বিষয়বস্তুতে চলুন

চার্লস স্টাড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চার্লস স্টাড
আনুমানিক ১৮৮২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে চার্লস স্টাড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
চার্লস টমাস স্টাড
জন্ম(১৮৬০-১২-০২)২ ডিসেম্বর ১৮৬০
স্প্রাটন, নর্দাম্পটনশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৬ জুলাই ১৯৩১(1931-07-16) (বয়স ৭০)
ইবাম্বি, বেলজীয় কঙ্গো
ডাকনামসি.টি.
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কপঞ্চভ্রাতা: আর্থার, জর্জ, হার্বার্ট, কাইনাস্টোন, রেজিনাল্ড
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৭)
২৮ আগস্ট ১৮৮২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৮৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৮১ – ১৮৮৪মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব
১৮৮০ – ১৮৮৩কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
১৮৭৯ – ১৮৮৪মিডলসেক্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৯৯
রানের সংখ্যা ১৬০ ৪,৩৯১
ব্যাটিং গড় ২০.০০ ৩০.৪৯
১০০/৫০ –/– ৮/১৪
সর্বোচ্চ রান ৪৮ ১৭৫*
বল করেছে ৩৮৪ ২২,৬৫৫
উইকেট ৪৪৪
বোলিং গড় ৩২.৬৬ ১৭.৩৬
ইনিংসে ৫ উইকেট ৩২
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৩৫ ৮/৪০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/– ৭৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

চার্লস টমাস স্টাড (ইংরেজি: Charles Studd; জন্ম: ২ ডিসেম্বর, ১৮৬০ - মৃত্যু: ১৬ জুলাই, ১৯৩১) নর্দাম্পটনশায়ারের স্প্রাটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ধর্মপ্রচারক ছিলেন।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৮২ থেকে ১৮৮৩ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সি.টি. স্টাড নামে পরিচিত চার্লস স্টাড। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন।

শৈশবকাল

[সম্পাদনা]

চার্লস স্টাডের পিতা এডওয়ার্ড স্টাড সম্পদশালী ছিলেন। ইংল্যান্ডে মুডি ও স্যাঙ্কির প্রচারণায় তিনি খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হন। টিডওয়ার্থে তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসে এটনের ছাত্র সি.টি. ও তার অপর দুই ভাইকে ধর্মান্তরিত করা হয়। তার পরিবারের পাঁচ ভাই আর্থার, জর্জ, হার্বার্ট, কাইনাস্টোন ও রেজিনাল্ড প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ছয় ভাই একত্রে এটন একাদশে খেলেছেন।

এটন থেকে পরবর্তীতে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে চার্লস স্টার্ড পড়াশোনা করেন ও ১৮৮৩ সালে স্নাতকধারী হন।[] ১৮৮৪ সালে তার ভাই জর্জ গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চীনে অবস্থানকালে তার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় £২৯,০০০ পাউন্ড-স্টার্লিংয়ের সম্পদ রেখে যান। মুডি বাইবেল ইনস্টিটিউটে ৫,০০০; জর্জ মুলার মিশন ও অনাথদের জন্য ৫,০০০; হুইটচ্যাপেলে জর্জ হল্যান্ডের ইংরেজ দরিদ্রদের জন্য ৫,০০০ এবং ভারতে প্রতিষ্ঠিত স্যালভেশন আর্মিতে নিযুক্ত কমিশনার বুথ টাকারের জন্য ৫,০০০।

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

১৮৭৯ থেকে ১৮৮৪ সময়কাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান ছিল তার। এ সময়ে এমসিসি, কেমব্রিজ ও মিডলসেক্সের পক্ষে খেলেছেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও মিডলসেক্সের ইন্ডিয়া জেন্টলম্যানের ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। চার্লস সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন ও স্টাড ভ্রাতৃগণ নামে পরিচিত ছিলেন। ষোল বছর বয়সে ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন ও এটন কলেজে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। বিদ্যালয় জীবন শেষে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি অসাধারণ ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তিনি ও তার অপর দুই ভ্রাতা কাইনাস্টন স্টাড ও জর্জ স্টাড ১৮৮১ ও ১৮৮২ সালে কেমব্রিজ দলে একত্রে খেলেছিলেন।

অ্যাশেজ খেলায় জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলকে কেমব্রিজ দল ছয় উইকেটে পরাজিত করে। তিন ভাইয়ের মধ্যে স্যার জে ই কে স্টাড ও জি বি স্টাড উদ্বোধনী জুটিতে ১০৬ রান তুলে অবিস্মরণীয় জয়ে ভূমিকা রাখেন। তবে, সি টি স্টাডের ভূমিকা ছিল অনবদ্য। ১১৮ ও অপরাজিত ১৭ রান সংগ্রহের পর আট উইকেট পান।

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে চার্লস স্টাডের। ২৮ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। ১৮৮২ সালে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে অংশ নেন। খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল জয়লাভ করেছিল। এ টেস্টের মাধ্যমেই অ্যাশেজের উৎপত্তি ঘটেছিল।

১৮৮২ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার্লস স্টাড টেস্টে মূল দলের সদস্য ছিলেন। নামের আদ্যাক্ষর অনুযায়ী তিনি প্রথমে ও শেষ দুই ব্যাটসম্যানের একজন হিসেবে শেষে ব্যাটিংয়ে নামেন। স্টাড যখন ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তখন ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য মাত্র দশ রানের দরকার ছিল। তবে, অদ্ভুত স্বভাবের অধিকারী তার ব্যাটিং সঙ্গী টেড পিটের খামখেয়ালীপণার কারণে ইংরেজ দল খেলায় পরাজিত হয়েছিল।

ধর্মপ্রচার

[সম্পাদনা]

ব্রিটিশ প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান মিশনারী হিসেবে চীনে কেমব্রিজ সেভেনের সদস্য হিসেবে যান। সাতজন কেমব্রিজের ছাত্র নিয়ে গঠিত মিশনারীকে কেমব্রিজ সেভেন গঠন করা হয়েছিল। তারা হলেন - চার্লস টমাস স্টাড, স্ট্যানলি পি. স্মিথ, আর্থার টি. পোলহিল-টার্নার, ডিক্সন এডওয়ার্ড হোস্ট, সেসিল এইচ. পোলহিল-টার্নার, উইলিয়াম হোয়ারটন ক্যাসেলস। সেখানে হার্ট অব আফ্রিকা মিশন প্রতিষ্ঠা করেন যা ওয়ার্ল্ডওয়াইড এভেঞ্জলিজেশন ক্রুসেড নামে পরিচিত পায় ও বর্তমানে ওয়েক ইন্টারন্যাশনাল নামে পরিচিত। চীনে থাকাকালে প্রিসিলাকে বিয়ে করেন। বিবাহ অনুষ্ঠানে এক চীনা যাজক পরিচালনা করেছিলেন। সেখানেই তার চার কন্যা জন্মগ্রহণ করে। স্টাড বিশ্বাস করতেন যে, কন্যারা চীনের কন্যাদের মূল্যায়ণের জন্য এসেছে।

ইংল্যান্ডের ফিরে আসার পর আমেরিকায় অবস্থানকারী সহোদর কাইনাস্টোন স্টুডেন্ট ভলান্টিয়ার মুভমেন্ট প্রতিষ্ঠার জন্য তাকে আমন্ত্রণবার্তা প্রেরণ করেন। এছাড়াও তিনি, জন মটকে প্রভাবিত করেছিলেন।

১৯০০ থেকে ১৯০৬ সময়কালে চার্লস স্টাড দক্ষিণ ভারতের ওটাকামুন্দের গীর্জার যাজক হিসেবে কাজ করেন। চীনের তুলনায় এর কার্যপ্রণালী ভিন্ন ছিল। ব্রিটিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পায়।

রচনাসমগ্র

[সম্পাদনা]

চার্লস স্টাড বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। তন্মধ্যে, দ্য চকলেট সোলজার, অর, হিরোইজম: দ্য লস্ট কর্ড অব ক্রিস্টিয়ানিটি (১৯১২)[] ও ক্রাইস্টস এটসেটরাস (১৯১৫) অন্যতম।[]

স্টাড রচিত অনেকগুলো কবিতার মধ্যে ‘অনলি ওয়ান লাইফ, টুইল সুন বি পাস্ট’ সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয়। তন্মধ্যে অনলি ওয়ান লাইফ কবিতা অনুসরণে ১৯৭৩ সালে ল্যানি ওল্ফ অনলি ওয়ান লাইফ সঙ্গীত রচনা করেছিলেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

১৮৮৮ সালে প্রিসিলা স্টুয়ার্ট নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। তাদের সংসারে চার কন্যা ও দুই পুত্র ছিল। পুত্রদ্বয় শৈশবেই মারা যায়। কন্যাদের মধ্যে - ১৮৮৯ সালে জন্মগ্রহণকারী স্যালভেশন গ্রেস ফেইদ স্টাড মার্টিন সাটনের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। সাটনের মৃত্যুর পর লেফটেনেন্ট কর্নেল ডেভিড সি ডি মানরোকে বিয়ে করেন। ১৮৯১ সালে জন্মগ্রহণকারী ডরোথি ক্যাথরিন টপসি স্টাড রেভ গিলবার্ট এ বার্কলেকে বিয়ে করেন। ১৮৯২ সালে জন্মগ্রহণকারী এডিথ ক্রসলি মেরি স্টার্ড ইথিওপিয়ায় কর্মরত আলফ্রেড বাক্সটনকে বিয়ে করেন। ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী মা রু নামে পরিচিত পলিন এভেঞ্জলিন প্রিসিলা স্টার্ড লেফটেনেন্ট নরম্যান গ্রাবের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।

১৬ জুলাই, ১৯৩১ তারিখে ৭১ বছর বয়সে বেলজীয় কঙ্গোর ইবাম্বি এলাকায় চার্লস স্টাডের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Bach, Thomas John (১৯৫৫)। Pioneer Missionaries for Christ and His ChurchWheaton, Illinois: Van Kampen Press। এএসআইএন B0007ER0NE। ৫ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  2. "Studd, Charles Thomas (STT879CT)"A Cambridge Alumni Databaseকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় 
  3. "Worldmissionbooks.com The Chocolate Soldier"। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৮ 
  4. "Worldmissionbooks.com Christ's Etceteras"। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৮ 
  5. "Lanny Wolfe Trio"Southern Gospel History। David Bruce Murray। ১২ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৩1973 Let's Sing A Song About Jesus (Heart Warming Records/R3222): ... Only One Life; 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]