিতে]] চলে যান এবং মাদ্রাসায়ে আমিনিয়ায় শিক্ষক হন। [[হাদিস|হাদীস]] পড়ানো ও ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' জবাব দেওয়ার পাশাপাশি মুফতি [[মাদ্রাসা|মাদ্রাসার]] সাংগঠনিক বিষয় পরিচালনা করেন। প্রতি মাসে তার বেতন ছিল বিশ টাকা। [[দিল্লি|দিল্লিতে]] দেহলভী দ্রুত খ্যাতিমান হন। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং উচ্চবর্গের লোকেরা তাদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিষয়ে তার সাথে পরামর্শ করতেন এবং তার পরামর্শ থেকে উপকৃত হতেন। আইন আদালতও তার উপস্থিতি থেকে উপকৃত হয়েছিল। মাদ্রাসায়ে আমিনিয়ায় তার আগমনের পর মুফতি রহ: শিক্ষা কাঠামোকে উপকারী সংস্কারের একটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন প্রবর্তিত [[মাদ্রাসা]]। তারপরে ১৩২৮ হিজরিতে তিনি ''আঞ্জুমান ইসলাহুল কালাম'' নামে একটি সমাবেশ শুরু করেন। এই সমাবেশের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের বক্তৃতা এবং বিতর্ক শেখানো। প্রতি অষ্টম দিনে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি বক্তৃতা দিতে হবে বা একটি কথোপকথনে জড়িত হতে হয়েছিল এবং মুফতি রহ: সহায়তা করবেন। এই সমাবেশটি তার লক্ষ্যে সফল হয়েছিল, তবে অবশেষে অংশগ্রহণের অভাবে শেষ হয়েছিল। পঞ্চাশ বছর পর মুফতি কয়েক হাজার ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' জবাব দিয়েছিলেন এবং তার রায় [[ফিকহ|ফিকহের]] সম্পদ। মুফতির ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত অথচ সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ দ্বারা পূর্ণ ছিল। তার ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' সর্বদা প্রশ্নকর্তার অভিপ্রায় অনুসারে উত্তর দেওয়া হত। এই কারণেই তিনি সাধারণ লোকদের পাশাপাশি আইন আদালতের কর্মকর্তাদের মধ্যে খ্যাতিমান ছিলেন, যারা ধর্মীয় মামলায় তার রায়কে প্রাধান্য দিতেন। <ref name="oriental"/>


== সক্রিয়তা ==
== সক্রিয়তা ==
৭১ নং লাইন: ৭১ নং লাইন:


== সাহিত্যের কর্মজীবনর ==
== সাহিত্যের কর্মজীবনর ==
ছোটবেলা থেকেই দেহলভী পড়া-লেখা পছন্দ করতেন। তাঁর প্রথম প্রধান প্রচেষ্টাটি ছিল ''আল বুরহান'' নামক সাময়িকী যা তিনি [[আহ্‌মদীয়া|আহমদী]] বিশ্বাসকে অস্বীকার করে লিখেছিলেন। <ref name="mahbub"/> তাঁর দ্বিতীয় প্রধান কাজটি ছিল আরবী কবিতা ''রউদুর রাইয়াহিন'', যা ১৯০৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি সর্বপ্রথম ১৯০৮ সালে মাদ্রাসা আমিনিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। কবিতাটির স্পষ্টতা এবং মহিমা এমন ছিল যে দেহলভিকে অনুরোধ করা হয়েছিল পাদটীকা সহ একটি [[উর্দু ভাষা|উর্দু]] অনুবাদ তৈরি করার জন্য। মূল থেকে কঠিন শব্দের বিশদ ব্যাখ্যা করতেন। ''দেহলভীর'' সর্বাধিক খ্যাতিমান প্রকাশনা হ'ল ''তালিমুল ইসলাম'', সহজ ভাষায় শিশুদের জন্য চার খণ্ডের প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কিতাব। এতে [[ইসলাম|ইসলামের]] মৌলিক বিশ্বাস ও রীতি সম্পর্কিত বিবরণ রয়েছে। দেহলভী বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ রচনা করেছিলেন যা বই হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু এখন আর পাওয়া যায় না। দেহলভী বিশিষ্ট আলেম ও যোগ্য লেখক হলেও তাঁর সাহিত্যকর্মের সংখ্যা কম। কারণটি হল তাঁর শিক্ষণ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, ঘরোয়া কর্মকাণ্ড এবং ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' জবাব তাঁকে এতটাই ব্যস্ত করে তুলেছিল যে তাঁর লেখার সময় ছিল না। <ref name="oriental"/>
ছোটবেলা থেকেই দেহলভী পড়া-লেখা পছন্দ করতেন। তার প্রথম প্রধান প্রচেষ্টাটি ছিল ''আল বুরহান'' নামক সাময়িকী যা তিনি [[আহ্‌মদীয়া|আহমদী]] বিশ্বাসকে অস্বীকার করে লিখেছিলেন। <ref name="mahbub"/> তার দ্বিতীয় প্রধান কাজটি ছিল আরবী কবিতা ''রউদুর রাইয়াহিন'', যা ১৯০৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি সর্বপ্রথম ১৯০৮ সালে মাদ্রাসা আমিনিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। কবিতাটির স্পষ্টতা এবং মহিমা এমন ছিল যে দেহলভিকে অনুরোধ করা হয়েছিল পাদটীকা সহ একটি [[উর্দু ভাষা|উর্দু]] অনুবাদ তৈরি করার জন্য। মূল থেকে কঠিন শব্দের বিশদ ব্যাখ্যা করতেন। ''দেহলভীর'' সর্বাধিক খ্যাতিমান প্রকাশনা হ'ল ''তালিমুল ইসলাম'', সহজ ভাষায় শিশুদের জন্য চার খণ্ডের প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কিতাব। এতে [[ইসলাম|ইসলামের]] মৌলিক বিশ্বাস ও রীতি সম্পর্কিত বিবরণ রয়েছে। দেহলভী বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ রচনা করেছিলেন যা বই হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু এখন আর পাওয়া যায় না। দেহলভী বিশিষ্ট আলেম ও যোগ্য লেখক হলেও তার সাহিত্যকর্মের সংখ্যা কম। কারণটি হল তার শিক্ষণ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, ঘরোয়া কর্মকাণ্ড এবং ''[[ফতোয়া|ফাতাওয়া]]'' জবাব তাঁকে এতটাই ব্যস্ত করে তুলেছিল যে তার লেখার সময় ছিল না। <ref name="oriental"/>


== শেষ কয়েক বছর এবং মৃত্যু ==
== শেষ কয়েক বছর এবং মৃত্যু ==
তাঁর জীবনের শেষ বছরগুলিতে সমাজে নৈতিকতার অবনতি, [[হিন্দু]] ও [[মুসলিম|মুসলমানদের]] মধ্যে সংঘর্ষ এবং অন্যান্য বিভিন্ন কারণে, দেহলভী রাজনীতি থেকে সরে এসে সচ্ছল হয়ে উঠেছিলেন, এমনকি জনসম্মুখে কোন মন্তব্যও করেননি। {{তথ্যসূত্র প্রয়োজন|date=June 2020}}
তার জীবনের শেষ বছরগুলিতে সমাজে নৈতিকতার অবনতি, [[হিন্দু]] ও [[মুসলিম|মুসলমানদের]] মধ্যে সংঘর্ষ এবং অন্যান্য বিভিন্ন কারণে, দেহলভী রাজনীতি থেকে সরে এসে সচ্ছল হয়ে উঠেছিলেন, এমনকি জনসম্মুখে কোন মন্তব্যও করেননি। {{তথ্যসূত্র প্রয়োজন|date=June 2020}}


শেষ কয়েক মাসে তিনি চিকিৎসা সত্ত্বেও গুরুতর যকৃতের অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি বাহাত্তর বছর বয়সে মারা যান। [[দিল্লি|দিল্লির]] মেহরুলিতে [[কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী|কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকির]] মাজারের নিকটে তাঁকে সমাধীস্থ করা হয়েছিল। তাঁর জানাজায় এক লক্ষ লোক একত্রিত হয়ে ছিল। <ref name="shodh"/>
শেষ কয়েক মাসে তিনি চিকিৎসা সত্ত্বেও গুরুতর যকৃতের অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি সাতাত্তর বছর বয়সে মারা যান। [[দিল্লি|দিল্লির]] মেহরুলিতে [[কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী|কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকির]] মাজারের নিকটে তাঁকে সমাধীস্থ করা হয়েছিল। তার জানাজায় এক লক্ষ লোক একত্রিত হয়ে ছিল। <ref name="shodh"/>


== শিক্ষার্থীরা ==
== শিক্ষার্থীরা ==
৮৯ নং লাইন: ৮৯ নং লাইন:
== আরও দেখুন ==
== আরও দেখুন ==
*[[দেওবন্দি ব্যক্তিত্বের তালিকা]]
*[[দেওবন্দি ব্যক্তিত্বের তালিকা]]
== গ্রন্থপঞ্জি ==
* {{বই উদ্ধৃতি
|ইউআরএল=https://islamansiklopedisi.org.tr/kifayetullah-dihlevi
|শিরোনাম=KİFÂYETULLAH DİHLEVÎ
|শেষাংশ=মাসুদ
|প্রথমাংশ=মুহাম্মদ খালিদ
|পাতাসমূহ=৫৬৬–৫৬৭
|খণ্ড=২৫
|বছর=২০২২
|কর্ম=[[টিডিবি এনসাক্লোপিডিয়া অব ইসলাম]]
|প্রকাশক=ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, [[ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর]]
|অবস্থান=[[ইস্তাম্বুল]], [[তুরস্ক]]
|ভাষা=tr
|আইএসবিএন=9789753894142
}}
* {{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.scribd.com/document/363777920/হাদীসের-তত-ত-ব-ও-ইতিহাস-pdf|শিরোনাম=হাদিসের তত্ত্ব ও ইতিহাস|শেষাংশ=আজমী|প্রথমাংশ=নূর মুহাম্মদ|বছর=২০০৮|প্রকাশক=এমদাদিয়া পুস্তকালয়|অবস্থান=বাংলাবাজার, ঢাকা|পাতাসমূহ=১৭৯}}


{{ভারতীয় দেওবন্দি}}
{{ভারতীয় দেওবন্দি}}
৯৭ নং লাইন: ১১৩ নং লাইন:
[[বিষয়শ্রেণী:উর্দু ভাষার লেখা থাকা নিবন্ধ]]
[[বিষয়শ্রেণী:উর্দু ভাষার লেখা থাকা নিবন্ধ]]
[[বিষয়শ্রেণী:দেওবন্দি ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:দেওবন্দি ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের রাজনীতিবিদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সভাপতি]]
[[বিষয়শ্রেণী:মাহমুদ হাসান দেওবন্দির ছাত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:হানাফী ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:মাতুরিদি ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতের আলেম]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতের প্রধান মুফতি]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় বিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা]]

০৭:১৮, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মুফতিয়ে আযম

কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি
مفتی کفایت‌اللہ دہلوی
সভাপতি, জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ
অফিসে
১৯১৯ – ১৯৩৮
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৮৭৫
মৃত্যু৩১ ডিসেম্বর ১৯৫২
ধর্মইসলাম
জাতীয়তা ভারত
যুগআধুনিক
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
আন্দোলনদেওবন্দি
প্রধান আগ্রহহাদীস, ফিকহ, লেখালেখি, তাসাউফ
উল্লেখযোগ্য কাজতালিমুল ইসলাম
যেখানের শিক্ষার্থী

মুহাম্মদ কেফায়াতুল্লাহ বিন ইনায়াতুল্লাহ শাহজাহানপূরী দেহলভি (উর্দু: محمد کفایت‌اللہ بن عنایت‌اللہ شاہ‌جہان‌پوری دہلوی‎‎  ; আনু. ১৮৭৫ — ৩১ ডিসেম্বর ১৯৫২) মুফতি কিফায়াতুল্লাহ নামে পরিচিত, তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত এবং হানাফি ফকিহ। তিনি জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং ভারতের প্রধান মুফতি হিসেবেও বিবেচিত হন [][][][] তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক অশান্তির মধ্যদিয়ে ভারতীয় মুসলমানদের পরিচালনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। তার জীবনের শেষ বছরগুলি শিক্ষামূলক এবং সামাজিক কাজে নিবেদিত ছিল। তিনি দিল্লি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং এর ভিত্তি কমিটিতে ছিলেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন মাহমুদ হাসান দেওবন্দী[][]

দেহলভী রহ: এর পূর্বপুরুষ ইয়েমেন থেকে এসেছিলেন, কিন্তু তার দাদা-পিতামহীরা বাহরাইনের ব্যবসায়ীরা ছিলেন যারা তাদের পণ্য বিক্রি করতে ভারতে ভ্রমণ করেছিলেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] অজানা সময়ে দেহলভীর পরিবার ভোপাল থেকে শাহজাহানপুরে আগমন করেন। দিল্লীতেবাবা ইনায়েতউল্লাহর চার ছেলে ও দুই মেয়ে ছিল, তবে তিনি ছিলেন দরিদ্র। []

প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

কিফায়াতুল্লাহ ইবনে ইনায়াতউল্লাহ ইবনে ফাইদুল্লাহ ইবনে খায়রুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ দেহলভী ১৮৭৫ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি জেলা শাহজাহানপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। [] পাঁচ বছর বয়সে তিনি হাফিজ বরকতউল্লাহর মক্তবে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি কুরআন সমাপ্ত করেন এবং নাসিমুল্লাহর কাছ থেকে উর্দু এবং প্রাথমিক ফারসি ভাষাতে শিক্ষা লাভ করেন। এরপরেই তিনি মাদ্রাসায়ে আজিজিয়ায় ভর্তি হন। সেখানে তিনি ফারসি ভাষার সর্বাধিক উন্নত কিতাব, সিকান্দার নামা এবং তার শিক্ষক বুধুন খানের অধীনে আরবি অধ্যয়ন শুরু করেন। তারপরে, দেহলভীকে মুরাদাবাদের শাহী মসজিদে আরাবিয়ার মাদ্রাসার প্রধান উবায়দুল হক সাহেবের কাছ থেকে সুপারিশপত্র সহ প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি ভর্তি হন এবং মুহাম্মদ ইসমাইলের বাসায় থেকে যান। তিনি সেখানে দু'বছর পড়াশোনা করেছেন। এরপরে দেহলভী রহ: ১৮৯৫ সালে দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হন। তার স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে, তিনি ততটা চেষ্টা করতে পারেননি, তবে দ্রুত তার সহপাঠীদের পিছনে ফেলে তার পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করেছিলেন। তিনি বাইশ বছর বয়সে ১৮৯৮ সালে দারুল উলূম দেওবন্দে পড়াশোনা শেষ করেন। []

শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

স্নাতক শেষ করার পরে, দেহলভী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনউদ্দিনের সাথে দিল্লিতে সময় কাটান। এরপরে তিনি শাহজাহানপুরে ফিরে আসেন, যেখানে তার প্রাক্তন শিক্ষক 'উবায়দুল হক রহ: এর মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেহলভী সেখানে শিক্ষক হন এবং শিক্ষাসচিব ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পরিচালনা করেন। দেহলভী আরবী ও ফারসি ভাষাও শিখিয়েছিলেন। তার বেতন ছিল মাসে পনেরো টাকা। একজন শিক্ষক ও প্রশাসক হিসাবে তার দায়িত্বের পাশাপাশি, এই সময়ে তিনি বিভিন্ন ইসলামী মাসআলা মাসায়েলের জবাব দিতেন। প্রতিটি ফতোয়ার জবাবে দেহলভী ছিলেন নিখুঁত ও সতর্ক এবং সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ দিয়ে উত্তর দিতেন। মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলমে থাকাকালীন দেহলভী আহমদীদের প্রতিক্রিয়া হিসাবে একটি মাসিক সাময়িকী আল বুরহান শুরু করেছিলেন। প্রথম সংখ্যাটি ১৩২১ হিজরিতে শাবানে প্রকাশিত হয়েছিল এবং আহমদী বিশ্বাসকে খণ্ডন করার চেষ্টা করেছিল। []

এই সময়, মাদ্রাসা 'আইনুল' ইলমের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এভাবে ১৩১২ হিজরিতে শিক্ষকদের বেতন হ্রাস করা হয়। মুফতির বেতন মাসে আঠারো থেকে ষোল রুপি করা হয়েছিল। তবে তিনি তার শিক্ষক উবায়দুল হক খানের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর মাদ্রাসায়ে আইনুল ইলমে ছিলেন। এরপরে মুফতি কেফায়াতুল্লাহ দিল্লিতে চলে যান এবং মাদ্রাসায়ে আমিনিয়ায় শিক্ষক হন। হাদীস পড়ানো ও ফাতাওয়া জবাব দেওয়ার পাশাপাশি মুফতি মাদ্রাসার সাংগঠনিক বিষয় পরিচালনা করেন। প্রতি মাসে তার বেতন ছিল বিশ টাকা। দিল্লিতে দেহলভী দ্রুত খ্যাতিমান হন। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং উচ্চবর্গের লোকেরা তাদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিষয়ে তার সাথে পরামর্শ করতেন এবং তার পরামর্শ থেকে উপকৃত হতেন। আইন আদালতও তার উপস্থিতি থেকে উপকৃত হয়েছিল। মাদ্রাসায়ে আমিনিয়ায় তার আগমনের পর মুফতি রহ: শিক্ষা কাঠামোকে উপকারী সংস্কারের একটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন প্রবর্তিত মাদ্রাসা। তারপরে ১৩২৮ হিজরিতে তিনি আঞ্জুমান ইসলাহুল কালাম নামে একটি সমাবেশ শুরু করেন। এই সমাবেশের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের বক্তৃতা এবং বিতর্ক শেখানো। প্রতি অষ্টম দিনে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি বক্তৃতা দিতে হবে বা একটি কথোপকথনে জড়িত হতে হয়েছিল এবং মুফতি রহ: সহায়তা করবেন। এই সমাবেশটি তার লক্ষ্যে সফল হয়েছিল, তবে অবশেষে অংশগ্রহণের অভাবে শেষ হয়েছিল। পঞ্চাশ বছর পর মুফতি কয়েক হাজার ফাতাওয়া জবাব দিয়েছিলেন এবং তার রায় ফিকহের সম্পদ। মুফতির ফাতাওয়া অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত অথচ সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ দ্বারা পূর্ণ ছিল। তার ফাতাওয়া সর্বদা প্রশ্নকর্তার অভিপ্রায় অনুসারে উত্তর দেওয়া হত। এই কারণেই তিনি সাধারণ লোকদের পাশাপাশি আইন আদালতের কর্মকর্তাদের মধ্যে খ্যাতিমান ছিলেন, যারা ধর্মীয় মামলায় তার রায়কে প্রাধান্য দিতেন। []

সক্রিয়তা

[সম্পাদনা]

দেহলভী ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের সুপারিশ করার জন্য একটি ফতোয়া দিয়েছিলেন যা প্রায় ৫০০ মুসলিম পণ্ডিত স্বাক্ষর করেছিলেন। []

সাহিত্যের কর্মজীবনর

[সম্পাদনা]

ছোটবেলা থেকেই দেহলভী পড়া-লেখা পছন্দ করতেন। তার প্রথম প্রধান প্রচেষ্টাটি ছিল আল বুরহান নামক সাময়িকী যা তিনি আহমদী বিশ্বাসকে অস্বীকার করে লিখেছিলেন। [] তার দ্বিতীয় প্রধান কাজটি ছিল আরবী কবিতা রউদুর রাইয়াহিন, যা ১৯০৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি সর্বপ্রথম ১৯০৮ সালে মাদ্রাসা আমিনিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। কবিতাটির স্পষ্টতা এবং মহিমা এমন ছিল যে দেহলভিকে অনুরোধ করা হয়েছিল পাদটীকা সহ একটি উর্দু অনুবাদ তৈরি করার জন্য। মূল থেকে কঠিন শব্দের বিশদ ব্যাখ্যা করতেন। দেহলভীর সর্বাধিক খ্যাতিমান প্রকাশনা হ'ল তালিমুল ইসলাম, সহজ ভাষায় শিশুদের জন্য চার খণ্ডের প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কিতাব। এতে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস ও রীতি সম্পর্কিত বিবরণ রয়েছে। দেহলভী বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ রচনা করেছিলেন যা বই হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু এখন আর পাওয়া যায় না। দেহলভী বিশিষ্ট আলেম ও যোগ্য লেখক হলেও তার সাহিত্যকর্মের সংখ্যা কম। কারণটি হল তার শিক্ষণ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, ঘরোয়া কর্মকাণ্ড এবং ফাতাওয়া জবাব তাঁকে এতটাই ব্যস্ত করে তুলেছিল যে তার লেখার সময় ছিল না। []

শেষ কয়েক বছর এবং মৃত্যু

[সম্পাদনা]

তার জীবনের শেষ বছরগুলিতে সমাজে নৈতিকতার অবনতি, হিন্দুমুসলমানদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং অন্যান্য বিভিন্ন কারণে, দেহলভী রাজনীতি থেকে সরে এসে সচ্ছল হয়ে উঠেছিলেন, এমনকি জনসম্মুখে কোন মন্তব্যও করেননি। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

শেষ কয়েক মাসে তিনি চিকিৎসা সত্ত্বেও গুরুতর যকৃতের অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি সাতাত্তর বছর বয়সে মারা যান। দিল্লির মেহরুলিতে কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকির মাজারের নিকটে তাঁকে সমাধীস্থ করা হয়েছিল। তার জানাজায় এক লক্ষ লোক একত্রিত হয়ে ছিল। []

শিক্ষার্থীরা

[সম্পাদনা]

দেহলভীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে মুহাম্মদ তাকী আমিনী, ইজাজ আলী আমরূহি এবং দেশবন্ধু গুপ্ত।[][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Mufti Azam Hind, Maulana Kifayatyullah Shahjahanpuri Thumma Dehlawi (2005 সংস্করণ)। Khuda Bakhsh Oriental Library 
  2. "Mufti Kifayatullah" (পিডিএফ)shodhganga। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 
  3. "Formation of Jamiat-Ulama-i-Hind" (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 122। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 
  4. Shinde, P.K. (২০০৫)। Dalits and Human Rights: Dalits: the broken future। Dalits and Human Rights। Isha Books। পৃষ্ঠা 259। আইএসবিএন 978-81-8205-274-1। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৬, ২০২০ 
  5. Mohammad Najeeb Qasmi"جامعہ میں آر ایس ایس کے اندریش کُمار کا گوشت سے متعلق جھوٹا بیان"najeebqasmi.com। ২৬ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 
  6. "About Mufti Kifayatullah" (পিডিএফ)ShodhGanga। পৃষ্ঠা 90-91। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 
  7. Maulana Syed Mehboob RizwiHistory of The Dar al-Ulum Deoband (Volume 2) (English ভাষায়) (1981 সংস্করণ)। Idara-e-Ehtemam, Dar al-Ulum Deoband। পৃষ্ঠা 53-55। 
  8. "حضرت مولانا مفتی کفایت اللہ دہلوی"juipak.org.pk। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]