বিষয়বস্তুতে চলুন

ক্রিস্টোফার প্লামার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্রিস্টোফার প্লামার

Christopher Plummer
জন্ম
আর্থার ক্রিস্টোফার অর্মে প্লামার

(১৯২৯-১২-১৩)১৩ ডিসেম্বর ১৯২৯
মৃত্যু৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১(2021-02-05) (বয়স ৯১)
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯৫৩-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীট্যামি গ্রাইমস
(বি. ১৯৫৬; বিচ্ছেদ. ১৯৬০)

প্যাট্রিশিয়া লুইস
(বি. ১৯৬২; বিচ্ছেদ. ১৯৬৭)

এলেইন টেলর (বি. ১৯৭০)
সন্তানঅ্যামান্ডা প্লামার
আত্মীয়জন বেথুন
(প্র-প্র-প্র পিতামহ)
জন বেথুন দ্য ইয়াঙ্গার
(প্র-প্র পিতামহ)
জোসেফ অ্যাবট
(প্র-প্র মাতামহ)
জন অ্যাবট
(প্র মাতামহ)
এফ. বি. ফেদারস্টোনহাউ
(পিতামহের ভাই)

আর্থার ক্রিস্টোফার অর্মে প্লামার সিসি (১৩ ডিসেম্বর ১৯২৯ - ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১) একজন কানাডীয় অভিনেতা ছিলেন। ছয় দশকের অধিক সময়ের কর্মজীবনে তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৫৮ সালে স্টেজ স্ট্রাক দিয়ে তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়। তিনি দ্য সাউন্ড অব মিউজিক (১৯৬৫) ছবিতে ক্যাপ্টেন গেয়র্গ ফন ট্রাপ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সর্বাধিক পরিচিতি অর্জন করেন।[] পরবর্তীকালে তিনি অসংখ্য ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে ওয়াটারলু (১৯৭০) ছবিতে ওয়েলিংটনের প্রথম ডিউক আর্থার ওয়েলেসলি, দ্য ম্যান হু উড বি কিং (১৯৭৫) ছবিতে রুডইয়ার্ড কিপলিং, দি ইনসাইডার (১৯৯৯) ছবিতে মাইক ওয়ালেস, দ্য লাস্ট স্টেশন (২০০৯) ছবিতে লিও তলস্তয়, দি এক্সেপশন (২০১৬) ছবিতে দ্বিতীয় কাইজার ভিলহেল্ম, এবং অল দ্য মানি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (২০১৭) ছবিতে জে. পল গেটি।

প্লামার তার অভিনয় জীবনে একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে একটি একাডেমি পুরস্কার, দুটি এমি পুরস্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, একটি জিনি পুরস্কার, একটি টনি পুরস্কার, একটি বাফটা পুরস্কার এবং একটি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার। তিনি অভিনয়ের ত্রি-মুকুট (একাডেমি, এমি ও টনি পুরস্কার) বিজয়ী অভিনয়শিল্পীদের একজন। তিনি ৮২ বছর বয়সে বিগিনার্স (২০১০) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন[] এবং ৮৮ বছর বয়সে অল দ্য মানি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[] ফলে তিনিই শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে বয়োজ্যেষ্ঠ একাডেমি পুরস্কার বিজেতা ও মনোনীত ব্যক্তি।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

আর্থার ক্রিস্টোফার অর্মে প্লামার ১৯২৯ সালের ১৩ই ডিসেম্বর অন্টারিও অঙ্গরাজ্যের টরন্টো শহরে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পিতা জন অর্মে প্লামার স্টক ও সিকিউরিটিজ বিক্রি করতেন,[] এবং তার মাতা ইসাবেলা ম্যারি (বিবাহপূর্ব অ্যাবট) ছিলেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী স্যার জন অ্যাবটের নাতনী এবং ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ডিনের অফিস সহায়ক।[][] পিতার দিক থেকে তার পিতামহের ভাই এফ. বি. ফেদারস্টোনহাউ সনদ সংক্রান্ত আইনজীবী ও প্রতিনিধি ছিলেন।[] প্লামারের চাচাতো ভাই ব্রিটিশ অভিনেতা নাইজেল ব্রুস, যিনি ব্যাসিল র‍্যাথবোনের শার্লক হোমস-এ ডক্টর ওয়াটসন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৬০-এর দশক

[সম্পাদনা]

প্লামার ফিলিপ ব্যারির দ্য ফিলাডেলফিয়া স্টোরি (১৯৫৯), জর্জ বার্নার্ড শ'র ক্যাপ্টেন ব্র্যাসবাউন্ড্‌স কনভারশন (১৯৬০), জঁ আনুইয়ের টাইম রিমেম্বার্ড,[]এদমোঁ রস্তাঁর সিরানো দ্য বের্জরাক (১৯৬২) নাটকের টেলিভিশন সংস্করণে অভিনয় করেন। ১৯৬৪ সালে বিবিসির টিভি চলচ্চিত্র হ্যামলেট অ্যাট এলসিনোর-এ গ্লুমি ডেন চরিত্রে অভিনয় করে এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

১৯৬০ সালে স্ট্র্যাটফোর্ড উৎসবে তিনি কিং জন নাটকে ফিলিপ দ্য বাস্টার্ড এবং রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট নাটকে মার্কুশিও চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬২ সালে স্ট্র্যাটফোর্ডে তিনি সিরানো দ্য বের্জরাকম্যাকবেথ নাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি পুনরায় সেখানে অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা নাটকে মার্ক অ্যান্টনি চরিত্রে অভিনয় করেন।[][১০]

দ্য সাউন্ড অব মিউজিক

১৯৬৪ সালে জালৎস্‌বুর্গের দ্য সাউন্ড অব মিউজিক চলচ্চিত্রের সেটে প্লামার ও জুলি অ্যান্ড্রুজ

তিনি জুলি অ্যান্ড্রুজের বিপরীতে রবার্ট ওয়াইজের দ্য সাউন্ড অব মিউজিক (১৯৬৫) চলচ্চিত্রে ক্যাপ্টেন গেয়র্গ ফন ট্রাপ চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে প্রথম বাণিজ্যিক ও সমালোচনামূলক সফলতা অর্জন করেন। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করে এবং গন উইথ দ্য উইন্ড-কে পিছনে ফেলে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করে।[১১]

দ্য সাউন্ড অব মিউজিক চলচ্চিত্রের বক্স অফিস সাফল্য ও জনপ্রিয়তার জন্য প্লামার দীর্ঘকাল তার ক্যাপ্টেন গেয়র্গ ফন ট্রাপ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন, যাকে তিনি একবার "খুবই ভয়াবহ ও আবেগসম্পৃক্ত ও ভাবপ্রবণ" বলে বর্ণনা করেন।[১২] তিনি অ্যান্ড্রুজের সাথে অভিনয় ব্যতীত এই চলচ্চিত্র নির্মাণের সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয়াদিকে অপ্রীতিকর মনে করতেন এবং তিনি চলচ্চিত্রটির নাম নিতেন না, বরং "ঐ চলচ্চিত্র", "এসঅ্যান্ডএম", বা "দ্য সাউন্ড অব মিউকাস" নামে ডাকতেন।[১৩] তিনি এই চলচ্চিত্রের ৪০তম বার্ষিকীর অভিনয়শিল্পীগণের পুনর্মিলনীতে অংশ নেননি,[১৪] কিন্তু ২০০৫ সালে ডিভিডি প্রকাশকালে তাতে মন্তব্য প্রদান করেন।[১৫] তবে তিনি এই চলচ্চিত্রের ৪৫তম বার্ষিকীতে সকল অভিনয়শিল্পীর সাথে ২০১০ সালের ২৮শে অক্টোবর দি ওপরা উইনফ্রি শো-তে উপস্থিত ছিলেন।[১৬]

১৯৭০-এর দশক

[সম্পাদনা]

প্লামার ১৯৭১ সালের জুন থেকে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ন্যাশনাল থিয়েটারে অভিনয় করেন। তিনি লন্ডনের নিউ থিয়েটারে লরন্স অলিভিয়ের নির্দেশনায় জঁ জিরোদুর অ্যাম্ফিট্রিয়ন ৩৮;[১৭] জোনাথন মিলারের নির্দেশনায় গেয়র্গ বুশনারের ড্যান্টন্‌স ডেথ; অ্যাড্রিয়ান মিচেলের টাইগার; লুইজি পিরানদেল্লোর দ্য রুলস অব দ্য গেম; এবং ইউজিন ওনিলের লং ডেস জার্নি ইনটু নাইট। ১৯৭৩ সালের মে থেকে জুন মাসে তিনি ব্রডওয়ে মঞ্চে এদমোঁ রস্তাঁর ১৮৯৭ সালের নাটক সিরানো দ্য বের্জরাক অবলম্বনে অ্যান্থনি বার্জেস ও মাইকেল জে. লুইসের সঙ্গীতনাট্যরূপ সিরানো-এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি প্লামার সঙ্গীতনাট্যে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে টনি পুরস্কার ও সেরা অভিনয়ের জন্য ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার অর্জন করেন। এই বছরের শেষভাগে তিনি নিল সিমন কর্তৃক আন্তন চেখভের কয়েকটি ছোটগল্পের নাট্য উপযোগকরণ দ্য গুড ডক্টর-এ চেখভ চরিত্রে অভিনয় করেন।[১৮]

তিনি ১৯৭৩ সালে ওয়াশিংটন, ডি.সি.র কেনেডি সেন্টারের অপেরা হাউজে লাভার্স অ্যান্ড ম্যাডমেন নাটকে এবং ১৯৭৫ সালে একই স্থানে লাভ অ্যান্ড মাস্টার উইল নাটকে অভিনয় করেন।[১৯] ১৯৭৪ সালে তিনি আর্থার মিলারের আফটার দ্য ফল নাটকে কোয়েন্টিন চরিত্রে অভিনয় করেন, যে চরিত্রটিতে জেসন রবার্ডস প্রথম ব্রডওয়ে মঞ্চে অভিনয় করেছিলেন।[২০] তিনি ১৯৭৭ সালে এমি পুরস্কার বিজয়ী দ্য মানিচেঞ্জার্স ধারাবাহিকে অভিনয় করে সীমিত ধারাবাহিক বা টিভি চলচ্চিত্রে সেরা অভিনেতা বিভাগে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার অর্জন করেন।

প্লামার ওয়াটারলু (১৯৭০) চলচ্চিত্রে ওয়েলিংটনের প্রথম ডিউক আর্থার ওয়েলেসলির চরিত্র রূপায়ন করেন। তার অভিনীত প্রথম কানাডীয় চলচ্চিত্র ছিল দ্য পিক্স (১৯৭৩)। তিনি মাইকেল কেইনশন কনারির সাথে দ্য ম্যান হু উড বি কিং (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে রুডইয়ার্ড কিপলিং চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি পিটার সেলার্সের সাথে হাস্যরসাত্মক দ্য রিটার্ন অব দ্য পিঙ্ক প্যান্থার (১৯৭৫) এবং এলিয়ট গোল্ডের সাথে হাস্যরসাত্মক দ্য সাইলেন্ট পার্টনার (১৯৭৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি এই সময়ে এসেস হাই (১৯৭৬), ইন্টারন্যাশনাল ভেলভেট (১৯৭৮) এবং শার্লক হোমস চরিত্রে মার্ডার বাই ডিক্রি (১৯৭৯) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৮০-১৯৯০-এর দশক

[সম্পাদনা]

১৯৮০-এর দশকের শুরুতে তিনি ব্রডওয়ে মঞ্চে দুটি শেকসপিয়ারীয় বিয়োগান্ত নাটকে অভিনয় করেন। তন্মধ্যে ওথেলো নাটকে ইয়াগো চরিত্রে এবং ম্যাকবেথ নাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। ইয়াগো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি মঞ্চনাটকে সেরা অভিনেতা বিভাগে একটি টনি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

প্লামার ১৯৮৩ সালে সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত টিভি চলচ্চিত্র দ্য স্কার্লেট অ্যান্ড দ্য ব্ল্যাক-এ গ্রেগরি পেকের চরিত্রের শত্রু চরিত্রে এবং একই বছর পাঁচবার এমি পুরস্কার বিজয়ী টেলিভিশন ধারাবাহিক দ্য থ্রোন বার্ডস-এ বারবারা স্ট্যানউইকজিন সিমন্সের সাথে অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি সীমিত ধারাবাহিকে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোননয়ন লাভ করেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৬ সালে তিনি অ্যানিমেটেড টেলিভিশন ধারাবাহিক দ্য ওয়ার্ল্ড অব ডেভিড দ্য নোম-এ কণ্ঠ দেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি অ্যানিমেটেড টেলিভিশন ধারাবাহিক ম্যাডেলিন-এর ধারাভাষ্য প্রদান করেন। এই কাজের জন্য তিনি একটি এমি পুরস্কার অর্জন করেন।[২১]

১৯৯৪ সালে তিনি জেসন রবার্ডসের সাথে হ্যারল্ড পিন্টারের নো ম্যান্‌স ল্যান্ড নাটকে অভিনয় করেন, যা সফলতা অর্জন করে। এই কাজের জন্য তিনি তার চতুর্থ টনি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি ব্যারিমোর নাটকে অভিনয় করেন। ব্রডওয়ে মঞ্চে এই নাটকের সফলতার পর তিনি এই নাটক নিয়ে দেশ জুড়ে সফরে যান। এই নাটকে জন ব্যারিমোর চরিত্রে অভিনয় করে তিনি তার দ্বিতীয় টনি পুরস্কার অর্জন করেন এবং মঞ্চনাতকে সেরা অভিনেতা বিভাগে ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার অর্জন করেন।

প্লামারের অন্যতম সমাদৃত চরিত্র ছিল মাইকেল মানের দি ইনসাইডার (১৯৯৯) চলচ্চিত্রের টেলিভিশন সাংবাদিক মাইক ওয়ালেস চরিত্র। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে কয়েকটি চলচ্চিত্র সমালোচক সমিতির পুরস্কার লাভ করলেও একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন পাননি।[২২]

২০০০-এর দশক

[সম্পাদনা]
টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে দি ইমাজিনারিয়াম অব ডক্টর পার্নাসাস (২০০৯)-এর প্রিমিয়ারে প্লামার

২০০০ সালে প্লামার প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার বিজয়ী নুরেমবার্গ মিনি ধারাবাহিকে স্যার ডেভিড ম্যাক্সওয়েল ফাইফ চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে শ্রেষ্ঠাংশে আরও অভিনয় করেন আলেক বল্ডউইন, ব্রায়ান কক্সম্যাক্স ভন সিডো। একই বছর তিনি আমেরিকান ট্র্যাজেডি টিভি চলচ্চিত্রে এফ. লি বেইলি চরিত্রে অভিনয় করে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ২০০৫ সালে তিনি টিভি চলচ্চিত্র আওয়ার ফাদার্স-এ অভিনয় করে সীমিত ধারাবাহিকে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে আরেকটি এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এই বছর মিরাকল প্ল্যানেট প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে এবং ইউজিন ওনিলকে নিয়ে রিক বার্নসের নির্মিত একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে তাকে দেখা যায়। এছাড়া তিনি তার দ্য সাউন্ড অব মিউজিক-এর সহশিল্পী জুলি অ্যান্ড্রুজের সাথে অন গোল্ডেন পন্ড নাটকের টেলিভিশন উপযোগকরণে অভিনয় করেন।

প্লামার এই দশকে কয়েকটি ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করেন, তন্মধ্যে রয়েছে রন হাওয়ার্ডের একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী আ বিউটিফুল মাইন্ড (২০০১) চলচ্চিত্রে ডক্টর রোজেন, অলিভার স্টোনের আলেকজান্ডার (২০০৪) চলচ্চিত্রে দার্শনিক এরিস্টটল, এবং স্পাইক লির ইনসাইড ম্যান (২০০৬) চলচ্চিত্রে আর্থার কেস চরিত্র। এছাড়া তিনি স্টিফেন গ্যাগানের নাট্যধর্মী সিরিয়ানা (২০০৫), প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক মাস্ট লাভ ডগস (২০০৫), টেরেন্স ম্যালিকের ঐতিহাসিক নাট্যধর্মী দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড (২০০৫), এবং প্রণয়মূলক নাট্যধর্মী দ্য লেক হাউজ (২০০৬) চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন।

২০০৯ সালে তিনি পিক্সারের অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র আপ-এ খলচরিত্র চার্লস মুনৎজের জন্য কণ্ঠ দেন। একই বছর তিনি টিম বার্টনের প্রযোজিত মারপিটধর্মী বিজ্ঞান কল্পকাহিনিমূলক চলচ্চিত্র নাইন-এ লিডার ওয়ানের জন্য কণ্ঠ দেন। তিনি দ্য লাস্ট স্টেশন (২০০৯) চলচ্চিত্রে লিও তলস্তয় চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে তার প্রথম একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২৩] কিন্তু ২০১০ সালের ৭ই মার্চ প্রদত্ত একাডেমি পুরস্কারে তিনি ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস-এর জন্য মনোনীত ক্রিস্টফ ভালৎজের কাছে হেরে যান।[২৪]

২০১০-এর দশক

[সম্পাদনা]

তিনি মাইক মিলসের স্বাধীন হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র বিগিনার্স (২০১১)-এ ইউয়ান ম্যাকগ্রেগরমেলানি লরেন্টের সাথে অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি তার দ্বিতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ৮৪তম একাডেমি পুরস্কারে প্লামার বিজয়ী ঘোষিত হন। ৮২ বছর বয়সে এই পুরস্কার প্রাপ্তির ফলে তিনি একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনেতা। এই পুরস্কার গ্রহণকালে তিনি রসিকতার সাথে বলেন, "তুমি আমার চেয়ে মাত্র দুই বছরের বড়। আমার সারা জীবন কোথায় ছিলে তুমি?"[২৫]

তিনি দি এক্সেপশন (২০১৬) ছবিতে দ্বিতীয় কাইজার ভিলহেল্ম চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে প্লামার রিডলি স্কটের অল দ্য মানি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (২০১৭) চলচ্চিত্রে জে. পল গেটি চরিত্রে অভিনয় করেন।[২৬] এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা এবং একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. অ্যাবেল, জুডি (৩১ জানুয়ারি ২০১০)। "At 80, Plummer has arrived at his 'Station'"বোস্টন। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. "৮৪তম অ্যাকাডেমি পুরস্কার"আনন্দবাজার পত্রিকা। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  3. "নব্বইতম অস্কার মনোনয়ন চূড়ান্ত"দৈনিক যুগান্তর। ২৬ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Christopher Plummer | Biography, Movies, & Facts"এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  5. ফ্লেচার, বার্নি (মে ১৯, ২০১৫)। "A famous son, a forgotten father"বিচ মেট্রো কমিউনিটি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  6. "A Man for All Stages: The Life and Times of Christopher Plummer"লাইফ অ্যান্ড টাইমস। নভেম্বর ১২, ২০০২। ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  7. প্লামার, ক্রিস্টোফার (অক্টোবর ৬, ২০০৯)। In Spite of Myself। নফ কানাডা। আইএসবিএন 978-0-307-39680-8 
  8. "Time Remembered"ইন্টারনেট ব্রডওয়ে ডেটাবেজ। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  9. "Christopher Plummer acting credits"Stratford Festival Archives। ৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  10. "Actor Christopher Plummer On Stage"। The Sound of Music Guide। সেপ্টেম্বর ৯, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  11. গোল্ডস্মিথ, প্যাট্রিক (জানুয়ারি ৩০, ২০১০)। "Is this a box-office record with an * ?"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  12. শিলাচি, সোফি (ডিসেম্বর ১, ২০১১)। "Christopher Plummer Recalls 'Awful,' 'Gooey' Sound of Music Role"দ্য হলিউড রিপোর্টার। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  13. অ্যাবেল, জুডি (জানুয়ারি ৩১, ২০১০)। "At 80, Plummer has arrived at his 'Station'"দ্য বস্টন গ্লোব। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  14. "Sound of Music Reunion"Sound Of Music Interactive। ২৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  15. "The Sound of Music: 40th Anniversary Edition"দ্য ডিভিডি জার্নাল। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  16. "For the First Time in 45 Years: The Sound of Music Cast Reunites"ওপরা.কম। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  17. Royal National Theatre (১৯৮৯)। Olivier at Work: The National Yearsবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Theatre Communications। পৃষ্ঠা ১০৫আইএসবিএন 978-1-85459-037-4 
  18. অ্যানিকোন, টনি (মার্চ ১০, ২০১১)। "Theatre Mirror Reviews: "The Good Doctor""থিয়েটার মিরর। এপ্রিল ২৬, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  19. "Plummer, Christopher 1929–"এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  20. "After the Fall"ইন্টারনেট ব্রডওয়ে ডেটাবেজ। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  21. ব্রুকস, টিম; মার্শ, আর্ল এফ. (২০০৩)। The Complete Directory to Prime Time Network and Cable TV Shows, 1946–present। বলেন্টাইন বুকস। পৃষ্ঠা ১৪৪৪। আইএসবিএন 0-345-45542-8 
  22. ট্যাপলি, ক্রিস্টোফার (এপ্রিল ৮, ২০১২)। "Mike Wallace's great moment of pause was immortalized forever by Oscar-winner Christopher Plummer in 'The Insider'"হিটফ্লিক্স। নভেম্বর ২৯, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  23. ওল্ডেনবার্গ, অ্যান (ফেব্রুয়ারি ২, ২০১০)। "Christopher Plummer, 80, revels in first Oscar nomination"ইউএসএ টুডে। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  24. ডুবোজিন্‌স্কিস, অ্যালেক্স (মার্চ ৭, ২০১০)। "Christoph Waltz wins Oscar for "Basterds""রয়টার্সরয়টার্স। অক্টোবর ১, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  25. "Christopher Plummer winning Best Supporting Actor"ইউটিউব। ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  26. গ্যালুপ্পো, মিয়া; ম্যাক্লিনটক, পামেলা; জিয়ার্ডিনা, ক্যারোলিন (নভেম্বর ৯, ২০১৭)। "Christopher Plummer to Replace Kevin Spacey in 'All the Money in the World'"দ্য হলিউড রিপোর্টার। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]