এডগার অ্যালান পো
এডগার অ্যালান পো | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৭ অক্টোবর ১৮৪৯ | (বয়স ৪০)
শিক্ষা | ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া, ইউনাইটেড স্টেটস মিলিটারি অ্যাকাডেমি |
মাতৃশিক্ষায়তন | ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া (অন্তর্হিত) ইউনাইটেড স্টেটস মিলিটারি অ্যাকাডেমি (অন্তর্হিত) |
পেশা |
|
দাম্পত্য সঙ্গী | ভার্জিনিয়া ক্লেম |
স্বাক্ষর | |
বিশ্বকোষীয় পর্যায়ে যেতে এই নিবন্ধে আরো বেশি অন্য নিবন্ধের সাথে সংযোগ করা প্রয়োজন। |
এডগার অ্যালান পো (জানুয়ারি ১৯, ১৮০৯ – অক্টোবর ৭, ১৮৪৯) একাধারে ছিলেন একজন মার্কিন লেখক, কবি, সম্পাদক এবং সাহিত্য সমালোচক। পো তার লেখা কবিতা, ছোট গল্প এবং বিশেষ করে মৃত্যুর সাথে সম্বন্ধযুক্ত ছোটোগল্প ও রহস্য গল্পগুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। পোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং পুরো আমেরিকান সাহিত্যের রোমান্টিসিজমের একজন কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি যে সময় ছোটোগল্প লিখতেন সেইসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছোটগল্প লেখকের সংখ্যা ছিল নগন্য। এছাড়াও তিনি গোয়েন্দা কথাসাহিত্যের উদ্ভাবক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। শুধু তাই নয় সেইসময়ে সাহিত্যের উদীয়মান ধারা বিজ্ঞানকল্পকাহিনীতে তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য।[১] পোই প্রথম মার্কিন লেখক যিনি শুধুমাত্র লেখার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন, ফলত তার জীবন ছিল আর্থিকভাবে অসচ্ছল।[২]
পো ১৮১০ সালে আমেরিকার বোস্টন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ডেভিড পো এবং মা এলিজাবেথ "এলিজা" পো[৩] উভয়েরই পেশা ছিল অভিনয় করা। ১৮১০ সালে তার বাবা পরিবার ত্যাগ করেন চলে যান। এর পরের বছরই তার মা মারা যান। পো অনাথ হয়ে পরেন। এরপর পোকে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডের জন এবং ফ্রান্সেস অ্যালান তাদের কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু তারা কখনই পোকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি যদিও ছোট্ট পোর সাথে তাদের সম্পর্ক ভালোই ছিল। পরবর্তীতে বড় হয়ে পো জুয়ায় আসক্ত হন এবং ফলশ্রুতিতে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। জুয়ার দেনা এবং পোয়ের পড়াশোনার ব্যয়কে কেন্দ্র করে জন এবং ফ্রান্সেস অ্যালানের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তিনি ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও অর্থের অভাবে এক বছর পর পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। ১৮২৭ সালে তিনি ছদ্মনামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এই সময়েই তিনি বেনামে তার সাহিত্যকর্ম প্রকাশ করতে শুরু করেন। একজন বোস্টোনিয়ান ছদ্মনামে প্রকাশ করেন তামেরলেন এবং অন্যান্য কবিতা (১৮২৭)। এটাই ছিলো তার প্রথম প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম। ১৮৩১ সালে যখন পো সামরিক অফিসার হতে ব্যর্থ হন তখন তার কবি ও লেখক হবার ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়।
পো এসময় গদ্য লেখায় মনোনিবেশ করেন। পরবর্তী কয়েক বছর একাধিক সাহিত্য পত্রিকা এবং সাময়িকীতে কাজ করেছেন। তিনি তার নিজস্ব সাহিত্য সমালোচনার স্টাইলের জন্য খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। কাজের জন্য তাকে বাল্টিমোর, ফিলাডেলফিয়া, নিউ ইয়র্ক সিটি সহ বেশ কয়েকটি শহরে থাকতে হয়। ১৮৩৬ সালে তিনি তার ১৩ বছর বয়সী ফুফাত বোন ভার্জিনিয়া ক্লেমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী ভার্জিনিয়া ক্লেম যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে ১৮৪৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৪৪ সালের জানুয়ারিতে পো তার "দ্যা রেভেন" কবিতাটি প্রকাশ করেন যা তাঁকে তাৎক্ষণিক সাফল্য এনে দেয়। এরপর তিনি তার নিজস্বপত্রিকা দ্যা পেন প্রকাশ করার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু দুখঃখজনকভাবে এটি প্রকাশের আগেই ১৯৪৯ সালে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। অনেকে এও মনে করে যে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন।[২]
পো এবং তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে শুধুমাত্র বিশ্ব সাহিত্যই নয় বরং মহাজাগতিক এবং ক্রিপ্টোগ্রাফির মতো বিশেষায়িত ক্ষেত্রগুলোও প্রভাবিত হয়েছিল। তিনি এবং তার কাজ নিয়ে অনেক নাটক, চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, গান লেখা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। তার স্মৃতিবিজড়িত কয়েকটি বাড়িকে জাদুঘর ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও মিস্ট্রি রাইটার্স অফ আমেরিকা প্রতিবছর একটি পুরস্কার প্রদান করে যা এডগার অ্যাওয়ার্ড নামে পরিচিত।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]এডগার পো ১৮০৯ সালে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস আঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ইংরেজ বংশোদ্ভূত অভিনেত্রী এলিজাবেথ আর্নল্ড হপকিন্স পো এবং বাবা অভিনেতা ডেভিড পো জুনিয়র। তিনি বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তার বড় ভাই উইলিয়াম হেনরি লিওনার্ড পো। এছাড়াও রোজালি পো নামে একটি ছোট বোন ছিল তার।[৪] তাদের দাদা ডেভিড পো সিনিয়র আনুমানিক ১৭৫০ সালের দিকে আয়ারল্যান্ডের কাভান জেলা থেকে আমেরিকায় আসেন।[৫] এডগার নামটি সম্ভবত উইলিয়াম শেকসপিয়র এর কিং লিয়ার নাটকের একটি চরিত্রের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে, যে নাটকটি পোর বাবা মা ১৮০৯ সালে অভিনয় করেছিলেন।[৬] তার বাবা ১৮১০ সালেই পরিবার ত্যাগ করেন[৭] এবং এক বছর পরে মা যক্ষ্মা হয়ে মারা যান। পোকে তখন ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডের একজন সফল ব্যবসায়ী জন অ্যালানের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। জন অ্যালান দাস, কাপড়, গম, তামাকসহ আরও বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ব্যবসা করতেন।[৮] অ্যালানরা তাকে "এডগার অ্যালান পো" নাম দেয়[৮] যদিও তারা কখনোই তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে দত্তক গ্রহণ করেনি।[৯]
জন অ্যালানের আক্রমণাত্মক অনুশাসনের কারণে পো বখে যেতে শুরু করেন।[৮] অ্যালান পরিবার ১৮১৫ সালে যুক্তরাজ্যে যায়। সঙ্গে ছিলেন পো। ১৮১৫ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত পো যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। পরবর্তীতে ১৮২০ সালে অ্যালান পরিবারের সাথে রিচমন্ডে ফিরে আসেন।[১০]
এডগার পো প্রাচীন ও আধুনিক ভাষা অধ্যয়নের জন্য ১৮২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।[১০][১১] বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মার্কিন প্রসিডেন্ট টমাস জেফারসনের আদর্শ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুয়া, বন্দুক, তামাক এবং অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকলেও এই নিষেধ প্রায়ই উপেক্ষা করা হতো।[৮] পো এসময় জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন। তাঁর দেনা বেড়েই চলছিল।[১০] এই নিয়ে জন অ্যালানের সাথে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। অর্থাভাবে পো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছেড়ে দেন। কিন্ত তিনি রিচমন্ডে ফিরে যাননি কারণ তখন তিনি জানতে পারেন যে তাঁর প্রিয়তমা সারাহ এলমিরা রয়স্টার অন্য একজনকে বিয়ে করেছে। তিনি ১৮২৭ সালের এপ্রিলে মাসে বোস্টনে যান এবং জীবিকার তাগিদে কেরানী ও সংবাদপত্রের লেখক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হন[৮], এই সময়েই তিনি হেনরি লে রেনেট ছদ্মনামটি ব্যবহার করতে শুরু করেন।[১২]
সামরিক বাহিনীতে
[সম্পাদনা]পো অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবার উদ্দেশ্যে ১৯২৭ সালে এডগার এ পেরি নাম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। এসময় তাঁর বয়স যদিও ছিলো ১৮ বছর, কিন্তু তিনি ২২ বছর বলে দাবি করেন।[১৩] প্রথমে তিনি বোস্টন হারবারের ফোর্ট ইন্ডিপেনডেন্সে ৫ ডলার বেতনে চাকরি করতেন। এই বছরই তার কাব্যগ্রন্থ তামেরলেন ও অন্যান্য কবিতা প্রকাশিত হয়। এই বইয়ের মাত্র ৫০টি মুদ্রিত কপি বের হয়েছিল। বইটি সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হয়।[৮] এরপর পো সাউথ ক্যারোলিনার ফোর্ট মোলট্রিতে বদলি হন এবং আর্টিলারির আর্টিফিশিয়ার পদে উন্নীত হন। ফলে তাঁর পারিশ্রমিক দ্বিগুণ হয়ে যায়।[৮] দুই বছর সামরিকবাহিনীতে কাজ করার পর পো সার্জেন্ট মেজর পদপ্রাপ্ত হন। এসময় তিনি তাঁর ঊর্ধ্বতন লেফটেনেন্ট হাওয়ার্ড কে তাঁর প্রকৃত নাম জানান। তিনি পোকে বলেন যে সে যদি অ্যালানের সাথে পুনর্মিলিত হয় শুধুমাত্র তখনই তাঁকে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেয়া হবে এবং তিনি সামরিক একাডেমীতে যোগ দিতে পারবেন। পো অ্যালানকে চিঠি লেখে। আ্যালান প্রথম কয়েকমাস পোর চিঠির উত্তর দেয়া দেখে বিরত থাকে। এরপর যখন তার স্ত্রী মারা যায় এবং তাকে সমাধিস্থকরণের পরদিন পো এসে উপস্থিত হন তখন পোর প্রতি তার রাগ কোমল হয় এবং তারা পুরোনো বিবাদ মিটিয়ে ফেলে।[১০]
ফলে পো ১৮২৯ সালে তাঁর সামরিক দায়িত্ব থেকে অব্যহতি পেয়ে বাল্টিমোরে তাঁর আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে যায়।[২] এদের মধ্যে ছিলেন ভার্জিনিয়া ক্লেম যিনি পরবর্তীতে পোর স্ত্রী হন।[১৪] ঐ বছরই পোর কবিতা খ্যাতনামা কাব্যসমালোচক জন নিল এর দ্বারা প্রশংসিত হয়।[১৫] এরপর পো তাঁর একটি কবিতা নিলকে উৎসর্গ করেন।[১৬]
পো ১৮৩০ সালে ওয়েস্টপয়েন্ট মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন।[১৭] এসময় পোর সঙ্গে অ্যালানের সম্পর্ক পুনরায় খারাপ হতে থাকে।[৮] পোও তাঁর দায়িত্বে অবহেলা করতে থাকেন এবং ১৯৩১ সালে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।[১৮]
এরপর তিনি নিউ ইয়র্কে যান এবং পোয়েমস নামে তাঁর তৃতীয় কাব্যসংকলন প্রকাশ করেন। এই বইটি প্রকাশে তাঁকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেন ওয়েস্টপয়েন্ট মিলিটারি একাডেমির ক্যাডেটরা।[৮] বইটিতে পোর পূর্বে প্রকাশিত কবিতা তামেরলেন এবং আল আরাফ ছাড়াও ছয়টি পূর্বে অপ্রকাশিত কবিতাও ছিল।[১৯] এই বইটি পো ইউ এস ক্যাডেট কোরকে উৎসর্গ করেন।[২০]
প্রকাশক জীবন
[সম্পাদনা]১৮৩১ সালের পহেলা আগস্ট পোর বড় ভাই হেনরি অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মারা যান।[২১] এরপর পো একজন লেখক হিসেবে জীবিকা অর্জনের চেষ্টা করেন। কিন্তু এটা তাঁর জন্য সহজ ছিলনা। সেটা ছিল এমন একটা সময় যখন হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র আমেরিকান লেখনীর মাধ্যমে জীবিকা অর্জন করতেন।[৮][২২] এছাড়াও সেসময় যুক্তরাষ্ট্রে কোনো অন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন না থাকায় সেখানকার প্রকাশকেরা ব্রিটিশ লেখকদের লেখা কোনো অনুমোদন ছাড়াই ছাপাতেন।[১০] ফলে তারা পারিশ্রমিক দিয়ে মার্কিন লেখকদের লেখা ছাপাতে আগ্রহী ছিলেন না।[২১]
এজন্য প্রথমে কিছুকাল কবিতা নিয়ে কাজ করলেও পো এবার গদ্যসাহিত্য লেখায় মনোযোগী হন।[২৩] তিনি ফিলাডেলফিয়া প্রকাশনীতে কিছু লেখা প্রকাশ করেন। এসময় তিনি তাঁর একমাত্র নাটক পলিশিয়ান লেখায় হাত দেন। ১৯৩৩ সালে ছোটোগল্প বোতলে পাওয়া পান্ডুলিপি এর জন্য তাঁকে পুরস্কারে ভূষিত করে বাল্টিমোর সানডে টাইমস।[২৪] এই ছোটোগল্পটি লিখে তিনি জন পি কেনেডি নামে একজন প্রভাবশালী লেখক ও রাজনীতিবিদের নজরে আসেন। কেনেডি পোকে সাদার্ন লিটারারি মেসেঞ্জার সাময়িকীর সম্পাদক টমাস হোয়াইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং পো ১৯৩৫ সাল নাগাদ সেখানে সহকারী সম্পাদক পদে কাজ করতে শুরু করে।[২৫] কিন্তু অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে হোয়াইট কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পোকে বরখাস্ত করে।[২৬] পো এরপর বাল্টিমোরে ফিরে যান। ১৯৩৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফুফাত বোন ভার্জিনিয়া ক্লেমের সাথে পো বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এসময় পোর বয়স ছিলো ২৬ আর ভার্জিনিয়ার ১৩।[২৭]
পোর তরফ থেকে ভাল আচরণের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরে হোয়াইট পোকে পুনর্বহাল করে এবং তিনি ভার্জিনিয়া ও ভার্জিনিয়ার মার সঙ্গে রিচমন্ডে ফিরে আসেন। তিনি ১৮৩৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মেসেঞ্জারে চাকরিরত ছিলেন। পো দাবি করেন যে এসময়ের মধ্যে ঐ পত্রিকার বিক্রি ৭০০ থেকে বেড়ে ৩,৫০০ হয়ে গিয়েছিল।[৪] তিনি তাঁর বেশ কয়েকটি কবিতা, বইয়ের পর্যালোচনা, সমালোচনা, ছোটোগল্প ঐ পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলেন।
পোয়ের উপন্যাস দ্য ন্যারেটিভ অফ আর্থার গর্ডন পাইম অফ ন্যান্টুকেট ১৮৩৮ সালে প্রকাশিত হয়।[১০] উপন্যাসটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। ১৮৩৯ সালের গ্রীষ্মে পো বার্টনের জেন্টলম্যানস ম্যাগাজিনের সহকারী সম্পাদক হন। তিনি এখানে অসংখ্য নিবন্ধ, গল্প এবং সমালোচনা প্রকাশ করেন এবং মেসেঞ্জারে থাকাকালীন নিজেকে যে একজন মর্মভেদী সমালোচক হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন তাঁর সেই খ্যাতি এসময় বহুগুণে বেড়ে যায়। ১৮৩৯ সালে তাঁর লেখা গ্রোটেস্ক এবং অ্যারাবিস্কের কাহিনী দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়, যদিও এর থেকে তিনি সামান্য অর্থই পেয়েছিলেন।[৮]
১৮৪০ সালের জুনে পো তাঁর নিজস্ব একটি জার্নাল শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করে একটি প্রস্তাবনা প্রকাশ করেন। তিনি পেনসিলভানিয়ার রাজধানী ফিলাডেলফিয়ার নামানুসারে এটিকে পেন নামকরণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে এর নাম স্টাইলাস বলে ঘোষণা করেন।[১০] জার্নালটি পোয়ের মৃত্যুর আগে কখনই পৃথিবীর আলো দেখেনি।
পো প্রায় এক বছর পর বার্টনের ম্যাগাজিনের কাজ ছেড়ে সেইসময়ের অন্যতম নামী মাসিক গ্রাহামস ম্যাগাজিনে লেখক এবং সহ-সম্পাদক হিসেবে চাকরি নেন।[২৫] গ্রাহামস ম্যাগাজিনের ১৮৪১ সালের শেষ সংখ্যায় ঐ বছরে ম্যাগাজিনটির অসাধারণ সাফল্য অর্জন উদযাপনের জন্য যে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়, পো ছিলেন সেখানে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে একজন। পো লেখেন,
"আমেরিকা বা ইউরোপের কোনও ম্যাগাজিনের সম্পাদকরা বোধহয় না আমাদের মতো বছর শেষ হবার আগেই তাদের কাজে তারা যে অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জন করেছে তা নিয়ে এতটা সন্তুষ্ট হতে পারে। আমাদের এ সাফল্য সত্যিই নজিরবিহীন, প্রায় অবিশ্বাস্যই বলতে হয় বিশেষত যখন এতটা সংক্ষিপ্ত সময়কালে এটা সম্ভব হয়েছে তা বিবেচনা করি।" [২৮]
এই সময়ে, পো যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জন টাইলারের প্রশাসনে একটি অবস্থান সুরক্ষিত করার চেষ্টা করেছিলেন। এজন্য তিনি নিজেকে হুইগ পার্টির সদস্য বলে দাবি করেন।[৫] পো তাঁর বন্ধু ফ্রেডরিক টমাসের[৮] মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট টাইলারের ছেলে রবার্টের[১০] সাথে পরিচিত হন। তিনি রবার্টের কাছে ফিলাডেলফিয়ার কাস্টম হাউসে একটি পদ পাওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। কিন্তু পো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠকে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন। পো বলেন তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু টমাস ধারণা করে যে পো মদ্যপ অবস্থায় ছিলো।[১০] ফলে পোকে একটি পদের জন্য প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও শেষপর্যন্ত তিনি কোনো পদ পাননি।[১০]
১৮৪২ সালের জানুয়ারি মাসে এক সন্ধ্যায় স্ত্রী ভার্জিনিয়ার মধ্যে যক্ষ্মার প্রথম লক্ষণ প্রকাশ পায়। ভার্জিনিয়া তখন পিয়ানো বাজাচ্ছিলেন।[১০] তিনি আংশিক সুস্থ হয়ে উঠলেও পো তাঁর অসুস্থতার চাপে আরও বেশি মদ্যপান করতে শুরু করলেন। তিনি গ্রাহামস ম্যাগাজিনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সরকারি চাকরির সন্ধান করছিলেন কিন্তু সফল হননি। এরপর তিনি নিউইয়র্কে যান এবং সেখানে ব্রডওয়ে জার্নালে এবং পরে মিরর এ কিছু সময়ের জন্য কাজ করেন।[২৯] সেখানে পো কবি হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লংফেলোর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সাহিত্যকর্মে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ আনেন। ফলে তিনি অন্য লেখকদের থেকে অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়েন।[২০] ১৮৪৫ সালের ২৯ জানুয়ারি তাঁর "দ্যা রাভেন" কবিতাটি ইভিনিং মিরর পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং পো প্রায় রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান।[৩০] পোকে এই কবিতা প্রকাশের জন্য মাত্র ৯ ডলার সম্মানী দেয়া হয়েছিল।[৩১] কবিতাটি একই সাথে দ্যা আমেরিকান রিভিউ-এও প্রকাশিত হয়।[৩২]
১৮৪৬ সালে পোর মালিকানাধীন ব্রডওয়ে জার্নাল উঠে যায়।[২৯] পো সেসময় নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের একটি বাংলোয় থাকতেন। ভার্জিনিয়া ১৮৪৭ সালের ৩০ জানুয়ারি ঐ বাংলোতেই মারা যান।[৩৩] বাংলোটি এখন এডগার অ্যালান পো কটেজ নামে পরিচিত। সেখানে থাকার সময়ে পো নিকটবর্তী সেন্ট জনস কলেজের জেসুইট মিশনারীদের সাথে বন্ধুত্ব করেন।[৩৪] পোয়ের জীবনীকার এবং সমালোচকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে পোয়ের সাহিত্যকর্ম তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর মা সহ জীবন থেকে চলে যাওয়া বিভিন্ন নারীর দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।[৩৫]
স্ত্রীর মৃত্যুর পরে পো ক্রমশ অস্থিরচিত্ত হয়ে পড়েন। এসময় রোড আইল্যান্ডের প্রোভেডেন্সে বসবাসকারী কবি সারা হেলেন হুইটম্যানের ও তাঁর বাগদান সম্পন্ন হয়। কিন্তু পো-র মদ্যপান এবং অসংলগ্ন আচরণের কারণে এই সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। এছাড়াও হুইটম্যানের মা এই সম্পর্ক ভাঙার ক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেন।[৩৬] পো এরপর রিচমন্ডে ফিরে আসেন এবং তাঁর শৈশব প্রণয়ীনী সারা এলমিরা রয়েস্টারের সঙ্গে পুনরায় সম্পর্কে জড়ান।[৯]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]১৮৪৯ সালের ৩ অক্টোবর পোকে বাল্টিমোরের রাস্তায় বিকারগ্রস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়।[২০] ওয়াশিংটন মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই ১৮৪৯ সালের ৭ অক্টোবর ভোর ৫ টায় তিনি মারা যান।[৮] পোকে যখন পাওয়া যায় তখন সে এতটাই অসংগলগ্ন অবস্থায় ছিলো যে তাঁর কাছ থেকে এটাও জানা সম্ভব হয়নি যে তিনি কীভাবে এরকম শোচনীয় অবস্থায় পতিত হলেন। এসময় পো যে পোশাক পরে ছিলেন সেগুলোও ছিলো অন্য কারোর। মৃত্যুর পূর্বের রাতে তিনি “রেনল্ডস” নামটি বারবার বলছিলেন। তিনি রেনল্ডস নামের কাকে বা কাদের ডাকছিলেন তা জানা যায়না। কেউ কেউ বলেন মৃত্যর পূর্বে পোর শেষ কথাছিলো “ঈশ্বর আমার সহায় হোন”।[৮]
পোর মৃত্যুসনদসহ হাসপাতালের নথিগুলো এখন আর পাওয়া যায় না।[৩৭] সেসময়ের পত্রিকাগুলো পোর মৃত্যুর কারণ হিসেবে মস্তিষ্কে রক্ত জমা হওয়া বা মস্তিষ্কের প্রদাহকে[৮] দায়ী করে। পোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো রহস্যই রয়ে গেছে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগ, সিফিলিস, কলেরা[৩৮], রাবিস[৩৯] এবং অতিরিক্ত মদ্যপানকে দায়ী করা হয়।[১০] ১৮৭২ সালের একটি সূত্রে পাওয়া যায় যে ভোট জালিয়াতি এবং এর থেকে সৃষ্ট সহিংসতার সাথে পোর মৃত্যুর কোন যোগ থাকতে পারে।[৪০]
গ্রিজওয়াল্ডের স্মৃতিচারণ
[সম্পাদনা]পোর মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই প্রতিদ্বন্দ্বী রুফাস উইলমোট গ্রিজওয়াল্ড বেনামে তার মৃত্যুসম্বন্ধীয় নিবন্ধ লিখতে শুরু করে। নিবন্ধে সে পোকে উন্মাদ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে।[৪১]
নিবন্ধটি পোকে সমাধিকরণের দিনে নিউ ইয়র্ক ট্রিবিউন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। গ্রিজওয়াল্ড নিবন্ধে নিজের ছদ্মনাম লিখেছিল লুডভিগ। নিবন্ধের শুরু হয়েছিল এভাবে,
এডগার অ্যালান পো মারা গেছেন। গত পরশু দিন বাল্টিমোরে। এই সংবাদ অনেককেই চমকে দেবে, তবে খুব কম লোকই শোকাহত হবে।[৪২]
লুডভিগ অনতিবিলম্বে নিজেকে প্রকাশ করে গ্রিজওয়াল্ড হিসেবে। ১৮৪২ সাল থেকেই সে পোর বিরোধীরা করে আসছিলো। সে এরপর "একজন লেখকের স্মৃতিচারণ" নামে একটি জীবনীপ্রবন্ধ লেখে।[৩০] এটা পোর ১৮৫০ সালের সাহিত্য সংগ্রহের সাথে প্রকাশিত হয়। ঐ প্রবন্ধে গ্রিজওয়াল্ড পোকে দুশ্চরিত্র, মদ্যপ, মাদকাসক্ত ও উন্মাদ বলে দাবি করে। সে এর সপক্ষে যুক্তি দেখানোর জন্য পোর একটি চিঠিকে প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে।[৩০] প্রকৃতপক্ষে তার সিংহভাগ দাবিই ছিলো অতিরঞ্জন ও মিথ্যা। যেমন এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে পো মাদকাসক্ত ছিলো।[২০] এমনকি গ্রিজওয়াল্ড তাদেরকেও ছেড়ে কথা বলেনি যারা পোকে ভালোভাবে জানত।[২৯] জন নিল গ্রিজওয়াল্ডের প্রবন্ধের বিরোধীরা করে একটি প্রবন্ধ লেখে।[২৩] এসব সত্ত্বেও গ্রিজওয়াল্ডের লেখা জীবনী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই কারণে যে এটাই ছিলো পোর একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবনী।[৮] তবে যে চিঠিগুলো গ্রিজওয়াল্ড তার দাবির সপক্ষে উপস্থাপন করেছিলো সেগুলো পরে জাল প্রমাণিত হয়।[৪৩]
সাহিত্যশৈলী ও মুলভাব
[সম্পাদনা]সাহিত্যরীতি
[সম্পাদনা]পোয়ের সর্বাধিক পরিচিত রচনাগুলো গথিক স্টাইলের।[৮] তার এই কাজগুলো জনসাধারণের রুচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে লেখা। তার লেখায় মৃত্যুর কারণ, এর লক্ষণ, পচন, বিকার, পরিণতি, জীবন্ত কবর দেয়া, বিলাপ করা এবং পুনর্জন্ম এই বিষয়গুলোই ফিরে ফিরে এসেছে।[৪৪] তার লেখাগুলোকে অতীন্দ্রিয়বাদের প্রতিক্রিয়া ডার্ক রোমান্টিসিজমের[৪৫] উদাহরণ হিসেবে দেখানো হলেও এরূপ সংজ্ঞায়িত করাতে পোর ঘোরতর আপত্তি ছিল।[৩৫] পো অতীন্দ্রিয়বাদ চর্চাকারীদের উপহাস করতেন।[৪৬][৪৬][৪৭] তবে তিনি তার বন্ধু টমাস হোলি শিভার্সকে লেখা একটি চিঠিতে বলেন যে তিনি শুধু অতীন্দ্রিয়বাদ চর্চার নামে যারা ভন্ডামি করে তাদেরকে ঘৃণা করেন।[১০]
হরর বা অতঙ্কবাদী ঘরানার লেখা ছাড়াও পো লিখেছেন প্রহসন ও ব্যঙ্গকৌতুকধর্মী রচনা। কৌতুকপ্রদ করার জন্য তিনি লোখায় হাস্যকর বিদ্রুপ ব্যবহার করতেন।[৪৬] পোর প্রথম প্রকাশিত গল্প হলো মেটজেঙ্গারস্টেইন যেটি ছিল একটি হরর স্টোরি।[১০] পো এছাড়াও লিখেছেন বিজ্ঞান কল্পকাহিনী যেখানে বাষ্পচালিত বেলুনের মতো উদীয়মান প্রযুক্তির কথাও ছিল।[৪৮]
পোর তার বেশিরভাগ লেখাই জনমানসের রুচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে লিখেছেন।[২১] ফলে শেষতক তিনি তার বিজ্ঞানকল্পকাহিনীগুলোর জন্য সিউডোসায়েন্স থেকে জনপ্রিয় উপাদান সংগ্রহ করেন।[৪৯]
সাহিত্য তত্ত্ব
[সম্পাদনা]পোর সাহিত্যকর্মে তার নিজস্ব সাহিত্যত্ত্বের প্রতিফলন ঘটেছে। এই সাহিত্যতত্ত্বই তিনি তার প্রবন্ধ “দ্যা পোয়েটিক প্রিন্সিপাল” এ তুলে ধরেছিলেন।[১৭] তিনি লেখায় রূপক[৫০] ব্যবহার করতে কিংবা নীতিবাক্য[৫১] যোগ করতে অপছন্দ করতেন। তিনি মনে করতেন লেখার মর্মকথা এর ভেতরেই প্রকাশ পাবে। তিনি বলতেন যে সাহিত্যে কি বলা হয়েছে তা জলের মতো পরিষ্কার সেই সাহিত্য শিল্পগুণ বিচারে ব্যর্থ প্রতিপন্ন হয়।[৫২] তিনি বিশ্বাস করতেন মানসম্পন্ন সাহিত্য হবে সংক্ষিপ্ত।[১৭] তিনি আরও বিশ্বাস করতেন একজন লেখকের সক্ষমতা থাকবে তার লেখার সবরকম অনুভূতি এবং অভিপ্রায় নিরূপন করার।[৫৩]
পো দ্যা রাভেনের লেখনী পদ্ধতি নিয়ে রচনা দর্শন নামে এমনি প্রবন্ধে আলোচনা করেন। তিনি দাবি করেন যে তিনি তার উল্লিখিত এই পদ্ধতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করেন। পরবর্তীতে তার এই দাবি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কবি টি এস এলিয়ট বলেন, “পো কীভাবে এই পদ্ধতি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে অনুসরণ করেছিলেন তা বোঝা আমাদের পক্ষে কষ্টকর যদিনা আমার চিন্তা করি তিনি কীভাবে তার কবিতা যথাযথভাবে নিরূপন করেছেন। তার সাহিত্যের কাজগুলো নিজস্ব কর্মপন্থার ফলাফল, কোনো একটিপদ্ধতির নয়।”[৩০] জীবনীকার জোসেফ উড ক্রুচ ঐ প্রবন্ধটিকে পোর শিল্পকে যুক্তি দিয়ে বর্ণনা করার প্রয়াস হিসেবে মনে করেন।[৫৪]
উত্তরকাল
[সম্পাদনা]প্রভাব
[সম্পাদনা]জীবদ্দশায় পো সাহিত্যসমালোচক হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। অপর একজন সাহিত্য সমালোচক জেমস রাসেল লোয়েল পোকে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বিচক্ষণ, দার্শনিক ও নির্ভীক সাহিত্যসমালোচকের আখ্যা দেন। পোর তিক্ত সাহিত্যসমালোচনার কারণে তাঁকে টোমাহক ম্যান বলে উল্লেখ করা হতো।[৫৫] পোর সমালোচনার জন্য পছন্দের শিকার ছিলেন বোস্টনের বিখ্যাত কবি হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লংফেলো। লংফেলোকে তার বন্ধুরা পোর সমালোচনা থেকে রক্ষা করার চেষ্টাকরতেন সবসময় এবং এটাকে লংফেলো যুদ্ধ বলে আখ্যা দেন। পো লংফেলোর কবিতাগুলোকে ধর্মীয় উপদেশদাতা, মৌলিকত্বহীন ও চুরি করা বলে তীব্র সমালোচনা করতেন।[৫৬] পো সঠিকভাবেই ভবিষ্যদ্বাণী করতে পেরেছিলেন যে লংফেলোর জনপ্রিয়তা আর দীর্ঘকাল স্থায়ী হবেনা।[৫৬]
পোই ছিলেন ১৯ শতকে যুক্তরাষ্ট্রের সেইসব লেখকদের প্রথম যারা গল্পলেখক হিসেবে ইয়োরোপে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।[৮] ফ্রান্সে লেখক শার্ল বোদেলেয়ার পোর লেখাগুলো ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করেন। এই অনুবাদগুলো পোকে ফ্রান্সে এবং ইয়োরোপে পরিচিত করে তুলেছিল।[৫১]
পোর কাল্পনিক গোয়েন্দা অগাস্ত দুঁপেকে নিয়ে লেখা গল্পগুলোই ভবিষৎতের গোয়েন্দা উপন্যাসগুলোর জন্য বুনিয়াদ তৈরি করে দেয়। শার্লক হোমসের লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল বলেন, “পোর প্রতিটি গোয়েন্দা গল্পই বৃক্ষের মূলস্বরূপ যেখান থেকে পরবর্তীতে পুরো গোয়েন্দা কথাসাহিত্য বেড়ে উঠেছে। কোথায় ছিলো গোয়েন্দাকাহিনী পো আসার আগে ? “[৫৭] মিস্ট্রি রাইটার্সআমেরিকা পোর নামানুসারে এডগার অ্যালান পো অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। এই সম্মাননা এডগারস নামেই বেশি পরিচিত।[৪৬] পোর বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ফরাসি লেখক জুল ভার্নকেও অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি পোর লেখা নানটুকেটের আর্থার গর্ডন পাইমের আখ্যানের সিক্যুয়েল লিখেছিলেন। জুল ভার্নের লেখা সিক্যুয়েলটির নাম অ্যান অ্যানটার্কটিক মিস্ট্রি।[৫৭] এই উপন্যসটি বরফাবৃত ময়দানের স্ফিংস নামেও পরিচিত। ইংরেজ সায়েন্স ফিকশন লেখক এইচ জি ওয়েলস বলেন, “এক শতাব্দী আগে দক্ষিণ মেরু সম্পর্কে খুব বিচক্ষণ মানুষের চিন্তা কি হতে পারত সেটাই পাইম আমাদেরকে বলে।”[৫৭] ২০১৩ সালে গার্ডিয়ান পত্রিকা পাইম উপন্যাসটিকে সর্বকালের সেরা উপন্যাসগুলোর একটি বলে তালিকাভুক্ত করে এবং তুলে ধরে যে এই উপন্যসটির প্রভাব কীভাবে পরবর্তী প্রজন্মের লেখক ডয়েল, হেনরি জেমস, বি টাভের্ন ও ডেভিড মোরেল এর লেখায় লক্ষ্যণীয়।[৫৮]
হরর গল্পের লেখক এইচ পি লাভক্রাফট পোর একই ঘরানার লোখাগুলো থেকে এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিল যে তার একটি দীর্ঘপ্রবন্ধের একটি গোটা অংশই ছিল পোর এই ঘরানার লেখা নিয়ে। লাভক্রাফট তার একটি চিঠিতে লেখে, “গল্প লেখায় এডগার অ্যালান পো আমার আদর্শ।”[৫৯] বিখ্যাত ইংরেজ চলচ্চিত্র পরিচালক আলফ্রেড হিচকক একবার বলেছিলেন যে তিনি এডগার অ্যালান পোর লেখা গল্প পড়তে ভালোবাসতেন বলেই পরবর্তীতে সাসপেন্স ঘরানার সিনেমা তৈরিতে হাত দেন।[৬০]
অনেক বিখ্যাত লেখকের লেখার স্টাইলের যেমন অনুকরণকারী দেখা যায় তেমনি পোর লেখার স্টাইলেরও অনেক অনুকরণকারী আছে।[৮] এই অনুকরণকারীদের একদল দাবি করে যে তারা পোর মৃত আত্মার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এই কবিতাগুলো পেয়েছে। এরকম একজন হলেন মার্কিন কবি লিজি ডোটেন যিনি ১৮৬৩ সালে অন্তর্জীবনের কবিতা নামে একটি কবিতারসংকলন প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন পোর আত্মা তাকে এই কবিতাগুলো দিয়েছে। এই কবিতাগুলো আসলে পোর কবিতা দ্যা বেলস এরই প্রতিলিপি।[৬১]
পোর বিরুদ্ধে সমালোচনাও কিন্তু কম হয়নি। এর কিছুটা পোর ব্যক্তিগত চরিত্রের ত্রুটি এবং সেই নিমিত্তে তার দুর্নামের দ্বারা প্রভাবিত।[৮] আইরিশ কবি উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস কখনো কখনো পোর কাজের সমালোচনা করেছেন।[৮] ইয়েটস একবার পোকে অমার্জিতও বলেছিলেন। অতীন্দ্রিয়বাদী রালফ ওয়ালডো এমারসন পোর দ্যা রাভেন কবিতার সমালোচনা করে বলেন যে তিনি এর মধ্যে কোনো সারবস্তুই দেখেননা।[৩২] পোকে তিনি ব্যঙ্গ করে দ্যা জিঙ্গেল ম্যান বলে ডাকেন।[৬২] ব্রিটিশ লেখক অ্যালডাস হাক্সলি পোর কবিতায় কাব্যভাবের অতিরঞ্জনের সমালোচনা করেন এবং অমার্জিত বলে আভিহিত করেন।[৫২]
মনে করা হয় যে পোর প্রথম বই তামেরলেন ও অন্যান্য কবিতা বইটির মাত্র ১২টি কপি এখনো টিকে আছে। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে নিউ ইয়র্ক সিটিতে ক্রিস্টিস অকশনিয়ারস এর নিলামে এগুলোর একটি কপি রেকর্ড মূল্য ৬৬২৫০০ ডলারে বিক্রি হয়।[৬৩]
পদার্থবিদ্যা ও মহাজগত
[সম্পাদনা]পো তার ১৮৪৮ সালে লেখা “ইউরেকা : একটি গদ্য কবিতা” প্রবন্ধে বিগ ব্যাং তত্ত্ব প্রমাণিত হবার প্রায় ৮০ বছর আগে অনুরূপ একটি তত্ত্বের উল্লেখ করেন।[৬৪][৬৫] শুধু তাই নয় এটি ছিল ওলবারস প্যারাডক্স এর সাম্ভব্য সমাধান।[৬৬][৬৭] পো ইউরেকায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ বর্জন করে শুধুমাত্র নিজস্ব অনুমানের ওপর ভিত্তি করে প্রবন্ধটি লেখেন।[৮] ফলে তার লেখাটি শুধুমাত্রই শিল্প, কোনোভাবেই বিজ্ঞান নয়।[৮] তারপরেও পো জোর দিয়ে বলেন যে এটাই সত্য[৩২] এবং তিনি মনে করতেন ইউরেকা তার সাহিত্যিকজীবনের সেরা কাজ।[৮] প্রকৃতপক্ষে ইউরেকা প্রবন্ধটি বিজ্ঞানগত দিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ। এমনকি পো সেখানে পৃথিবীর ঘনত্ব ও ঘূর্ণনগতি নিয়ে নিউটনের প্রমাণিত নীতিকেও উপেক্ষা করেন।[২৯]
সংকেতলিপি
[সম্পাদনা]পোর সংকেতলিপি নিয়েও আগ্রহ ছিলো। তিনি ফিলাডালফিয়ার আলেক্সান্ডার সাপ্তাহিকে দাবি করেন যে তিনি সংকেতলিপির মর্মোদ্ধার করতে পারেন এবং অন্যদেরকে সংকেতবার্তা পাঠানোর জন্য আহ্বান জানান যেগুলো তিনি সমাধান করে দেবেন।[৩২] ১৮৪১ সালের জুলাই মাসে পো “এ ফিউ ওয়ার্ডস অব সিক্রেট রাইটিং “ নামে একটি প্রবন্ধ গ্রাহামস ম্যাগাজিনে প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে মানুষের উৎসাহকে পুঁজি করে তিনি “দ্যা গোল্ড বাগ” নামে সংকেতলিপি নিয়ে একটি গল্প লেখেন।[৬৮] পো এতে সফলতা পেলেও প্রকৃতপক্ষে সংকেতলিপি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান ছিলনা তার। পোর যেটা ছিল সেটা হলো ভালো বিশ্লেষণ ক্ষমতা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে প্রতিস্থাপনের মধ্যমে যে সংকেতলিপির পাঠোদ্ধার সম্ভব সেই তথ্যও সাধারণ পাঠকের অজ্ঞাত। ফলে পো খুব সহজেই পাঠকদের মধ্যে সংকেতলিপি সম্পর্কে সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন এবং পত্রিকা ও মাসিকপত্রগুলোতে সংকেতলিপি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।[৬৯]
১৮৪১ সালে পো ডাব্লিউ বি টাইলার ছদ্মনামে দুটি সংকেত প্রকাশ করেন। সংকেতদুটি যথাক্রম ১৯৯২ এবং ২০০০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত সমাধান করা সম্ভব হয়নি। এদের একটি ছিলো জোসেফ এডিসনের নাটক কেটো থেকে নেয়া একটি উক্তি। অপরটি সম্ভবত হেস্টার থারলের একটি কবিতার ওপর ভিত্তি করে।[৭০][৭১]
পো তার সময়ের অন্য যে কারও তুলনায় সংকেতলিপি নিয়ে অধিক আগ্রহী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বপ্রধান সংকেতলিপি বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম ফ্রিডম্যান পোর থেকেই আনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ছেলেবেলায় পোর লেখা দ্যা গোল্ডবাগ গল্পটি পড়ে ফ্রিডম্যানের সংকেতলিপির ব্যাপারে জানার উৎসাহ জন্মায়। ফ্রিডম্যান পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের পার্পল কোডের পাঠোদ্ধার করেছিলেন।[৬৮]
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
[সম্পাদনা]একটি চরিত্র হিসেবে
[সম্পাদনা]পোকে ঐতিহাসিকভাবে খেপাটে প্রতিভা কিংবা যন্ত্রণাগ্রস্থ শিল্পীর একটি সাহিত্যিক চরিত্র হিসেবে চিত্রিত করা হয়ে থাকে।[৩৫] এরকম অনেক চিত্রণেই পোর সৃষ্ট চরিত্রগুলোর সঙ্গে তাঁকে এক করে ফেলা হয়।[৭২] অনেকক্ষেত্রেই পোর এই মনগড়া রূপায়ণে তাঁকে রহস্যভেদী ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে। আমরা এর উদাহরণ দেখতে পাই ম্যাথিউ পার্লের লেখা দ্যা পো শ্যাডো উপন্যাসে।[৭৩]
সংরক্ষিত বাসস্থান, জাদুঘর
[সম্পাদনা]পো বাল্যকালে যে বাড়িগুলোতে ছিলেন সেগুলোর একটিও এখন টিকে নেই। রিচমন্ডের বাড়িটি এখনো আছে যেটা ওল্ডস্টোনহাউস নামে পরিচিত। বাড়িটি এখন এডগার অ্যালান পো মিউজিয়াম, যদিও পো কখনো সেখানে থাকেননি। সেখানে সংগ্রহশালায় পো অ্যালান পরিবারের সাথে থাকার সময় যেসব জিনিস ব্যবহার করছিলেন সেগুলো আছে, এছাড়াও আছে পোর প্রথমদিকের প্রকাশিত দুষ্প্রাপ্য কিছু সাহিত্যকর্ম।[৭৪] ২৩ বছর বয়সী পো তার হবু স্ত্রী ভার্জিনিয়া ও দাদীর সাথে দেখা করার সময় ১৩ ওয়েস্ট রেঞ্জের ছাত্রাবাস কক্ষটিতে ছিলেন বলে মনে করা হয়। এটাও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এবং এখন সেখানে এডগার পো সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পো তার স্ত্রী ভার্জিনিয়া ও শাশুড়ি মারিয়া ক্লেমের সাথে ফিলাডেলফিয়াতে যে ভাড়াবাড়িগুলোতে ছিলেন সেগুলোর শেষেরটি এখনও টিকে আছে। পো ১৮৪৩ থেকে ১৮৪৪ সাল অব্দি যে স্প্রিং গার্ডেন হোম এ ছিলেন সেটি এখন ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস কর্তৃক এডগার অ্যালেন পো হিস্টোরিক সাইট নামে সংরক্ষিত। পোর শেষ বাড়িটি যেটা ব্রঙ্কসে অবস্থিত সেটাকে এডগার অ্যালান পো কটেজ নামে সংরক্ষণ করা হয়েছে।[৭৫]
বোস্টনের বয়লস্টন স্ট্রিটে পোর জন্মস্থান থেকে সামান্য দুরত্বে তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি ফলক স্খাপন করা হয়েছে।[৭৬][৭৭][৭৮][৭৯] পো ৬২কার্ভার স্ট্রিটের যে বাড়িটিতে জন্মেছিলেন সেটি আর এখন নেই। ওই রাস্তাটির নামও পরিবর্তন করে চার্লস স্ট্রিট সাউথ নামকরণ করা হয়েছে।[৭৯][৮০] ব্রডওয়ে, ফায়েট ও কার্ভার স্ট্রিটের মিলনচত্বরটি একসময় পোর নামে নামকরণ করা হয়েছিলো।[৮১] কিন্তু রাস্তাগুলোর পুনর্বিন্যসের ফলে চত্বরটি আর এখন নেই। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে চার্লস স্ট্রিট যেখানে বয়লস্টন স্ট্রিটের সাথে মিলিত হয়েছে সেই চত্বরটিকে এডগার অ্যালান পো চত্বর নামকরণ করা হয়। এই চত্বরটি পো যেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেখান থেকে দুই ব্লক দুরত্বে অবস্থিত।[৮২]
২০১৪ সালের মার্চে পোর বোস্টনে ফিরে আসা নামক ভাস্কর্যটি নির্মাণের জন্য অর্থসংগ্রহ কর্মসূচি শেষ হয়। অন্য অনেক নকশার মধ্যে ভাস্কর স্টেফানি রকনাকের ভাস্কর্য নকশাটি জয়ী হয়। এই ভাস্কর্যটিতে দেখা যায় একজন পূর্ণায়ত পো বাতাসের বিপরীতে হেঁটে আসছেন, পাশে তারই লেখা দ্যা রাভেন কবিতার দাঁড়কাকটি তাকে অনুসরণ করে আসছে, তার সুটকেসের পাল্লা খুলেপড়েছে, সেখান থেকে তারই সাহিত্যকর্মের পান্ডুলিপির পৃষ্ঠাগুলো একের পর এক পাশের সাইডওয়াকে ভূপাতিত হচ্ছে।[৮৩][৮৩] ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর এই ভাস্কর্যটি উন্মোচন করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পোয়েট লরিয়েট রবার্ট পিনস্কি।[৮৪]
পোর স্মৃতি বিজড়িত আরেকটি বাড়ির দেখা মেলে আপার ওয়েস্ট সাইডে। পো প্রথমবার যেবার নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন সেবার ঐ বাড়িতে থেকেছেন। একটি স্মৃতিফলকের তথ্য অনুযায়ী পো এই বাড়িটিতে বসেই দ্যা রাভেন লিখেছিলেন। সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটনের সুলিভানস আইল্যান্ড যা পোর দ্যা গোল্ড বাগ গল্পের পটভূমি এবং যেখানকার মোল্ট্রি দুর্গে পো সেনাবাহিনীতে চাকরিরত অবস্থায় ছিলেন সেই সুলিভান আইসল্যান্ডে পোর সরাইখানা নামে একটি রেঁস্তোরা আছে। এছাড়াও বাল্টিমোরের ফেল’স পয়েন্টে যে পানশালায় পো মৃত্যুর আগে শেষবার সুরাপান করেছিলেন বলে কথিত আছে সেই পানশালাটি এখনো সেখানেই আছে। সেখানকার জনশ্রুতি এই যে এডগার নামের একটি ভূত ওপরের কক্ষগুলোতে এখনো ঘুরে বেড়ায় l[৮৫]
আলোকচিত্র
[সম্পাদনা]পোর যে ডাগেরোটিপগুলো (গোড়ার দিকে যে পদ্ধতিতে ফটোগ্রাফ তোলা হতো) পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে সাহিত্য সম্বন্ধীয় ঐতিহাসিকগণ এখনো দারুণ উৎসাহী।[৮৬] এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য :
- “আল্টিমা থুলে” (“সুদূর ভবিষ্যতের আবিষ্কার”), যেটির নামকরণ করা হয়েছিল সদ্য আবিস্কৃত ফটোগ্রাফিক পদ্ধতির সম্মানার্থে। ছবিটি ১৮৪৮ সালে রোড আইল্যান্ডের প্রোভেডেন্স এ তোলা হয়েছিল। সাম্ভব্য আলোকচিত্রী এডউইন এইচ ম্যানচেস্টার।
- “অ্যানি”, যে ছবিটি পো তার বান্ধবী অ্যানি এল রিচমন্ডকে দিয়েছিলেন। ছবিটি সম্ভবত ১৮৪৯ সালের জুনে ম্যাসাচুসেটসের লোয়েল আইল্যান্ডে তোলা হয়েছিল। আলোকচিত্রীর নাম জানা যায়নি।
পো টোস্টার
[সম্পাদনা]১৯৪৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে কোনো এক ভক্ত একটি কনিয়াক মদের বোতল ও তিনটি গোলাপ পোর সমাধিসৌধে রেখে যেতেন। এই অজ্ঞাতনামা ভক্তকে পো টোস্টার বলা হয়। পোকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয় সেই বাল্টিমোরের ওয়েস্টমিনিস্টার গীর্জার একজন ঐতিহাসিক স্যাম পোরপোরা ২০০৭ সালের আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে দাবি করেন যে তিনি ১৯৪৯ সাল থেকে এই শ্রদ্ধার্ঘ দিয়ে আসছেন যাতে গীর্জাটির সম্মান বৃদ্ধি পায় এবং একই সঙ্গে অধিক তহবিল সংগ্রহ করা সম্ভবপর হয়। তার এই দাবি সত্যি বলে প্রমাণিত হয়নি।[৮৭] তার গণমাধ্যমকে দেয়া তথ্যের মধ্যেও ভুল ছিল।[৮৮] পো টোস্টার শেষবার পোর সমাধিতে যান ২০০৯ সালের ১৯ জানুয়ারিতে। ঐদিন ছিল পোর মৃত্যুর দ্বিশতবার্ষিকী।[৮৯]
নির্বাচিত কাজের তালিকা
[সম্পাদনা]ছোট গল্প
[সম্পাদনা]- "কালো বিড়াল"
- "দ্য ক্যাস্ক অফ অ্যামোনটিল্যাডো"
- "ম্যালাস্ট্রোর্মে অবতরণ"
- "এম ভালদেমারের মামলার তথ্যসমূহ"
- "হাউস অফ আশারের পতন"
- "দ্য গোল্ড-বাগ"
- "হপ-ফ্রগ"
- "দ্যা ইমপ অব দ্যা পারভার্স"
- "লিজিয়া"
- "লাল মৃত্যুর মুখোশ"
- "মোরেলা"
- "দ্যা মার্ডার ইন দ্যা রু মর্গ"
- "শয়তানকে কখনো মাথায় তুলতে নেই"
- "দ্যা ওভাল পোর্ট্রেট"
- "দ্যা পিট অ্যান্ড দ্যা পেন্ডুলাম"
- "অকাল সমাধি"
- "দ্যা পারলোইনড লেটার"
- "দ্যা সিস্টেম অব ডক্টর টার অ্যান্ড প্রফেসর ফেদার"
- "দ্যা টেল দ্যা হার্ট"
- "লস অব ব্রেথ"
কবিতা
[সম্পাদনা]- "আল আরাফ"
- "আনাবেল লি"
- "বেলস"
- "সমুদ্রের শহর"
- "বিজয়ী কীট"
- "স্বপ্নের মধ্যে স্বপ্ন"
- "এল্ডোরাডো"
- "ইউলালি"
- "ভুতুড়ে প্রাসাদ"
- "টু হেলেন"
- "লেনোর"
- "তামেরলেন"
- "দাঁড়কাক"
- "উলালিউম"
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ
[সম্পাদনা]- পলিশিয়ান (1835) - পোর লেখা একমাত্র নাটক
- দ্য ন্যারেটিভ অফ আর্থার গর্ডন পিম অফ ন্যান্টুকেট (1838) - পোয়ের একমাত্র সম্পূর্ণ উপন্যাস
- "দ্য বেলুন-হোয়াক্স" (1844) - সত্য গল্প হিসাবে মুদ্রিত একটি বানানো গল্প
- "রচনা দর্শন" (1846) - প্রবন্ধ
- ইউরেকা: একটি গদ্য কবিতা (1848) - প্রবন্ধ
- "দ্য পোয়েটিক প্রিন্সিপল" (1848) - প্রবন্ধ
- "দ্য লাইট-হাউস" (1849) - পোয়ের শেষ, অসম্পূর্ণ কাজ
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ James, Edward; Mendlesohn, Farah (২০০৩)। The Cambridge companion to science fiction। Library Genesis। Cambridge ; New York : Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-81626-7।
- ↑ ক খ গ Meyers, Jeffrey (1992). Edgar Allan Poe: His Life and Legacy (Paperback ed.). New York: Cooper Square Press. ISBN 978-0-8154-1038-6.।
- ↑ Semtner, Christopher P. (2012). Edgar Allan Poe's Richmond : the Raven in the River City. Charleston [SC]: History Press. p. 15. ISBN 978-1-60949-607-4. OCLC 779472206।
- ↑ ক খ Allen, Hervey (1927). "Introduction". The Works of Edgar Allan Poe. New York: P.F. Collier & Son. OCLC 1050810755
- ↑ ক খ "Edgar Allan Poe Society of Baltimore - Papers - Edgar Allan Poe: A Critical Biography (1941) - Title and Contents"। www.eapoe.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Nelson, Randy F. (১৯৮১)। The almanac of American letters। Internet Archive। Los Altos, Calif. : W. Kaufmann। আইএসবিএন 978-0-86576-008-0।
- ↑ "Edgar Allan Poe"। web.archive.org। ২০০৭-০৫-১৮। Archived from the original on ২০০৭-০৫-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ Meyers, Jeffrey (২০০০)। Edgar Allan Poe : his life and legacy (1st Cooper Square Press ed সংস্করণ)। New York: Cooper Square Press। আইএসবিএন 0-8154-1038-7। ওসিএলসি 44413785।
- ↑ ক খ "Edgar Allan Poe Society of Baltimore - Papers - Edgar Allan Poe: A Critical Biography (1941) - Title and Contents"। www.eapoe.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ Silverman, Kenneth (১৯৯২)। Edgar A. Poe : mournful and never-ending remembrance। Internet Archive। New York, NY : HarperPerennial। আইএসবিএন 978-0-06-092331-0।
- ↑ University of Virginia. A Catalogue of the Officers and Students of the University of Virginia. Second Session, Commencing February 1st, 1826. Charlottesville, VA: Chronicle Steam Book Printing House, 1880, p. 10
- ↑ "Kenneth Silverman"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৩-২৩।
- ↑ Cornelius, Kay (2002). "Biography of Edgar Allan Poe". In Harold Bloom (ed.). Bloom's BioCritiques: Edgar Allan Poe. Philadelphia, PA: Chelsea House Publishers. ISBN 978-0-7910-6173-2.।
- ↑ Edgar Allan Poe। Harold Bloom। Philadelphia: Chelsea House Publishers। ২০০২। আইএসবিএন 0-7910-6173-6। ওসিএলসি 48176842।
- ↑ Sears, Donald A. (1978). John Neal. Boston: Twayne Publishers. ISBN 978-0-8057-7230-2.।
- ↑ Sova, Dawn B. (2001). Edgar Allan Poe A to Z: The Essential Reference to His Life and Work (Paperback ed.). New York: Checkmark Books. ISBN 978-0-8160-4161-9.।
- ↑ ক খ গ Krutch, Joseph Wood (১৯২৬)। Edgar Allan Poe : a study in genius। Internet Archive। New York : A. A. Knopf।
- ↑ Hecker, William J. (2005), Private Perry and Mister Poe: The West Point Poems, Baton Rouge, LA: Louisiana State University Press, ISBN 978-0-8071-3054-4।
- ↑ Poe, Edgar Allan (২০০৫)। Private Perry and Mister Poe : the West Point poems, 1831। William F. Hecker (Facsimile ed সংস্করণ)। Baton Rouge: Louisiana State University Press। আইএসবিএন 0-8071-3054-0। ওসিএলসি 56733475।
- ↑ ক খ গ ঘ Quinn, Arthur Hobson (১৯৯৮)। Edgar Allan Poe : a critical biography (Johns Hopkins paperbacks ed সংস্করণ)। Baltimore: Johns Hopkins University Press। আইএসবিএন 0-8018-5730-9। ওসিএলসি 37300554।
- ↑ ক খ গ Kennedy, J. Gerald (২০০১)। A historical guide to Edgar Allan Poe। Library Genesis। Oxford ; New York : Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-512149-0।
- ↑ Quinn, Arthur Hobson (1998). Edgar Allan Poe: A Critical Biography. Baltimore: Johns Hopkins University Press. ISBN 978-0-8018-5730-0. (Originally published in 1941 by New York: Appleton-Century-Crofts, Inc.)।
- ↑ ক খ Lease, Benjamin (১৯৭২)। That wild fellow John Neal and the American literary revolution.। Chicago,: University of Chicago Press। আইএসবিএন 0-226-46969-7। ওসিএলসি 758292।
- ↑ Sova, Dawn B. (2001). Edgar Allan Poe A to Z: The Essential Reference to His Life and Work
- ↑ ক খ Sova, Dawn B. (2001). Edgar Allan Poe A to Z: The Essential Reference to His Life and Work
- ↑ Meyers, Jeffrey (1992). Edgar Allan Poe: His Life and Legacy (Paperback ed.). New York: Cooper Square Press. ISBN 978-0-8154-1038-6
- ↑ https://archive.org/details/edgarpoe00kenn
- ↑ Graham, George; Embury, E.; Peterson, Charles; Stephens, A.; Poe, Edgar (December 1841). "The Closing Year"
- ↑ ক খ গ ঘ Sova, Dawn B. (২০০১)। Edgar Allan Poe, A to Z : the essential reference to his life and work। New York: Facts on File। আইএসবিএন 0-8160-3850-3। ওসিএলসি 44885229।
- ↑ ক খ গ ঘ Hoffman, Daniel (১৯৯৮)। Poe Poe Poe Poe Poe Poe Poe (Louisiana paperback ed সংস্করণ)। Baton Rouge: Louisiana State University Press। আইএসবিএন 0-8071-2321-8। ওসিএলসি 39122758।
- ↑ "Edgar Allan Poe Society of Baltimore - Lectures - Myths and Reality - Poe's Literary Labors and Rewards (J. W. Ostrom, 1987)"। www.eapoe.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১।
- ↑ ক খ গ ঘ Silverman, Kenneth (১৯৯১)। Edgar A. Poe : mournful and never-ending remembrance (1st ed সংস্করণ)। New York, NY: HarperCollins Publishers। আইএসবিএন 0-06-016715-7। ওসিএলসি 23650335।
- ↑ "BCHS | About | Poe Cottage"। web.archive.org। ২০০৭-১০-১১। Archived from the original on ২০০৭-১০-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Schroth, Raymond A. Fordham: A History and Memoir. New York: Fordham University Press, 2008: 22–25.
- ↑ ক খ গ Hayes, Kevin J. (২০০২)। The Cambridge companion to Edgar Allan Poe। Library Genesis। Cambridge ; New York : Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-79326-1।
- ↑ "Edgar Allan Poe Society of Baltimore - Lectures - Myths and Reality - Friends and Enemies: Women in the Life of Edgar Allan Poe (R. P. Benton, 1987)"। www.eapoe.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Bramsbäck, Birgit (১৯৭০-০১-০১)। "The final illness and death of Edgar Allan Poe: An attempt at reassessment"। Studia Neophilologica। 42 (1): 40–59। আইএসএসএন 0039-3274। ডিওআই:10.1080/00393277008587456।
- ↑ "The Murder of Edgar Allan Poe - Crime Library on truTV.com"। web.archive.org। ২০০৮-০৬-০৫। Archived from the original on ২০০৮-০৬-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Press, The Associated (১৯৯৬-০৯-১৫)। "Poe's Death Is Rewritten as Case of Rabies, Not Telltale Alcohol"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Walsh, John Evangelist (2000) [1968]. Poe the Detective: The Curious Circumstances behind 'The Mystery of Marie Roget'. New York: St. Martins Minotaur. ISBN 978-0-8135-0567-1. (1968 edition printed by Rutgers University Press)
- ↑ Luling, Todd Van (২০১৭-০১-১৯)। "A Vengeful Arch-Nemesis Taught You Fake News About Edgar Allan Poe"। HuffPost (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Luling, Todd Van (২০১৭-০১-১৯)। "A Vengeful Arch-Nemesis Taught You Fake News About Edgar Allan Poe"। HuffPost (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১।
- ↑ "Edgar Allan Poe"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৩-২২।
- ↑ Kennedy, J. Gerald (১৯৮৭)। Poe, death, and the life of writing। New Haven: Yale University Press। আইএসবিএন 0-300-03773-2। ওসিএলসি 13946743।
- ↑ Galens, David (২০০২)। Literary movements for students. presenting analysis, context, and criticism on literary movements Volume 1 Volume 1 (English ভাষায়)। Detroit: Gale : Thomson/Gale। আইএসবিএন 978-0-7876-6518-0। ওসিএলসি 865552323।
- ↑ ক খ গ ঘ The Cambridge companion to Edgar Allan Poe। Kevin J. Hayes (1st ed সংস্করণ)। Cambridge। ২০০২। আইএসবিএন 0-521-79326-2। ওসিএলসি 48100587।
- ↑ "The Raven in the Frog Pond"। www.bc.edu। ২০২১-০২-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Hayes, Kevin J. (২০০২)। The Cambridge companion to Edgar Allan Poe। Library Genesis। Cambridge ; New York : Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-79326-1।
- ↑ Tavlin (২০১৭)। "Finding Poe's "Rotten Point": Usher's Architectural Phrenology"। The Edgar Allan Poe Review। 18 (2): 125। আইএসএসএন 2150-0428। ডিওআই:10.5325/edgallpoerev.18.2.0125।
- ↑ "Edgar Allan Poe Society of Baltimore - Works - Criticism - Tale-Writing -- Nathaniel Hawthorne [Text-02]"। www.eapoe.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ ক খ Poe and his times : the artist and his milieu। Benjamin Franklin Fisher। Baltimore: Edgar Allan Poe Society। ১৯৯০। আইএসবিএন 0-9616449-2-3। ওসিএলসি 24548937।
- ↑ ক খ Regan, Robert (১৯৬৭)। Collection of critical essays। Internet Archive। [Place of publication not identified] : Financial Times Pren Hall। আইএসবিএন 978-0-13-684963-6।
- ↑ Jannaccone, Pasquale (১৯৭৪)। "The Aesthetics of Edgar Poe"। Poe Studies - Old Series (ইংরেজি ভাষায়)। 7 (1): 1–13। আইএসএসএন 1754-6095। ডিওআই:10.1111/j.1754-6095.1974.tb00224.x।
- ↑ Krutch, Joseph Wood (১৯২৬)। Edgar Allan Poe : a study in genius। [New York?]: Alfred A. Knopf। আইএসবিএন 0-7812-6835-4। ওসিএলসি 232657592।
- ↑ Zimmerman, Brett (২০০৫)। Edgar Allan Poe : rhetoric and style। Montreal। আইএসবিএন 978-0-7735-7291-1। ওসিএলসি 191819022।
- ↑ ক খ Lewis, Paul। "Quoth the detective"। Boston.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ ক খ গ The Poe encyclopedia। Frederick S. Frank, Tony Magistrale, Edgar Allan Poe। Westport, Conn.: Greenwood Press। ১৯৯৭। আইএসবিএন 0-313-00351-3। ওসিএলসি 52383726।
- ↑ "The 100 best novels: No 10 – The Narrative of Arthur Gordon Pym of Nantucket by Edgar Allan Poe (1838)"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-১১-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ "H.P. Lovecraft's Favorite Authors"। www.hplovecraft.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৩।
- ↑ Staff, Guardian (২০০৮-০৭-২২)। "Edgar Allan Poe"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১।
- ↑ A companion to Poe studies। Eric W. Carlson। Westport, Conn.: Greenwood Press। ১৯৯৬। আইএসবিএন 0-313-26506-2। ওসিএলসি 33243936।
- ↑ "Emerson's Estimate of Poe."। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮৯৪-০৫-২০। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Services, News Wire। "Edgar Allan Poe's first book from 1827 sells for $662,500; record price for American literature"। nydailynews.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Cappi, Alberto (১৯৯৪-০৬-০১)। "Edgar Allan Poe's Physical Cosmology"। Quarterly Journal of the Royal Astronomical Society। 35: 177–192। আইএসএসএন 0035-8738।
- ↑ "Poe's little-known science book reprinted"। LJWorld.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Harrison, Edward Robert (১৯৮৭)। Darkness at night : a riddle of the universe। Cambridge, Mass.: Harvard University Press। আইএসবিএন 0-674-19270-2। ওসিএলসি 15014985।
- ↑ Smoot, George; Davidson, Keay (১৯৯৪)। Wrinkles in time (English ভাষায়)। New York: Avon Books। আইএসবিএন 978-0-380-72044-6। ওসিএলসি 31176913।
- ↑ ক খ Rosenheim, Shawn (১৯৯৭)। The cryptographic imagination : secret writing from Edgar Poe to the Internet। Baltimore, Maryland: The Johns Hopkins University Press। আইএসবিএন 0-8018-5331-1। ওসিএলসি 34894448।
- ↑ On Poe। Louis J. Budd, Edwin Harrison Cady। Durham: Duke University Press। ১৯৯৩। আইএসবিএন 0-8223-1311-1। ওসিএলসি 26397797।
- ↑ "Though some wondered whether Poe wrote the source text, I find that it previously appeared in the Baltimore Sun of July 4, 1840; and that it was in turn based on a widely reprinted poem (“Nuptial Repartee”) that first appeared in the June 21, 1813, Morning Herald of London. A manuscript in the hand of Hester Thrale (i.e., Hester Lynch Piozzi) in Harvard’s library hints that she may be the true author." From Edgar Allan Poe: The Fever Called Living by Paul Collins. Boston: New Harvest/Houghton Mifflin Harcourt, 2014: p. 111.
- ↑ "Poe's puzzle decoded, but meaning is mystery | Archive | tulsaworld.com"। web.archive.org। ২০২০-০৮-১৭। Archived from the original on ২০২০-০৮-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Regan, Robert (১৯৬৭)। Collection of critical essays.। [Place of publication not identified]: Financial Times Pren Hall। আইএসবিএন 9780136849636। ওসিএলসি 1148600927।
- ↑ "The Poe Shadow - Arts & Leisure - International Herald Tribune"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৬-০৬-০৬। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "History"। The Raven Society (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-১১-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "BCHS | About | Poe Cottage"। web.archive.org। ২০০৭-১০-১১। Archived from the original on ২০০৭-১০-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "The Raven Returns - Edgar Allan Poe Bicentennial Celebration"। web.archive.org। ২০১৩-০৭-৩০। Archived from the original on ২০১৪-০৯-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "Edgar Allan Poe Birth Place - Massachusetts Historical Markers on Waymarking.com"। www.waymarking.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "The fall of the house of Edgar"। Boston.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ ক খ "The house of Poe -- mystery solved! - The Boston Globe"। web.archive.org। ২০১৩-১০-০৮। Archived from the original on ২০১৩-১০-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "An Interactive Map of Literary Boston: 1794–1862" Forgotten Chapters of Boston's Literary History. The Trustees of Boston College. July 30, 2012. Retrieved May 22, 2012.
- ↑ "Edgar Allan Poe Square"। The City Record and Boston News-Letter। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "Edgar Allan Poe Square - Boston, MA - Dead Poets' Society Memorials on Waymarking.com"। www.waymarking.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ ক খ john-waller (২০১৬-০১-১১)। "The latest Boston, local and national news"। Boston.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Correspondent, M. G. Lee Globe; October 5; 2014; Comments, 7:16 p m Email to a Friend Share on Facebook Share on TwitterPrint this Article View। "Edgar Allan Poe immortalized in the city he loathed - The Boston Globe"। BostonGlobe.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Lake, Matthew (২০০৬)। Weird Maryland : your travel guide to Maryland's local legends and best kept secrets। Mark Sceurman, Mark Moran। New York: Sterling Pub. Co। আইএসবিএন 1-4027-3906-0। ওসিএলসি 71126483।
- ↑ "Edgar Allan Poe Society of Baltimore - Bookshelf - The Portraits and Daguerreotypes of Edgar Allan Poe (1989) - The Annie Daguerreotype"। www.eapoe.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "Edgar Allan Poe fan takes credit for graveyard legend - USATODAY.com"। usatoday30.usatoday.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ "FOXNews.com - Man Reveals Legend of Mystery Visitor to Edgar Allan Poe's Grave - Local News | News Articles | National News | US News"। web.archive.org। ২০০৭-১২-২২। Archived from the original on ২০০৭-১২-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৪।
- ↑ Kay, Liz F.। "Poe Toaster tribute is 'nevermore'"। baltimoresun.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১।
- খুব অল্প উইকিসংযোগসহ সমস্ত নিবন্ধসমূহ
- উইকিপ্রকল্প উইকিফাই অনুযায়ী আচ্ছাদিত নিবন্ধসমূহ
- উইকিপ্রকল্প উইকিফাই অনুযায়ী আচ্ছাদিত সমস্ত নিবন্ধসমূহ
- ১৮০৯-এ জন্ম
- ১৮৪৯-এ মৃত্যু
- ১৯শ শতাব্দীর মার্কিন ঔপন্যাসিক
- ১৯শ শতাব্দীর মার্কিন কবি
- ১৯শ শতাব্দীর মার্কিন ছোটগল্পকার
- মার্কিন পুরুষ ঔপন্যাসিক
- মার্কিন পুরুষ কবি
- মার্কিন পুরুষ ছোটগল্পকার
- ইংরেজ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
- আইরিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
- ১৯শ শতাব্দীর ছদ্মনামধারী লেখক
- মার্কিন পুরুষ প্রাবন্ধিক
- মার্কিন বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক
- মহাকবি
- পরাবাস্তববাদী লেখক
- ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- মার্কিন পুরুষ নাট্যকার