বিষয়বস্তুতে চলুন

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা
পশ্চিমবঙ্গের জেলা
পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থান
পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
প্রশাসনিক বিভাগমেদিনীপুর
সদরদপ্তরতমলুক
সরকার
 • লোকসভা কেন্দ্রকাঁথি (কাঁথি), তমলুক, ঘাটাল (আংশিকভাবে), মেদিনীপুর (আংশিকভাবে)
 • বিধানসভা আসনতমলুক, পাশকুরা পূর্ব, পাশকুরা, ময়না, নন্দকুমার, মহিষাদল, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, চাঁদপুর, পটাশপুর, কাঁথি উত্তর, ভগবানপুর, খেজুরি, কাঁথি দক্ষিণ, রামনগর, এগরা
আয়তন
 • মোট৪,৭৩৬ বর্গকিমি (১,৮২৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৫,৫০,০০০
 • জনঘনত্ব১২০/বর্গকিমি (৩০০/বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকাতমলুক হলদিয়া দীঘা কাঁথি এগরা
জনতাত্ত্বিক
 • সাক্ষরতা৮৭.৬৬ শতাংশ
 • লিঙ্গানুপাত৯৩৬ মহিলা/১০০০ পুরুষ
প্রধান মহাসড়কএনএইচ ১৬, এনএইচ ১১৬, এনএইচ ১১৬বি
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহকুমা

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর বিভাগের একটি জেলা। এই জেলার উত্তরে পশ্চিম মেদিনীপুরহাওড়া জেলা; পূর্বে হুগলি নদীদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ওড়িশা রাজ্য।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভাষাসমূহ ২০১১ [].[]

  বাংলা (৯৮.২৮%)
  হিন্দী (০.৭০%)
  অন্যান্য (১.০২%)

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

২০০২ সালের ১ জানুয়ারি অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার তমলুক, হলদিয়া, কাঁথিএগরা নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা গঠিত হয়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই অঞ্চলের ভূমিকা অত্যন্ত উজ্জ্বল। সাম্প্রতিককালে নন্দীগ্রাম গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে এই জেলা আবার সংবাদ শিরোনামে এসেছে।

অর্থনীতি

[সম্পাদনা]

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি ও শিল্প দুই ক্ষেত্রেই যথেষ্ট অগ্রসর। এই জেলায় অবস্থিত হলদিয়া শিল্পাঞ্চল দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শিল্পাঞ্চল। এই জেলার দিঘা, মান্দারমনি, তাজপুর - সমুদ্রসৈকতগুলি পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়।

ভ্রমণব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলীয় অঞ্চল হুগলি নদীর মুখোমুখি। উপকূলবর্তী ভূ-প্রকৃতি, মৌসুমি, গ্রামীণ এবং ঐতিহ্য বৈচিত্র্যের সাথে এটি তার সাধারণ উপকূলভূমি এবং গ্রামাঞ্চলে পর্যটনের সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করে। এই জেলার বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলি:

তমলুক (তাম্রলিপ্ত)

[সম্পাদনা]
তমলুকের বর্গভীমা মন্দির।

তামলুক, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলা সদর এবং এটি রুপনারায়ণ নদীর তীরে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। অন্যান্য স্থান হল:

দেবী বর্গভীমা মন্দিরটি ১১৫০ বৎসরের প্রাচীন কালি মন্দির এবং এটি ৫১ শক্তিপিঠের মধ্যে একটি। পুরাণের মতে, সতি / পার্বতির বাম পায়ের গোরলি এখানে পড়ে ছিল। যখন ভগবান শ্রী বিষ্ণু,ভগবান শিবকে শান্ত করার জন্য মাতা পার্বতির পবিত্র দেহকে বিভিন্ন টুকরো কেটেছিলেন।

তমলুকের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরটি অবশ্যই অবশ্যই দেখতে হবে। এখানে তাম্র (তাম্র) যুগের প্রত্নবস্তু রয়েছে এবং গ্রীক শিলালিপিগুলিতে একটি তম্রলিপ্ত সংরক্ষণ করেছে। এটি বাংলার ঐতিহাসিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে।

তমলুকে দেখার জন্য রক্ষীত বাটি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে সেই সময়ে বিপ্লবী দল অনুশীলন সমিতি এবং গুপ্ত সমিতির একটি গোপন কেন্দ্র হিসেবে এটি বিখ্যাত ছিল।

তমলুক শহরে আরও অনেক প্রাচীন মন্দির রয়েছে, যেমন- , জগন্নাথ মন্দির, হরি মন্দির, মহাপ্রভু মন্দির, রাম জী মন্দির, রাজবাড়ী মন্দির ইত্যাদি।

পাঁশকুড়া-এটি পূর্ব মেদিনীপুরের অন্যতম পৌরশহর। ব্রিটিশকাল থেকেই এই শহর ব্যবসা বাণিজ্যের স্থান।পাঁশকুড়া রেলস্টেশন যোগাযোগব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু।পাঁশকুড়া সারা পশ্চিমবঙ্গের তথা ভারতের ফুলচাষের অন্যতম স্থান।

মহিষাদল রাজবাড়ি
দিঘা সমুদ্র সৈকত
মন্দারমণি সাগরবেলা
হলদিয়া বন্দর

মহিষাদল

[সম্পাদনা]

মহিষাদল তমলুক শহরে থেকে মাত্র ১৬ কিমি দূরে অবস্থিত। এখানে মহিষাদল রাজবাড়ি এবং যাদুঘর পরিদর্শন করতে পারে পর্যটকেরা। গেঁওখালি মহিষাদল থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, এটি তিনটি নদীর সংযোগ (মোওনানা), যা একটি নিখুঁত পিকনিক স্পট।।

দিঘা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি সমুদ্র সৈকত শহর এবং বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে, পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্রতীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্র। দিঘা সৈকত জন্য বিখ্যাত। দীঘা পরিদর্শনে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক আসে।

দিঘার প্রকৃত নাম বীরকুল যা অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে অবিস্কৃত হয়। ভাইসরয় ওয়ারেন হেস্টিংস এর লেখা একটি চিঠিতে এটিকে 'প্রাচ্যের ব্রাইটন' বলে উল্লিখিত দেখা যায়। ১৯২৩ সালে জন ফ্রাঙ্ক স্মিথ নামে এক ব্রিটিশ ভ্রমণকারী এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দিঘায় বসবাস শুরু করেন। তার লেখালেখির ফলে দীঘা সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। ভারতের স্বাধীনতার পর তিনি পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায়কে উৎসাহ দেন এখানে পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করতে।[]

মন্দারমণি

[সম্পাদনা]

মন্দারমণি হল কালিন্দি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে বঙ্গোপসাগরের তীরে একটি ছোট সমুদ্র সৈকত। মন্দারমণি চওলখলা বাস স্টপ থেকে দীঘা-কাঁথি সড়ক থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি একটি মাছ ধরার ছোট আশ্রয় কেন্দ্র বা ছোট মৎস বন্দর এবং একটি দ্রুত উন্নয়নশীল পর্যটক স্থান।

হলদিয়া

[সম্পাদনা]

হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের একটি শহর এবং একটি পৌরসভা। এটি হলদি ও হুগলি নদীর মুখোমুখি কলকাতা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি কলকাতার জন্য একটি প্রধান বাণিজ্য বন্দর হিসাবে উন্নত করা হচ্ছে, বিশেষ করে বৃহৎ কার্গোগুলির জন্য।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
  2. "DISTRIBUTION OF THE 22 SCHEDULED LANGUAGES-INDIA/STATES/UNION TERRITORIES - 2011 CENSUS" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৬ 
  3. "সমুদ্র সুন্দরী দিঘায় কয়েকদিন"banglanews24.com। ২৪ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭