বিষয়বস্তুতে চলুন

সৈয়দপুর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Shamim Sarker (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৭:০৯, ২১ মার্চ ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (শিক্ষা)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

সৈয়দপুর
শহর
সৈয়দপুর রংপুর বিভাগ-এ অবস্থিত
সৈয়দপুর
সৈয়দপুর
সৈয়দপুর বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
সৈয়দপুর
সৈয়দপুর
সৈয়দপুর শহরের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৫°৪৬′৪১″ উত্তর ৮৮°৫৩′৫১″ পূর্ব / ২৫.৭৭৮০৬° উত্তর ৮৮.৮৯৭৫০° পূর্ব / 25.77806; 88.89750
রাষ্ট্রবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর
জেলানীলফামারী
উপজেলাসৈয়দপুর
অন্তর্ভূক্তি১৯৫৮
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • শাসকসৈয়দপুর পৌরসভা
 • মেয়রআমজাদ হোসেন সরকার
উচ্চতা[]৪৩ মিটার (১৪১ ফুট)
জনসংখ্যা ১,৩৩,৪৩৩
সময় অঞ্চলবামাস (ইউটিসি+০৬.০০)

সৈয়দপুর বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার একটি শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের তৃতীয় বৃহত্তম শহর (রংপুর প্রথম ও দিনাজপুর দ্বিতীয়)। এটি সৈয়দপুর উপজেলার সদরদপ্তর ও জেলার প্রধান বানিজ্যিক শহর। রাজধানী ঢাকা থেকে এর দুরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার এবং রংপুর শহর হতে ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল)। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে খরখড়িয়া নদীর পূর্ব তীরে সমতল এলাকাতে অবস্থিত। রংপুর বিভাগের একমাত্র বিমানবন্দরটি এখানে অবস্থিত হওয়ায় একে উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ যোগযোগ কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এন৫, যা এশিয়ান মহাসড়কের অংশ এ শহরের মধ্য দিয়ে গেছে।

নামকরণ

সৈয়দপুর নামের উৎপত্তি সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যায়নি। এটা অনেক আগে থেকেই জানা যায় যে ভারতের কোচ বিহারের একটি সৈয়দ পরিবার এসে এই এলাকায় বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচার শুরু করে। সাধারণত এটি বিশ্বাস করা হয় যে, এই সৈয়দ পরিবারের নামে এই সৈয়দপুর নামটি নামকরণ করা হয়েছে।[]

ইতিহাস

সৈয়দপুরের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কোন জানা যায় না। পূর্বে এটি কামরুপ রাজ্যে অধীন ছিল। আলাউদ্দিন সৈয়দ হোসেন শাহ কামরূপ অভিযানের সময় সৈয়দপুরের নিকটে কেল­াবাড়ীর হাটে একটি দুর্গ নির্মাণ করে সেখান থেকে কামরুপ অভিযান পরিচালনা করেন। ১৮৭০ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপের কাছাকাছি সৈয়দপুর শহরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯১৫ সালে রেলওয়ে স্টেশনের পাশে সৈয়দপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে সৈয়দপুর পৌরসভা গঠিত হয়।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় অনেক বিহারী শরণার্থী সৈয়দপুরে চলে আসে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে ২৩ মার্চ বিহারিগণ বাঙ্গালিদের উপর হামলা চালায়, যাতে কয়েকজন বাঙালি নিহত হন। ৭ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী কিছু নিরহ বাঙালিকে হত্যা করে। ২৩ জুন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৩৫০ জন বাঙালিকে ধরে নিয়ে গোলাহাটে গণহত্যা করে।[]

ভুগোল

সৈয়দপুর বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলায় ২৫.৪৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৫.৫২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৮.৫১ ডিগ্রি দক্ষিণ দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯.০১ ডিগ্রি দক্ষিণ দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। সমুদ্র সমতল থেকে এর উচ্চতা ৪৩ মিটার (১৪১ ফুট)।[] এই শহর বাঙালিপুর, কামারপুকুর, বোথলাগাড়ি, চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়ন দ্বারা পরিবেষ্টিত। সৈয়দপুর শহরের মোট আয়তন ৩০.৪ বর্গকিলোমিটার, এর মধ্যে ২৪.৮৮ বর্গকিলোমিটার পৌরসভার অধীন এবং বাকি ৫.১৬ বর্গকিলোমিটার বাঙালিপুর ইউনিয়নের অধীন।[]

জনসংখ্যা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী সৈয়দপুরের মোট জনসংখ্যা ১৩৩,৪৩৩ জন, যা সৈয়দপুরকে বাংলাদেশের ৩২তম বৃহৎ শহরে (জনসংখ্যার ভিত্তিতে) পরিণত করেছে[], যারা ২৭,৫১৫টি খানায় বসবাস করে। তাদের মধ্যে ৬৮,৮৮৪ জন পুরুষ এবং ৬৪,৫৪৯ জন নারী। নারী ও পুরুষের অনুপাত হল ১০০:১০৭, যা ২০০১ সালে ছিল ১১১ জন।

শিক্ষা

সৈয়দপুরের সবচেয়ে প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, যা ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সৈয়দপুরকে নীলফমারী জেলার শিক্ষার শহরও বলা হয়। এখানে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যা জেলার একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার, ব্যবসায় প্রশাসনসহ প্রধান বিষয়সমূহে স্নাতক ও স্নাকোত্তর কোর্স চালু আছে। আরও ৩টি কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ও স্নাকোত্তর কোর্স চালু আছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহ দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত। এখানকার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ হল ক্যান্টপাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ক্যান্টমেন্ট বোর্ড হাইস্কুল, সৈয়দপুর সরকারি কলেজ, সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজ, সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজ, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল-উলুম মাদ্রাসা, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আল ফারুক একাডেমি। এছাড়া আরও প্রায় ৯টি কলেজ, ৫০টির উপরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কিন্ডারগার্ডেন রয়েছে।

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী সৈয়দপুরের শিক্ষার হার ৬৩.৯%[], যার মধ্যে নারী শিক্ষার হার ৬০% এবং পুরুষ শিক্ষার হার ৬৫.৮%। ১৯৯১ সালে এ শিক্ষার হার ছিল ৫৭.৮%।

প্রশাসনিক ব্যবস্থা

সৈয়দপুর শহর ১৫টি প্রশাসনিক ওয়ার্ড বিশিষ্ট্য একটি পৌরসভা দ্বারা এবং কিয়দংশ ইউনিয়ন (বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন) দ্বারা শাসিত হয়। সৈয়দপুর পৌরসভা ১৯৫৮ সালে গঠিত হয়েছিল, পৌর প্রধানের পদবি হল মেয়র, তিনি পাঁচ বছরের জন্য সরাসরি জনগনের ভোটে নির্বাচিত হন। এটি নীলফামারী-৪ সংসদীয় আসনের আওতাভুক্ত।

যোগাযোগ

তথ্যসূত্র

  1. "Geographic coordinates of Saidpur, Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। DATEANDTIME.INFO। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৯ 
  2. Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  3. আবদুস সাত্তার (২০১২)। "সৈয়দপুর উপজেলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743