নিউটনের কামানের গোলা
আইজ্যাক নিউটনের একটি মানস পরীক্ষার নাম ছিল নিউটনের কামানের গোলা। এর মাধ্যমে তিনি ধারণা করেন অভিকর্ষজ বল সার্বজনীন এবং গ্রহগুলো ঘুর্ণনের জন্য প্রধানতম বল হলো এই অভিকর্ষজ বল। তিনি তার এই ধারণার কথা তার বই অ্যা ট্রিটাইস অব দ্য সিস্টেম অব দ্য ওয়ার্ল্ড বইয়ে উল্লেখ করেন।[১]
মানস পরীক্ষা
[সম্পাদনা]নিউটনের বইয়ের ৫-৮ পৃষ্ঠায় এই পরীক্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে[১] নিউটন কল্পনা করেন সর্বোচ্চ কোনো পর্বতের চুড়ায় একটি কামান রাখা আছে। যদি কোনো অভিকর্ষজ বল বা বায়ুর বাধা কাজ না করে; তবে কামানটিকে যেদিকে তাক করে গোলা নিক্ষেপ করা হবে, গোলাটি একদম সোজা সেদিকে ছুটে যেতে থাকবে। এভাবে ছুটতে ছুটতে গোলাটি পৃথিবী অতিক্রম করে চলে যাবে, কারণ কোনো অভিকর্ষজ বল বা বায়ুর বাধা এখানে কাজ করছে না। যদি অভিকর্ষজ বল কাজ করে, তবে আদিবেগের উপর নির্ভর করে কামানের গোলা এক ভিন্ন পথে যাবে। যদি বেগের মান খুবই কম হয় তবে তা পৃথিবীতেই ফিরে আসবে, (A এবং B এর ন্যায়)। পৃথিবীতে ফিরে আসার জন্য গোলার অনুভূমিক গতি ০ থেকে ৭০০০ মি/সে হতে হবে।
যদি সর্বোচ্চ উচ্চতায় গোলার গতি মহাজাগতিক বস্তুর কক্ষপথের বেগের সমান হয় তবে তা পৃথিবীর চারপাশে চাঁদের ন্যায় স্থায়ী উপগ্রহ হিসেবে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকবে। (C) উদাহরণস্বরূপ, যদি গোলার অনুভূমিক গতি ৭৩০০ মি/সেকেন্ডের কাছাকাছি হয়, তবে তা পৃথিবীর চারপাশে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকবে।
যদি গ্রহের বেগের চেয়ে গোলার গতি বেশি হয় কিন্তু মুক্তিবেগের) চেয়ে কম হয়, তবে তা পৃথিবীকে ছেড়ে যাবে না। তবে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকবে। (D) উদাহরণস্বরুপ বস্তুর আনুভূমিক গতি ৭৩০০ থেকে ১০,০০০ মি/সে এর কাছাকাছি হলে তা পৃথিবীর চারপাশে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকবে।
যদি গতি অনেক বেশি থাকে অর্থাৎ মুক্তিবেগ থাকে তবে এটি পরাবৃত্তাকার পথে অথবা অধিবৃত্তাকার পথে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে।(E) উদাহরণস্বরুপ, গোলার অনুভূমিক গতি যদি ১০,০০০ মি/সে এর বেশি হয়, তবে পৃথিবী ছেড়েই চলে যাবে।
অন্যান্য স্থানে যেভাবে এসেছে
[সম্পাদনা]সিস্টেম অব দ্য ওয়ার্ল্ড বইয়ের পৃষ্ঠায়, নিউটন এই পরীক্ষণকে চিত্রায়নের মাধ্যমে দেখিয়েছেন। যার আলোকচিত্র ভয়েজার গোল্ডেন রেকর্ডে সংরক্ষণ করা হয়েছে।[২]
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Newton, Sir Isaac (১৭২৮)। A Treatise of the System of the World। London: F. Fayram। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৪।
- ↑ Sagan, Carl et al. (1978) Murmurs of Earth: The Voyager Interstellar Record. New York: Random House. আইএসবিএন ০-৩৯৪-৪১০৪৭-৫ (hardcover), আইএসবিএন ০-৩৪৫-২৮৩৯৬-১ (paperback)